প্রতিনিধি ১৯ নভেম্বর ২০২৪ , ৫:১৬:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভায় দোহাজারী-লালুটিয়া-চৌকিদারফাঁড়ি সড়কের পাশে ড্রেনের নির্মাণ কাজ গত দুই বছর ধরে বন্ধ পড়ে আছে। ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর থেকে পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও ড্রেনের কাজ শেষ না হওয়ায় একদিকে ভোগান্তিতে পড়েছেন ড্রেন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা অপরদিকে ব্যাহত হচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষের কাঙ্খিত লক্ষমাত্রা।
জানা যায়, দোহাজারী পৌরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডের পানি নিষ্কাশনের জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (২য় পর্যায়) এর আওতায় চুয়াত্তর লাখ দুই হাজার ৪৭৭ টাকা ব্যয়ে পূর্ব দোহাজারী জামে মসজিদ থেকে জাবেদের বাড়ি হয়ে সাঙ্গু নদী পর্যন্ত ৬১৭ মিটার আরসিসি ইউ ড্রেন নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে দোহাজারী পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ। ২০১৯ সালের ১৩ মে প্রকল্পটি অনুমোদনের পর এই কাজের দায়িত্ব পায় মেসার্স এমডি শাহজাহান চৌধুরী নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। তবে ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর থেকে কয়েক দফায় ড্রেনের কাজ ৭৫ শতাংশ শেষ হলেও বাকি ২৫ শতাংশ কাজ গত দুই বছর ধরে বন্ধ পড়ে আছে। দ্রুত কাজ শেষ করতে সাবেক মেয়র আলহাজ্ব মোহাম্মদ লোকমান হাকিম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বার বার তাগাদা দিলেও বাকি অংশের এলাইনমেন্ট ক্লিয়ার না পাওয়ার অজুহাতে কাজ শুরু করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পের মূল টাকার ৫০ শতাংশ বিল ইতোমধ্যে তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, সাঙ্গু নদী থেকে সুরতআলী মাষ্টারপাড়া হয়ে জাবেদের দোকান পর্যন্ত ড্রেনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু জাবেদের দোকান থেকে আফজলের দোকান পর্যন্ত ড্রেনের কাজের জন্য মাটি খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়েছে গত দুই বছর ধরে। ফলে অস্থায়ীভাবে বাঁশ, কাঠ দিয়ে মাচা পেতে চলাচল করছে ওই স্থানের ব্যবসায়ী ও দোকানে বাজার করতে আসা ক্রেতারা। আবার জাবেদের দোকান থেকে লতিফ সওদাগরের বাড়ি পর্যন্ত ড্রেনের কাজ সম্পন্ন হলেও মাঝেমধ্যে কিছু স্থানে এখনো ড্রেনের কাজ বাকি। বাকি থাকা ওই অংশগুলোতে ময়লা-আবর্জনা দিয়ে ড্রেন ভরে গেছে। কোথাও কোথাও পানি জমে আছে। আর লতিফ সওদাগরের বাড়ি থেকে পূর্ব দোহাজারী জামে মসজিদ পর্যন্ত অংশে এখনো মাটি খোঁড়াই হয়নি।
হাজারী পুকুর পাড়ের ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী বলেন, ড্রেন নির্মাণের জন্য আমার দোকানের সামনে মাটি খুঁড়ে রাখলেও কাজ শুরু হয়নি। এভাবেই পড়ে রয়েছে গত দুই বছর ধরে। দোকানের সামনে গর্ত থাকায় ক্রেতা আসতে অসুবিধা হয়, তাই বাধ্য হয়ে নিজের টাকা খরচ করে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে মাচা পেতে ক্রেতাদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছি। দ্রুত কাজ শেষ করে ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে পৌর কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
ব্যবসায়ী রবিন বলেন, ড্রেন নির্মাণের জন্য খুঁড়ে রাখা গর্তে জমে থাকা পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। তাছাড়া গর্তে জমে থাকা পানিতে মশার বংশবিস্তার হচ্ছে। মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে দিনের বেলায়ও মশার কয়েল জালাতে হয়। ড্রেনের কাজ যদি না হয় তবে গর্তটি ভরাট করে ফেলা উচিত।
এবিষয়ে দোহাজারী পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. নাঈম উদ্দিন বলেন, “পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডে ওই ড্রেনের অসমাপ্ত ২৫ শতাংশ কাজ দ্রুত শেষ করতে সাবেক মেয়র মহোদয় ঠিকাদারকে একাধিকবার তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু ঠিকাদারের নিজস্ব কিছু সমস্যা এবং ড্রেনের স্থান জটিলতার কারনে বাকি অংশের কাজ শুরু করতে পারছে না বলে জানিয়েছে ঠিকাদার। নির্ধারিত মেয়াদে কাজ শেষ করতে না পারলে বিল না দেওয়ার পাশাপাশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”