ধর্ম

পবিত্র মেরাজ ও আমাদের উপহার

  প্রতিনিধি ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৮:৪২:২০ প্রিন্ট সংস্করণ

মুফতি খালিদ সাইফুল্লাহ:

মিরাজ আরবি শব্দ। ঊরুজ থেকে মি’রাজ শব্দের উৎপত্তি ঊর্ধ্বারোহন। মূলত নবী কারীম (সাঃ) নবুওয়াত প্রাপ্তির দশম বর্ষে হিযরতের এক বছর পূর্বে রজব মাসের সাতাশ তারিখের রাত্রিতে মক্কা শরিফ থেকে বাইতুল মুকাদ্দাস হয়ে সাত আসমান পেরিয়ে আরশ-কুরসী তথা আল্লাহর খাস সান্নিধ্যে গিয়ে তাঁর দিদার লাভ করেন। তিনি একই রাতের প্রত্যুষে আবার মক্কায় ফিরে আসেন। এ ঐতিহাসিক ও আলোড়ন সৃষ্টিকারি ঘটনাকেই মিরাজ বলে। মিরাজের এই ঐতিহাসিক ঘটনা বিশ্ব নবী (সাঃ) এর এক অলৌকিক মু’জিযাও বটে।

সে রাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নবী কারীম (সাঃ) কে প্রথমে মসজিদুল হারাম থেকে বোরাকে আরোহন করিয়ে বাইতুল মুকাদ্দাস নিয়ে যান। সেখান থেকে বিশেষ বাহনে সাত আসমান পাড়ি দিয়ে উর্ধ্ব জগতে তথা সিদরাতুল মুনতাহায় নিয়ে যান এবং সেখান থেকে ‘রফরফ’ নামক বিশেষ আকৃতির এবং গতিসম্পন্ন বাহন মারফত তাঁকে আল্লাহর চাক্ষুশ সান্নিধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নবী কারিম (সাঃ) আল্লাহর পবিত্র দর্শন লাভ করেন। এবং মহান আল্লাহর সাথে বিভিন্ন বিষয়ে কথাপকথোন হয়। সেখানে আরশ-কুরসী, বেহেশত, দোযখ প্রভৃতি সম্মানিত মেহমানকে দেখানো হয়। এছাড়া সে রাতে তিনি মহাশূন্যের অনেক গভীর রহস্য সম্বন্ধে জ্ঞাত হন।

নবী কারীম (সাঃ) মিরাজের পরিভ্রমন শেষে যখন সাহাবায়ে কিরামের কাছে এ ঘটনা বর্ণনা করেন, তখন হযরত আবু বকর (রাযি.) ও অন্যান্য সাহাবায়ে কিরাম এক বাক্যে তা বিশ্বাস করেছিলেন। কিন্তু বিধর্মী ও নাস্তিকদের নিকট এটি একটি উদ্ভট, কাল্পনিক ও বানোয়াট বলে বিবেচিত হয়েছিল।

বস্তুত এ অত্যাশচর্য ঘটনা বস্তুবাদি সভ্যতায় বিশ্বাসীদের মনে ও প্রশ্ন জাগিয়েছে, নবী কারীম (সাঃ) এর মিরাজ স্বপ্নে আধ্যাতিক নাকি স্বশরীরে হয়েছিল? মি’রাজ সম্পর্কে আমাদের মধ্যে দুটি মত লক্ষ্য করা যায়। একটি মতের অনুসারীরা বলেন, মি’রাজ হয়েছিল আতিœক অর্থাৎ স্বপ্নযোগে। অন্য মতের অনুসারীরা বলেন মি’রাজ হয়েছিল স্বশরীরে।

আমরা যদি এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে ঘোষিত আল্লাহর শাশ্বত বাণীকে বিচার-বিশ্লেষণ করি, তবে তা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে যাবে সকলের কাছে। মহান আল্লাহ তার পবিত্র কুরআনে সকল দ্বন্ধের অবসান ঘটিয়ে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন-

পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি স্বীয় বান্দা মুহাম্মদ (সাঃ) কে রাত্রি বেলা মসজিদুল হারাম (কাবা শরিফ) থেকে মসজিদুল আকসা (বাইতুল মুকাদ্দাস) পর্যন্ত নিয়ে গেলেন, যার চতুরপার্শ্বে বরকত দান করেছি। উদ্দেশ্য তাকে আমার কুদরতের কিছু বিস্ময়কর নিদর্শন দেখাবো। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল। (সূরা বনী ইসরাঈল-১)
পবিত্র কুরআনে আরও বলা হয়েছে-
তিনি (মুহাম্মদ সাঃ) সর্বোচ্চ স্থানে পৌছিলেন। তারপর আল্লাহর নিকটবর্তী হলেন এমন কি ধনুকের ব্যবধান অথবা তার চেয়েও কাছে। অতপর আল্লাহ তাঁর বান্দার প্রতি যা প্রকাশ করার তা প্রকাশ করলেন। (সূরা নাজম, আয়াত ৬-১০)

উল্লেখিত আয়াতে প্রতীয়মান হয় যে, নবী কারীম (সাঃ) মিরাজের রাতে পরম করুণাময় আল্লাহর ইচ্ছায় স্বশরীরে সপ্ত আসমান পরিভ্রমন করে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছেছিলেন। সেখানে আল্লাহর তরফ থেকে বিস্ময়কর নিদর্শন দেখানো হয়েছিলো। এবং কিছু জরুরী নির্দেশ প্রদান করা হয়েছিল। কাজেই এরপর কারো মনে স্বশরীরে মিরাজ সম্পর্কে দ্বিধাদ্বন্ধের অবকাশ থাকার কথা নয়। খাঁটি মু’মিনের জন্য উল্লেখিত আয়াতদ্বয়ই যথেষ্ট।

আসলে মি’রাজ নবী কারীম (সাঃ) এর স্বপ্ন ঘটিত কোন ঘটনা নয় বা আধ্যাতিœক কোন ব্যাপারও নয়। যদি স্বপ্ন ঘটিত হতো তাহলে তিনি অকপটে তা সাহাবাগনের কাছে বলতেন যে, গতরাতে আমি এ ধরনের একটি স্বপ্ন দেখেছি। তাহলে বিতর্কের কোন প্রশ্নই উঠতো না এবং এ ঘটনায় অযথা বোরাক বা রফরফকেও টেনে আনতেন না। আর মিথ্যা বা বানোয়াট তো চিন্তাই করা যায় না। কেননা এটি সর্বজন বিদিত যে, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন আল-আমীন বা বিশ্বস্ত। তাছাড়া যদি এটি স্বপ্নই হতো তাহলে কাফিরদের এটি অস্বীকার করার কোন কারন থাকতো না। কেননা স্বপ্নতো স্বপ্নই। স্বপ্নে অনেক কিছুই দেখা সম্ভব। আজকের মানুষ এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েছে যে, চৌদ্দশত বছর পূর্বে নবী কারীম (সাঃ) এর জীবনে যে মিরাজ সংগঠিত হয়েছে তা বাস্তব সম্মত। কেননা আধুনিক বিজ্ঞান প্রমান করেছে যে জড় জগতে কোন বস্তুকে আলোর গতিতে ভ্রমন করানো সম্ভব। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই স্মরন রাখা প্রয়োজন যে, স্থান ও কালের সীমাবদ্ধতা শুধু সৃষ্ট বস্তুর জন্য প্রযোজ্য। মহান স্রষ্টা যিনি সকল শক্তির আধার তার জন্য তা কখনো বাধা হতে পারে না।

বস্তুত মহাশক্তিধর আল্লাহ তা’য়ালা যাকে ইচ্ছে যখন ইচ্ছে মুহূর্তের মধ্যে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যেতে পারেন। কাজেই আল্লাহর এই সীমাহীন ক্ষমতার প্রতি দৃঢ় আস্থাশীল লোকের নিকট নবী কারীম (সাঃ) এর স্বশরীরে উর্ধ্বলোক ভ্রমনে কোন সংশয় থাকতে পারে না।

