রাজশাহী

জাহেরন বিবির অপেক্ষা..

  প্রতিনিধি ২ অক্টোবর ২০২১ , ৬:৪০:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ

মো. রবিউল ইসলাম (রবীন), আদমদীঘি (বগুড়া) :

 

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জাহেরন বিবি একটি বয়স্ক কার্ডের জন্য ১০ বছর ধরে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বয়স বাধা হয়েছে বলে জানা গেছে। তার জন্ম সনদ অনুযায়ী বর্তমান বয়স ৫৮ বয়স। কিন্তু জাহেরুন বিবির দাবি তার প্রকৃত বয়স ৭০। জন্ম সনদ করার সময় জন্ম তারিখ দেওয়ার বিষয়টি তাকে জানানো হয়নি। আর বয়সের ভারে তিনি কোন কিছু ভাল মনে করতে পারছেন না। তাছাড়া লেখাপড়া জানা নেই বলে বয়স দেওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেনি।

জাহেরন বিবির জন্মস্থান গাইবান্ধা। নদী ভাঙনে বাড়ি তলিয়ে গেলে তিনি স্বামীসহ ট্রেনযোগে সান্তাহার আসেন মুক্তিযুদ্ধেরও আগে। জাহেরন বিবির দুই মুক্তিযোদ্ধা সন্তানকে পাক হানাদার বাহিনী হত্যা করেছে। তাদের কোন কন্যা সন্তান নেই। সান্তাহার আসার পর তিনি একটি চালকলে চাকরি করেন ২০ বছর ধরে। এর মধ্যে স্বামী আ. জোব্বার সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। স্থানীয় বিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আ. জব্বার পোঁওতা গ্রামে নিজ জমিতে জাহেরন বিবিকে তার নিজ জমিতে আশ্রয় দেন। একটি টিনের ঘরও করে দেন জাহেরনের জন্য। প্রায় ১০ বছর হলো জাহেরন ভিক্ষে করেন। এক নাতনি আছে, আগে একসঙ্গে থাকতো সেই ভাঙা বাড়িতে। বর্তমানে সেই নাতনি একটি চালকলে কাজ করে, সেখানেই রাত যাপন করেন। শ্রবন শক্তি, দৃষ্টিশক্তি, দৈহিক শক্তি, স্মৃতি শক্তি জাহেরন বিবির তেমন কাজ করে না। তবু একটি ভাঙা লাঠি নিয়ে প্রতিদিন সকালে ভিক্ষে করতে বের হন। করোনাকালে ভিক্ষে করতে না পারে প্রায় দিনই না খেয়ে থেকেছে বলে জানালেন জাহেরন। কোন সরকারি সহায়তা পাননি বলে জানালেন তিনি।

স্থানীয় শিক্ষক আ. জব্বার ও এসএমআই একাডেমী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. খোরসেদা বেগম এই প্রতিবেদকসহ অনেকে তাকে সহায়তা করেন। সহায় সম্বলহীন মুক্তিযোদ্ধার মাতা একজন জাহেরন বিবি বয়স্ক অথবা বিধবা কার্ডের ব্যবস্থা নিতে সান্তাহার পৌরসভা, উপজেলা সমাজসেবা অফিস, সান্তাহার নাগরিক কমিটি,সান্তাহার প্রেস ক্লাব, সান্তাহার প্রথম আলো বন্ধুসভা সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহবান জানিয়েছেন। সান্তাহার ২ নং ওয়ার্ডের কমিশনার মো. মোমতাজ আলী বলেন, করোনার সময় তাকে সরকারি সহায়তা করা হয়েছে। তার জন্য বিধবা অথবা বয়স্ক ভাতা করার ব্যাপারে আমি চেষ্টা করবো এবং বিষয়টি পৌর মেয়রের দৃষ্টিতে আনব।

 

আরও খবর

Sponsered content