প্রতিনিধি ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৪:০৩:২০ প্রিন্ট সংস্করণ
গাজীপুর সদর উপজেলায় অটো স্ট্যান্ডে গাড়ি রাখাকে কেন্দ্র করে নাইম (২৫) নামে এক যুবককে কুপিয়ে গুরুতর আহত করার প্রতিবাদে এবং সিমরান হোসেনসহ সকল আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক বন্ধ করে আন্দোলন করেছেন এলাকাবাসী। এ সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় কয়েক কিলোমিটারের যানজটের সৃষ্টি হয়।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা দিকে সদর উপজেলার ভবানীপুর বাজার এলাকায় মহা সড়ক দখল নিয়ে বিক্ষোভ করে স্থানীয়রা। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য, সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে সিমরানকে গ্রেফতার ও তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বেলা ১২ টার দিকে এক ঘন্টা পর তারা অবরোধ তুলে নেয়।
অভিযুক্ত সিমরান ভবানীপুর গ্রামের চান মিয়ার ছেলে। সে পরিবার নিয়ে ওই গ্রামে বসবাস করেন। বিক্ষোভের খবর পেয়ে সে বাড়ী থেকে পালিয়ে আত্ম গোপনে রয়েছে।
মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এলাকাবাসীর পক্ষে নেতৃত্ব দেন সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় আবুল কাশেম, সোলায়মান মিয়া, কবির হোসেন, সবুজ মিয়া এবং শাজাহানসহ প্রায় প্রায় কয়েক শতাধিক নারী পুরুষ।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ কারীরা খুনি সিমরানের পরিবারের উচ্ছেদ এবং খুনি সিমরানের ফাঁসির দাবিসহ বিভিন্ন লেখা সম্বলিত ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ব্যবহার করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তার বাড়ীতে অবৈধ অস্ত্র আছে বলেও তারা বিক্ষোভ করে স্লোগান দিতে থাকে। মানববন্ধন থেকে বিক্ষোভকারীরা হঠাৎ করে মহাসড়কে অবস্থান নিলে সড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজট লেগে যায়। এসময় ঢাকা ও ময়মনসিংহগামী চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় স্থানীয় এক অটোরিকশা চালক রিক্সা সিমরানের পিতার তেলের দোকানের সমনে রাখে। এসময় সিমরান প্রাইভেটকার থেকে নেমে ওই অটো চালককে মারধর করে। পরের দিন বিকেলে আবার সিমরান অতর্কিত ভাবে আরো কয়েকটি অটোরিকশা ভাঙ্গচুর করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অন্যান্য অটো চালকেরা সিমরানের প্রাইভেটকারে হামলা করে ভাঙচুর করে। তার এ ধরনের নির্যাতন ও অত্যাচারে স্থানীয় এলাকাবাসী ও অটো চালকেরা অতিষ্ঠ। বিক্ষোভকারীরা প্রশাসনের কাছে সিমরানকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবী জানান।
খবর পেয়ে স্থানীয় মেম্বার আবিদ হোসেন বাবুল ঘটনাস্থলে এসে তার বক্তব্য বলেন, রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভবানীপুরে যে ঘটনা ঘটেছে তা একদিনে তৈরি হয়নি। এটা দীর্ঘদিন যাবত হয়ে আসছে। ভবানীপুরে দীর্ঘদিন যাবত আইনের শাসন না থাকার কারণে গতকালের ঘটনা ঘটেছে। সিমরানের অপকর্মের সাথে অনেকে জড়িত। ভয়ে এতদিন কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খোলেনি। সিমরান মাদকের সাথে জড়িত এবং এ এলাকায় তার নেতৃত্বে মাদক সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে।সে পূর্বেও একটি মার্ডার মামলার অন্যতম আসামী দীর্ঘদিন জেল খেটেছে।
অভিযুক্ত সিমরানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে বন্ধ পাওয়ায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, সিমরানের অনৈতিক অবৈধ সকল কার্যক্রমের বিচারের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে তারা মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয়। সিমরানের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রয়েছে। ওই মামলায় সে জামিনে রয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আবিদ হোসেন বাবুলসহ পুলিশ সিমরানকে গ্রেফতার এবং বসত বাড়ীতে অবৈধ অস্ত্রের সন্ধানে তল্লাশি চালায়। পরে বেলা ১২ টার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এদিকে স্থানীয়রা আজিজুলের ছেলে সাগর (১৯) ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে দেয়।