এখানে লক্ষ্যনীয় যে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার প্রিয় হাবীবকে উর্ধ্বলোকে নিয়ে গিয়েই শুধু ক্ষান্ত হননি বরং স্বয়ং এবং তার ফেরেশতা ও পয়গাম্বরগনের দ্বারা সংবর্ধনা দিয়েছেন। এ বিষয়ে যদি আমরা একটু সূ²ভাবে চিন্তা ভাবনা করি, তবে তা আমাদের কাছে দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যাবে যে এটাই স্বাভাবিক। আমাদের বাস্তব জীবনেও কিন্তু এ ধরনের কিছু দৃষ্টান্ত পরিলক্ষিত হয়। সাধারনত আমরা যদি কোন মেহমানকে দাওয়াত দিয়ে বাসায় নিয়ে আসি তখন আমরা তার জন্য সাধ্যমত আদর-আপ্যায়ন ও সম্মান করে থাকি। আর আমন্ত্রিত মেহমান ও হাদিয়া স্বরুপ কিছু না কিছু সঙ্গে নিয়ে আসেন। নবী কারীম সাঃ যখন মিরাজের রাতে আল্লাহর সাক্ষাত দর্শনে গিয়েছিলেন তখন কিন্তু এই নিয়মের ব্যাতিক্রম হয়নি।

পিয়ারা নবী (সাঃ) যখন মিরাজের রাতে আল্লাহর দরবারে গিয়েছিলেন তখন তার উপঢৌকন পেশ করে বলেছিলেন-
আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াসসালা ওয়াতু ওয়াত তায়্যিবাতুঅর্থাৎ আমার মৌখিক, দৌহিক ও আত্মিক ইবাদাত সমূহ আপনার জন্য নিয়ে এসেছি। বিনিময়ে আল্লাহ তা’য়ালা তার প্রিয় হাবীবকে হাদিয়া স্বরুপ যা দান করলেন তা হলো-

আসসালামু আলাইকা আয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
অর্থাৎ “হে নবী! আপনার উপর আমার শান্তি ও বরকত বর্ষিত হোক”।
নবি কারীম সাঃ সেই সালাম শান্তিতে অন্য সকলকে শামিল করার জন্য বললেন-
আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লা হিস সালিহীন

অর্থাৎ”আমাদের উপরও শান্তি বর্ষিত হোক আর তাদের উপরও শান্তি নাযিল হোক যারা নেক আমল করবে। তখন এর স্বাক্ষী স্বরুপ ফেরেশতাগনের মুখ দিয়ে উচ্চারিত হলো –
আশহাদু আল্লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলূহু
অর্থাৎ “সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।

উল্লেখ্য যে, মিরাজের রাতে আল্লাহ তা’য়ালা তার প্রিয় নবীর উম্মতের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামায তুহফা স্বরুপ দান করেছিলেন। নামাযের মধ্যে শেষ বৈঠকে যে আত্তাহিয়্যাতু এবং তাশাহহুদ পাঠ করা হয় সেটি সেই মিরাজের রাতে আল্লাহ ও নবী কারীম সাঃ এর মধ্যকার কথোপকথনের স্মৃতি বিশেষ।

এতোক্ষনের আলোচনায় আমরা একটি চিরন্তন সত্যের সন্ধান পেলাম। আর তা হলো, নবী কারীম সাঃ এর যে মিরাজ হয়েছিল তা স্বশরীরে হয়েছিল এবং ঐ দিন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর তরফ থেকে তার প্রিয় হাবীবের উম্মতের জন্য তুহফা স্বরুপ যা দেয়া হয়েছিল তা হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। আসলে নবী কারীম (সাঃ) এর মিরাজ নিছক একটি উর্ধ্বোলোক আরোহ-ই নয়। বরং এ মিরাজের তাৎপর্য অপরিসীম। অন্তত মৃত্যু পরবর্তী জীবন, বেহেশত, দোযখ, বারযাখ প্রভৃতি যে সব বিষয় সম্পর্কে আল্লাহ তা’য়ালা তার প্রিয় হাবীবের মাধ্যমে আমাদেরকে অবহিত করেছেন, সেই বিষয়গুলোর স্বরুপ কী? এবং সে সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জনের লক্ষ্যে আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় হাবীবকে মিরাজে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাছাড়া আল্লাহর আরো একটি উদ্দেশ্য ছিল, তা হলো তার প্রিয় হাবীবকে স্মরন করিয়ে দেয়া যে, আল্লাহ কতো মহান, কত বড়, কত ক্ষমতাবান এবং তার সৃষ্টি জগৎ কত ব্যাপক। এখন প্রশ্ন হচ্ছে নবী কারীম (সাঃ) আমাদের ইহকালীন ও পরকালীন কল্যানের জন্য যে তুহফা স্বরুপ নামাজ মিরাজের রাতে নিয়ে এসেছেন আমরা কি তা যথাযথভাবে আদায় করি?

