রংপুর

ফুলবাড়ীতে সৌদির বিখ্যাত আজওয়া,মরিয়ম জাতের খেজুর চাষে সফল জাকির হোসেন

  প্রতিনিধি ২৪ জুলাই ২০২৩ , ৮:১৪:১১ প্রিন্ট সংস্করণ

মোঃ হারুন-উর-রশীদ,ফুলবাড়ী(দিনাজপুর):


আদিকাল থেকেই আজওয়া,মরিয়ম,বার্গি,আমবার,মেরজন,খরিজি জাতের খেজুরের চাষ হয়ে আসছে সৌদি আরব,ইরাক,মিশরসহ উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে সেই মরু অঞ্চলের খেজুর চাষ অনেকটা কঠিন হলেও সেটাকে সাফল্যতার সাথে। বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার পৌর এলাকার স্বজন পুকুর গ্রামের কুয়েত প্রবাসী মোঃ জাকির হোসেন।

জাকির হোসেন দীর্ঘ ২০ বছর কুয়েতে ছিলেন। সেখানে থাকা আবস্থায় তার মাথায় একটি চিন্তা আসে দেশের মাটিতে কীভাবে খেজুর চাষ করা যায়। এক পর্যায়ে দেশে আসার সময় ১২ কেজি খেজুর কিনে এনে দেশে চারা করার চেষ্টা করেন। তাতে তিনি সফলও হন। এরপর তিনি তার ২০ শতাংশ জমিতে ১৯টি খেজুর গাছের চারা রোপণ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ২০২০ সালে দেশে চলে আসেন এবং তার সৃষ্ট খেজুর বাগানে সময় দিতে শুরু করেন। তার রোপণ করা বাগানে রয়েছে মরিয়ম, আজওয়া, খলিজি, মেরজন ও আম্বার জাতের খেজুর গাছ। তার খেজুর বাগানের প্রতিটি গাছের বয়স ৪ থেকে ৬ বছর। ২০২২ সালে তার বাগানের ৩টি গাছে প্রথম খেজুর আসে। এ বছর তার বাগানের সব গাছে ফল এসেছে। আর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই ফল পাকবে বলে তিনি জানা।

খেজুর চাষি কুয়েত প্রবাসী মোঃ জাকির হোসেন বলেন,বিদেশে থাকা অবস্থায় আমার মাথায় আসে দেশের মাটিতে যদি এসব খেজুর চাষ করা যেত। এ ধরনের চিন্তা থেকেই দেশে আসার এক পর্যায়ে খেজুর এনে চারা তৈরি করি। ইউটিউব দেখে সে চারা লাগাই এবং পরিচর্যা করতে থাকি। ২০ শতাংশ জমিতে ১৯টি খেজুর গাছ আছে। খেজুর গাছ সাধারণত একটু উঁচু জমিতে লাগালে ভালো হয়। গাছের গোড়ায় সবসময় জৈব সার ব্যবহার করতে হয়। গত বছর তার বাগানে ৩টি গাছে ফল এসেছিল। ওই ফল দিয়ে ফের চারা করেছেন। বর্তমানে তার এক হাজার খেজুর চারা তৈরি হয়েছে। এ বছর তার বাগানের ৯টি গাছে ফল এসেছে। আগামীতে আশা করছি সব গাছেই ফল আসবে। এ বছর ৯টি গাছ থেকে প্রায় ২৮০ কেজি ফল পাওয়া যাবে। এরই মধ্যে অনেকেই ফল কেনার জন্য যোগাযোগ করেছেন। প্রতিকেজি খেজুরের দাম ৪০০ টাকা করে বলছেন। একই সঙ্গে অনেকেই চারার জন্য যোগাযোগ করছেন। আশা করছি আগামী বছর প্রতিটি গাছে খেজুর আসবে। এতে করে ভালো লাভবান হবো। তিনি আরও বলেন, এ বছর আমি ২ একর জমি প্রস্তুুত করেছি। সে জমিতে আরও ৩০০ খেজুর চারা রোপণ করে বাগানের পরিধি বৃদ্ধি করব।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ রুম্মান আক্তার বলেন,এই প্রথম একজন কৃষক সৌদির খেজুর চাষ করছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। তিনি যদি বানিজ্যিক ভাবে খেজুর চাষ করেন তাহলে উপজেলা কৃষি বিভাগ তাকে সবধরনের সহযোগীতা করবে। তার খেজুর চাষ দেখে কেউ যদি এভাবে বানিজ্যিক ভাবে সৌদি খেজুর চাষ করতে চান তাদেরকেও উৎসাহ ও সহযোগীতা দিতে আমরা প্রস্তুুত কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

বাগান ঘুরে দেখা যায়, প্রায় ২০ শতাংশ জমিতে সারিবদ্ধ ভাবে খেজুর গাছ লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ গাছে খেজুর ধরে আছে। খেজুরগুলো দেখতে কিছুটা আঙ্গুর ফলের মতো গোল ও লম্বা। এক একটি কাদিতে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০টি খেজুর ধরেছে। তবে খেজুরগুলো এখনও অপরিপক্ব।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by