প্রতিনিধি ১৬ এপ্রিল ২০২১ , ৭:০৪:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ
হঠাৎ করেই ঝিনাইদদের ভারতীয় সীমান্ত এলকা দিয়ে অবৈধভাবে সেদেশে যাওয়ার ঘটনা বেড়েছে। প্রতিদিনই বাংলাদেশ থেকে অবৈধ পথে ভারতে প্রবেশ করছে অসংখ্য নারী-পুরুষ ও শিশু। চলতি বছরের তিন মাসে এই সীমান্ত দিয়ে ভারত যাওয়ার চেষ্টাকালে ৩৪৫ জনকে আটক করেছে মহেশপুরের ৫৮ বিজিবি। মহেশপুর ৫৮ বিজিবির দেওয়া প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ সব তথ্য উঠে এসেছে।
এদিকে করোনাকালেও ভারতে প্রবেশের এই জনস্রোত কমছে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ধুড় পাচারের নিরাপদ রুট তৈরি হয়েছে মহেশপুরের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা। দেশে লকডাউন ও যান চলাচলে কড়াকড়ি থাকায় ১১ এপ্রিলের পর থেকে বিজিবি কাউকে আটক করতে পারেনি।
বিজিবির পাঠানো প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে দেখা গেছে মহেশপুর উপজেলার বাঘাডাঙ্গা, মাটিলা, সেজিয়া একাশিপাড়া, বাঁশবাড়িয়া, মকরধ্বজপুর, মাইলবাড়িয়া, দরবেশনগর, পদ্মপুকুর, খোশালপুর ও হাঠাৎপাড়া দিয়ে বিনা পাসপোর্টে ভারতে প্রবেশের সময় তাদেরকে আটক করা হয়। এরমধ্যে জানুয়ারী মাসে ৪৭ জন, ফেব্রয়ারি মাসে ১১১ জন, মার্চ মাসে ৬৫ জন ও এপ্রিলের ১১ তারিখ পর্যন্ত ১২২ জনকে বিনা পাসপোর্টে ভারতে প্রবেশের সময় এসব বাংলাদেশীকে আটক করা হয়। এসময় তাদের সহযোগীতার অপরাধে প্রায় ৩৫ জন দালালকে আটক করা হয়।
তবে সীমান্তে বসবাসকারীদের ভাষ্য, বিজিবি’র হাতে যারা আটক হয় তার থেকে অনেক বেশি মানুষ সবার অজান্তে সীমান্ত পার হয়ে ভারত চলে যায়। এসব কাজে সহযোগীতা করে সীমান্ত এলাকায় গড়ে উঠা শক্তিশালী একটি দালালচক্র। তবে বিজিবির হাতে আটক হওয়া ব্যক্তিরা ভারতে প্রবেশের কারন হিসাবে চিকিৎসার কথা বলেছেন। অনেক সময় দেখা গেছে পরিবার ধরে ভারতে যাচ্ছে।
সর্বশেষ গত ১১ এপ্রিল মহেশপুরের বাঘাডাঙ্গার কুমিল্লাপাড়া এলাকার একটি পেয়ারা বাগান থেকে দালাল নিজাম উদ্দীন ও খায়রুলসহ আটজনকে আটক করে বিজিবি। আটককৃকতদের বাড়ি বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ, যশোরের চাচড়া, নড়াইলের কালিয়া ও খুলনার ফুলতলা এলাকায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভারত থেকে বাংলাদেশের প্রবেশের সময় চারশতাধিক অনুপ্রবেশকারী আটক হয় বিজিবি’র হাতে। যাদের অনেকে এখন ফিরছে বলছেন সীমান্তে বসবাসকারীরা। সীমান্ত এলাকায় তথ্য নিয়ে জানা গেছে, মহেশপুর সীমান্তে ধুড় পাচারের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নারী পুরুষ মহেশপুর সীমান্তের বিভিন্ন নির্জন এলকায় জড়ো হয়। তারা দালালদের টাকা দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে।
ঝিনাইদহে ভারতীয় সীমান্ত এলাকা রয়েছে ৫৭ কিলোমিটার। এরমধ্যে কাটাতার বিহীন এলাকা রয়েছে প্রায় ১১ কিলোমিটার। কাটাতার বিহীন এলাকা দিয়েই বেশী যাতায়াত হচ্ছে বলে বিজিবি ও পুলিশ জানিয়েছে।
মহেশপুর সীমান্তের মাটিলা গ্রামের নুরুন নবী নামে এক গ্রামবাসী জানান, সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে লোক আসে ভারত থেকে। অনেক সময় তারা সীমানা ক্রস করে বিভিন্ন বাড়িতে আশ্রয় নেয়। একইভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যায়। এরা মুলত এক শ্রেণির দালালদের মাধ্যমে এপার ওপার হয়ে থাকে।
মহেশপুর ৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান জানান, সম্প্রতি অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের ঘটনা বেড়েছে। তবে আমরা সার্বক্ষনিক কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি প্রতিটি সীমান্ত এলাকায় যেন কেউ অবৈধ সুযোগ কাজে লাগাতে না পারে সেদিকে কড়া নজরদারি করা হচ্ছে।