বাংলাদেশ

গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার রক্ষা করছে না ভারত: মির্জা ফখরুল

  প্রতিনিধি ২০ আগস্ট ২০২৪ , ৩:৩৬:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ

গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার রক্ষা করছে না ভারত: মির্জা ফখরুল
ছবি: সংগৃহীত

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত গণতন্ত্রের প্রতি যে অঙ্গীকার, তা রক্ষা করছে না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এই ব্যক্তিকে (শেখ হাসিনা) এভাবে আশ্রয় দিয়ে ভারত তার যে কমিটমেন্ট টু ডেমোক্রেসি— এটা তারা রক্ষা করেছে বলে আমার মনে হয় না। ভারতের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে— আপনারা তাকে আইনানুগভাবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে তু্লে দেন এবং দেশের মানুষ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই সিদ্ধান্ত হচ্ছে তার বিচার করার, সেই বিচারের সম্মুখীন তাকে হতে দেন।’

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এসব মন্তব্য করেন।

দলের স্থায়ী কমিটির নতুন মনোনীত দুই সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনকে নিয়ে বেলা সাড়ে ১২টায় বিএনপি মহাসচিব সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে আসেন। তার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিশেষ মোনাজাত করেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট অত্যাচারী-নিপীড়নকারী-হত্যাকারী শেখ হাসিনা দেশে থেকে তার জনগণকে ছেড়ে পালিয়েছেন। দুর্ভাগ্য আমাদের যে, আজকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত তাকে আশ্রয় দিয়েছে। সেখান থেকে তিনি আবার বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার যে বিপ্লব, সেটাকে নস্যাৎ করবার বিভিন্ন চক্রান্ত শুরু করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘এদেশের মানুষ শেখ হাসিনার যে অপরাধ সেই অপরাধকে খাটো করে দেখে না। তারা মনে করে যে, গত ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার এই ফ্যাসিবাদী শাসন বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে দুর্বল করে দিয়েছে, জাতিকে আহত করেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমাদের বক্তব্য আগেও বলেছি, এখনও বলছি যে, গণঅভ্যুত্থানের পর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে এই অন্তর্বতীকালীন সরকার এসেছে। তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে, এই অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করে জনগণের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া।’

‘তবে আমি যেটা মনে করি, যে জঞ্জাল আওয়ামী লীগ সরকার সৃষ্টি করে গেছে, সেটাকে দূর করতে অবশ্যই কিছু সময় দরকার…একটি সঠিক সুন্দর নির্বাচন করার জন্য হলেও একটা সময়ের দরকার, যে সময়ে নির্বাচনকালীন নতুন সরকার, তারা সেই লক্ষ্যে কাজ করতে পারবে, সংস্কারগুলো করতে পারবে। সেই সময় অবশ্যই এদেশের মানুষ তাদেরকে দেবে।’

অন্তবর্তীকালীন সরকার গত ১১ দিনে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তারও প্রশংসা করেন বিএনপি মহাসচিব।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি ৩২ বছর ধরে বিএনপির সদস্য। আমাদের নীতিনির্ধারণী ফোরামে স্থান দেবার জন্যে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আগামী দিনগুলোতে বিএনপি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করে বাংলাদেশকে ধীরে ধীরে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাবে— এটাই আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করি।’

অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘১৯৭৯ সালে আমি ছাত্রদলের মেম্বার ছিলাম, সেখান থেকে আজ অবধি আমি বিএনপিতে কাজ করছি একজন কর্মী হিসেবে। আমি মনে করি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন— বিএনপি যেটা শুরু করেছিল, ২০০৯ সালের ডিসেম্বর থেকে, অর্থাৎ এদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে যেয়ে যেসব গুম হয়েছে, যারা হারিয়ে গেছে, তাদেরকে আমরা খুঁজে বের করবো। যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।’

‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার পালিয়ে গেছে। দেশ আজকে একটি নবতর স্বাধীনতা পেয়েছে। একবার আমরা ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পেয়েছি। আর এবার সত্যিকার অর্থে ৫ আগস্ট নতুন প্রজন্ম দেখতে পেলো, স্বাদ পেলো স্বাধীনতা কাকে বলে, কথা বলার স্বাধীনতা, বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা কাকে বলে। মানবাধিকার ছিল না। এক ব্যক্তির শাসন ছিল, সেখান থেকে আজ আমরা মুক্ত হয়েছি। গণতন্ত্রের যাত্রা পথের মুক্তিকে আমাদেরকে সম্মুন্নত রাখতে হবে।’

গত ১৬ আগস্ট দলের ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম এবং অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনকে পদোন্নতি দিয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণীয় ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানান দলের নেতা রুহুল কবির রিজভী।

আরও খবর

Sponsered content