প্রতিনিধি ৪ জানুয়ারি ২০২৫ , ৮:০০:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ
ভিক্ষুকের ঘরে ২৩ দিন আশ্রয়ে থাকা ঠিকানা বিহীন গর্ভবতী প্রতিবন্ধীর দায়িত্ব নিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা। ওই প্রতিবন্ধীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের বিষয়টি নজরে আসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানার।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা ফতেহাবাদ ইউনিয়নের দূর্গম এলাকা ঘোষঘর পূর্বপাড়া গ্রামে প্রতিবন্ধীর আশ্রয়দাতা আয়শা বেগম(৫০)’র বাড়িতে যান এবং প্রতিবন্ধীর খোঁজ খবর নেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন, সাংবাদিক এবিএম আতিকুর রহমান বাশার, আব্দুল আলীম, সমাজ সেবক জয়নাল আবেদীন মূন্সী, মো. জামাল উদ্দিন ব্যাক্তিবর্গ। ভিক্ষার খোঁজে বের হওয়া প্রতিবন্ধীর আশ্রয়দাতা আয়শা বেগমের অপেক্ষা করে রাত ৭ টা পর্যন্ত না আসায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা চলে আসেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা এসময় শীতের কম্বল ও তার খাদ্য চিকিৎসা সেবার জন্য ১০ হাজার টাকা অনুদানসহ প্রসবকালীন সময় পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ে আবাসন এবং জীবন চলায় যাবতীয় সুযোগ সুবিধা প্রদানের আশ্বাস দেন।
উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, রোববার থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা প্রদান, উপজেলা দরিদ্র কল্যাণ তহবিল থেকে যাবতীয় ব্যায়ভার বহনের আশ্বাস এবং প্রতিবন্ধী কার্ড ও ভাতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
স্থানীয়রা জানান, ১৯/২০ বছর বয়সী বাক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী গর্ভবতী এ নারীকে ২৩ দিন পূর্বে সুবিল বাজার থেকে নিজ ঘরে আশ্রয় দেন ভিক্ষুক আয়শা বেগম। আয়শা বেগম স্বামীর মৃত্যুর পর এক প্রতিবন্ধী পুত্র সন্তান নিয়ে পিত্রালয়ে আশ্রিত। তার মা’ও মানষিক প্রতিবন্ধী ছিলেন, মা’ প্রায় ৫ বছর পূর্বে মারা যান। পিত্রালয়ে থেকে ভিক্ষাবৃত্তি করে নিজের এবং প্রতিবন্ধী ভাইয়ের ভরন পোষন পরিচালনা করেন। গত ১২ ডিসেম্বর আয়শা বেগম সুবিল বাজারে ভিক্ষাবৃত্তি করার সময় প্রতিবন্ধী মেয়েটির সাথে দেখা, তার খোঁজ খবর ও পরিচয় জানতে চাইলে সে কোন জবাব না দিয়ে ভিক্ষুকের পেছনে পেছনে তার বাড়িতে চলে আসে। তার পর থেকে ২৩ দিন ভিক্ষুক নারীই তার ঘরে আশ্রয়ে রেখে ওই প্রতিবন্ধী নারীর থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে আসছেন। স্থানীয়রা আরো জানান, প্রতিবন্ধী নারীকে খাতা কলম দিলে তার নামটা অনেক কষ্টে আকলিমা লিখতে পারলেও আর কিছুই লিখতে পারেনি। এখন তার প্রসবকালীন সময় চলে আসায় তার চিকিৎসা নিয়ে আয়শা বেগম বিচলিত হয়ে পড়েন। স্থানীয়রা অনুমান করে বলেন, তার গর্ভের সন্তানের বয়স অনুমান ৮ মাসের হবে।