যে নামাজের বিনিময়ে জীবনে সুখ-শান্তি নেমে আসার কথা, যে নামাজের বদৌলতে সংসার জীবনে অভাব-অনটন দূর হওয়ার কথা, যে নামাজের মাধ্যমে যে কোন সমস্যার সমাধান হওয়ার কথা আমরা কি সেই নামাজ সঠিক ভাবে কায়েম করতে পেরেছি? যদি তাই পারতাম তবে কেন আজ ঘরে ঘরে অশান্তির আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে? কেন একজন নামাজী ঘুষ খেতে পারে? অথচ আল্লাহ তা’য়ালা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন-
”নিশ্চয়ই নামাজ সকল গর্হিত ও কদর্য কাজ থেকে বিরত রাখে”। (সূরা আনকাবুত- ৪৫)
সূরা বাকারার ১৫৩ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে-
”হে ঈমানদারগন তোমরা ধৈর্য ও নামাজের দ্বারা সাহায্য চাও”।

আমরা তো নামাজের মাধ্যমে অনেক কিছুই আল্লাহর কাছে চাচ্ছি, কিন্তু আমরা কি নামাজের হক আদায় করতে পারছি? আসলে আমরা আজ নামাজ তথা ইবাদাতের অর্থ-উদ্দেশ্যের কথা বেমালুম ভুলে গেছি। ইবাদত ও প্রদর্শনমূলক কিছু অনুষ্ঠানকেই যথেষ্ট মনে করি। আমরা এক ওয়াক্ত নামাজ পড়লে আরেক ওয়াক্ত নষ্ট করি। যা পড়ি তাও তাড়াহুড়ো করে দায়সারাভাবে পরি। নামাজ পড়েও অন্যায় ও পাপ কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ি। এরুপ নামাজে কিন্তু আমরা ইহকালীন শান্তি এবং পরকালীন মুক্তি ও সাফল্যের আশা করতে পারি না। তেমনিভাবে কেউবা কর্মসূচীর মাধ্যমে আবার কেউবা দিবস ভিত্তিক ইবাদত করাকে যথেষ্ট মনে করি। আর এটাকেই আল্লাহর নৈকট্য লাভের উত্তম পন্থা বলে মনে করি। এ ধরনের ইবাদতকারীর মধ্যে প্রায় দেখা যায়, অনুষ্ঠানের সাথে তাদের সম্পর্ক, অনুষ্ঠান শেষ তাদের ইবাদত শেষ। এটা মুসলমানদের জন্য লোভনীয় নয়, মুসলমানদের সামগ্রিক জীবনটাই তো হবে ইবাদতের পরাকাষ্ঠা। বস্তুত সর্বপ্রকার ইবাদতের মধ্যে নামাজ সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত। আসলে আল্লাহর সার্বক্ষনিক স্মরনের মাধ্যমে তার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রেখে তার প্রতিটি আদেশ-নিষেধ মেনে চলার একটা যোগ্যতা পয়দা করার লক্ষ্যেই আল্লাহ তা’য়ালা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরয করেছেন। আর যেহেতু আল্লাহ তা’য়ালা তার পিয়ারা হাবীবকে তার খাস চেম্বারে ডেকে নিয়ে গিয়ে আমাদের প্রতি নামাজের নির্দেশ দিয়েছেন সেই কারনে অতিগুরুত্ব ও যত্নসহ এই নামাজের হক আদায় করা আবশ্যক। আমাদের আজ গভীর ভাবে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে, নবী কারীম (সাঃ) কে মিরাজের রাতে পরম দয়াময় আল্লাহ তা’য়ালা তুহফা স্বরুপ যে নামাজ আমাদেরকে দান করেছেন,সেটির আসল উদ্দেশ্য ও লক্ষে হৃদয়ঙ্গম করে তা ব্যাক্তি ও সমাজ জীবনে প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

খতীবঃ মেরাদিয়া কবরস্থান মাদরাসা মসজিদ, খিলগাঁও ঢাকা।

Powered by