চট্টগ্রাম

গুজবে চট্টগ্রাম জুড়ে রাসেল ভাইপার আতঙ্ক

  প্রতিনিধি ২২ জুন ২০২৪ , ৭:৪৬:১১ প্রিন্ট সংস্করণ

গুজবে চট্টগ্রাম জুড়ে রাসেল ভাইপার আতঙ্ক

সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও রাসেল ভাইপার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। একরাতে চট্টগ্রামের মিরসরাই, সীতাকুন্ড, আনোয়ারা, লোহাগাড়ায় রাসেল ভাইপার সাপ উদ্ধারের মিথ্যা খবর স্যোশালা মিডিয়ায় প্রচারিত হলে গুজবটি আরও ব্যাপকতা পায়। কিন্তু প্রাণী সম্পদ বিভাগ ও বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা খবরগুলো মিথ্যা ও গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

জানা গেছে, শুক্রবার রাতে আনোয়ারা উপজেলার একটি বসতঘরের ছাদে রাসেলস্ ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ পাওয়া গেছে বলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। সাপটি ধরে মেরে পুড়িয়ে ফেলেছেন বলে স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে। পরে সাপটির ছবি সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে ভাইরাল হয়। এমনকি বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায়ও সংবাদ প্রকাশ হতে দেখা যায়।

বিষয়টি জেনে শুক্রবার (২১ জুন) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ভাইরাল হওয়া সাপের দুটি ছবি পাঠানো হয় সাপের বিষের ওপর পিএইচডি করা চিকিৎসক, টক্সিকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক, ভেনম রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা, মেডিসিনের অধ্যাপক ডা. এমএ ফয়েজ এর কাছে।
তিনি ছবি দুটি দেখে বলেন, ‘এটি কোন রাসেলস্ ভাইপার সাপ নয়। এটি একটি সাধারণ নেকড়ে সাপ। সাধারণ সাপকে রাসেলস্ ভাইপার বলে প্রচার করা আতঙ্কের বিষয়। বরং এটি একটি সম্পূর্ণ গুজব।’

সাপের ছবি দেখে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বাঁশখালী অভয়ারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বাঁশখালী ইকোপার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, এটি ছিলো সাধারণ সাপ। রাসেলস্ ভাইপার সাপ আরো মোটা ও বড় দাগের হয়।

অপরদিকে সীতাকুন্ড, মিরসরাই, লোহাগাড়ার চুনতিতে উদ্ধার হওয়া সাপগুলোকে অজগর সাপের বাচ্চা বলে অভিহিত করেছেন বনবিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে টক্সিকোলজি সোসাইটি অফ বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক এম এ ফয়েজ বলেন, ‘রাসেলস্ ভাইপার বা কোন সাপেই নিজ থেকে তেড়ে এসে দংশন করে না। কেবল উত্ত্যক্ত করলেই নিজ রক্ষার্থে দংশন করে। তেড়ে এসে দংশন করার প্রশ্নেই আসে না। চন্দ্রবোড়া সাপ যে সব জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে কৃষিকাজে সাবধানতা অবলম্বন করুন। কর্মস্থলে সাপ আছে কিনা দেখে নিন। এরা প্রকৃতির সাথে মিশে থাকে। সম্ভব হলে পায়ে বুট পরিধান করুন। এরা দিনের বেলা খাবারের খোঁজে সচল থাকে। দুর্ভাগ্যবশত কাউকে যদি সাপ দংশন করে তাহলে অতিদ্রুত উপজেলা-জেলা ও নিকটস্থ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাবেন। চিকিৎসায় বেশির ভাগ রোগী সুস্থ হয়ে যান।

বিনামূল্যে এন্টিভেনমসহ বিভিন্ন সামগ্রী বাংলাদেশ সরকার হাসপাতালে সরবরাহ করেছেন। কোন রাসায়নিক সামগ্রী দিয়ে সর্প দংশন কিংবা সাপকে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।

আরও খবর

Sponsered content