প্রতিনিধি ১৭ অক্টোবর ২০২৪ , ৭:২০:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ
“চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজের শূন্যতা” শিরোনামে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রকাশিত সংবাদে “আমদানি কমায় বন্দরে কমেছে জাহাজের আনাগোনা” এবং “মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন জেটিতে পণ্য ওঠানামার জন্য মোট ৮টি জাহাজ ভেড়ানো হয়।
এ সময় বহিঃনোঙ্গরে অপেক্ষায় ছিল মাত্র একটি জাহাজ” মর্মে উল্লেখ করা হয়। জাহাজের প্রাত্যহিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী সংবাদে প্রকাশিত তথ্যের সঠিকতা পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, এ মুহূর্তে চট্টগ্রাম বন্দরের বহিঃনোঙ্গরে ৬৪ টি জাহাজে কার্যক্রম চলমান রয়েছে, তন্মধ্যে ৫০টি জেনারেল কার্গো জাহাজ, ওয়েল ট্যাংকার ০৯টি এবং ০৫টি কন্টেইনার জাহাজ। জেটিতে বার্থিংরত আছে ১০টি কন্টেইনার জাহাজ। জাহাজ ও পরিবাহিত পণ্যের প্রকার অনুযায়ী জাহাজ জেটিতে বার্থিং গ্রহণ করে এবং কার্য শেষে জাহাজ দ্রুত বন্দর ত্যাগ করে। জাহাজের “অপেক্ষমান সময়“ শূন্যতায় উন্নয়ন বন্দর কার্যক্রমের কাঙ্খিত সাফল্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক্ষেত্রে বহিঃনোঙ্গরে অপেক্ষমান জাহাজ না থাকা বন্দর কার্যক্রমের উন্নয়ন সূচক হিসেবে পরিলক্ষিত।
মূলত নতুন নতুন ইয়ার্ড সম্প্রসারণ, আধুনিক কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট সংযোজন, ডেলিভারী কার্যক্রম দ্রুত হওয়া, ইয়ার্ডে কন্টেইনারের কোনরকম জট না থাকায় এবং ঈড়সঢ়ঁঃবৎরুবফ ঞবৎসরহধষ ঙঢ়বৎধঃরহম ঝুংঃবস (ঞঙঝ) বাস্তবায়নের ফলে জাহাজ দ্রুততার সাথে পণ্য/কন্টেইনার খালাস করে অল্প সময়ে ংধরষ করতে পারছে। এ কারণে জাহাজের কোন জট নেই। জাহাজের ডধরঃরহম ঞরসব উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে এবং জাহাজ দিনে দিনে জেটিতে বার্থ পাচ্ছে। এটি চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক। সুতরাং চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা ও সক্ষমতাকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের কোন সুযোগ নেই।
অপরদিকে সংবাদের ৫নং প্যারায় “তবে বন্দরের সক্ষমতা বাড়লেও ডলার ও এলসি সংকটের কারণে আমদানি বাণিজ্য স্থবির হওয়ায় জাহাজের উপস্থিতি কমেছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের” মর্মে উল্লেখিত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, ডলার উদ্ধৃত্ত/সংকট এবং এলসি উদ্ধৃত্ত/সংকট ইত্যাদির সাথে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সরাসরি কোন সম্পর্ক নেই।
তবে পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ০৯ মাসে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয় ২২.৮৭ লক্ষ টিইইউএস এবং কার্গো হ্যান্ডলিং হয় ৯.০৫ কোটি মেঃটন। ২০২৪ সালের জানুয়ারী থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ০৯ মাসে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ২৪.৪২ লক্ষ টিইইউএস এবং কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ৯.২০ কোটি মেঃ টন। অর্থাৎ ২০২৩ সালের ০৯ মাসের তুলনায় ২০২৪ সালের ০৯ মাসে ১.৫৫ লক্ষ টিইইউএস কন্টেইনার এবং ১৫ লক্ষ মেঃ টন কার্গো বেশি হ্যান্ডলিং হয়েছে। ০৯ মাসে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এ প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৬.৭৮% এবং কার্গো হ্যান্ডলিং এর প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১.৬৬%। এ থেকে বোঝা যায় দেশের আমদানি কমেনি বরং চট্টগ্রাম বন্দরের হ্যান্ডলিং সক্ষমতা প্রকৃত অর্থেই বৃদ্ধি পেয়েছে।