ঢাকা

গোপালগঞ্জে বিনামূল্যে তরমুজ পেয়ে উচ্ছ্বসিত ক্ষুদে বেলুন বিক্রেতা 

  প্রতিনিধি ৫ মার্চ ২০২৫ , ৬:৫৪:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ

গোপালগঞ্জে বিনামূল্যে তরমুজ পেয়ে উচ্ছ্বসিত ক্ষুদে বেলুন বিক্রেতা 

অচেনা ছোট্ট ছেলেটির বাবা একজন রিক্সা চালক। রোজগারের অবলম্বন একমাত্র রিক্সাটি চুরি হয়ে যাওয়ার পর মানসিক দুশ্চিন্তায় সে অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন ঘরে বসে রয়েছেন। এদিকে তাদের সংসার চালাতে ছেলেটির মা মানুষের বাড়িতে বাড়িতে বুয়ার কাজ করে বর্তমানে কোন রকম সংসার চালানোর চেষ্টা করছেন।

অবুঝ ছোট্ট ছেলেটির যে বয়সে হেসে খেলে স্কুল- মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা অথচ সে বয়সে দারিদ্র্যের নির্মম কষাঘাতে সংসারে খানিকটা স্বচ্ছলতা ফেরাতে এবং মা-বাবার কষ্ট লাঘবে মাদ্রাসায় পড়ার পাশাপাশি প্রতিবেশীর দেওয়া বেলুনগুলো বিক্রি করে ৫০ টাকা ১০০ টাকা রোজগার করে মায়ের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা মাত্র। রমজান মাস হওয়ায় বেচা বিক্রি তেমন একটা হচ্ছে না। আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র দুটো বেলুন বিক্রি করে ১০০ টাকা সংগ্রহ করেছে ছেলেটি।

বাবা অসুস্থ, মা রোজা রেখেছেন। সাত পাঁচ না ভেবে ছেলেটি সেই ১০০ টাকা হাতে আজ কালেক্টর বাজারে এসেছে মৌসুমী ফল তরমুজ কিনতে। কিন্তু তরমুজের দাম শুনে এবং তার নিকট থাকা ১০০ টাকার কথা চিন্তা করে সে দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ফিরেই যাচ্ছিলো। বিষয়টি কালেক্টর বাজারের একজন স্বেচ্ছাসেবীকর্মী পর্যবেক্ষণ করে কালেক্টর বাজারের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী এম আরমান খান জয় এবং তানভীর হাসান সৈকতকে জানাতে গিয়ে দেখে তারা তখন অন্য একটা বিষয় নিয়ে মানবিক মানুষ ইমাদ পরিবহন প্রাইভেট লিমিটেড ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইনচার্জ শেখ সাব্বির আহমেদ ভাই এবং রুদ্র মাহমুদ রাসেল ভাইয়ের সাথে কথা বলছিলেন।

পরে তাদের সামনে কথাটা জানালে দ্রুত ওই সকল মানবিক মানুষগুলো সেই ছেলেটিকে ডেকে এনে সারি সারি তরমুজ থেকে একটা তরমুজ বেছে নিতে বলে। কিন্তু এতবার বলার পরেও ছেলেটি ভয় পাচ্ছিল কেননা তার কাছে তো তরমুজ কেনার পুরো টাকা নেই। তাই সেই ইতস্তত বোধ করতে ছিলো। পরক্ষণেই সাব্বির সাহেব, এম আরমান খান জয় এবং রুদ্র মাহমুদ ভাই যখন ছেলেটিকে বললো তুমি নির্ভয়ে একটা তরমুজ পছন্দ করো তোমার মায়ের জন্য।

বারবার বলার পরে ছেলেটি বড় সাইজের তরমুজ না বেচে একটি মাঝারো সাইজের তরমুজ তুলে নিয়ে তার নিকট থাকা একশত টাকা তরমুজের দাম বাবদ দিতে চাইলে তখন সেখানে উপস্থিত সকল মানবিক মানুষগুলো তার টাকা ফেরত দেয় এবং তার অসুস্থ বাবা ও রোজাদার মায়ের জন্য তরমুজটি বিনামূল্যে উপহার দেওয়ার কথা বললে ছেলেটির মুখে একরাশ হাসি ফিরে আসে। পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে প্রত্যেকেই স্ব-স্ব অবস্থান থেকে সমাজের অসহায় ওদেরকে সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করার অঙ্গীকার করি। মহান আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে তৌফিক দান করুন, আমীন।

আরও খবর

Sponsered content