খুলনা

বাগেরহাটে টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

  প্রতিনিধি ২৮ জুলাই ২০২১ , ৬:১৭:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ

বাগেরহাট প্রতিনিধি :

বাগেরহাটে টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বেড়ে উপক’লীয় জেলা বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে।

বাগেরহাটের ভৈরব, দড়াটানা, শরণখোলার বলেশ্বর, মোরেলগঞ্জের পানগুছি, মোংলার পশুরসহ সব নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট বেড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার সহস্রাধিক পরিবার। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মৎস্য ঘের, আমনের ধানের বীজতলা ও বর্ষাকালীন সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে । চরম দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। মঙ্গলবার সকাল থেকে বাগেরহাটে অবিরাম বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

বুধবার (২৮ জুলাই) সকাল ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় বাগেরহাট জেলায় গড়ে ৯৩ দশমিক ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে কৃষিবিভাগ। এর মধ্যে সব থেকে বেশি ২৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে শরণখোলা উপজেলায়। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বর্ষাকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষিবিভাগ।
বাগেরহাট সদর উপজেলা, কচুয়া, ফকিরহাট, শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, রামপাল ও মোংলার বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

কচুয়া উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের রুস্তম শেখ বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃষ্টিতে প্রচুর পানি বেড়েছে। ঘরের চারপাশে পানি উঠেছে। ঘেরও তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। নেট দিয়ে মোটামুটি ঠেকিয়েছি। এ অবস্থা শুধু নরেন্দ্র্রপুরের নয় আশপাশের বেশিরভাগ গ্রামের অবস্থা এ রকম।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর এলাকার দবির উদ্দিন বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি রাস্তায় হাঁটুপানি। অনেকের ঘর ও দোকানের ভেতরে পানি ঢুকে পড়েছে। বৃষ্টি হলেই আমাদের এলাকার সড়কে পানি উঠে যায়। এই এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর কোনো উদ্যোগও নেই। একটু বৃষ্টি হলেই আমাদের দুর্ভোগের শেষ থাকে না।

সদর উপজেলার হাড়িখালী মাঝিডাংগা আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার আলী হোসেন বলেন, শুধু বৃষ্টি নয় জোয়ার হলেই এলাকায় পানি উঠে যায়। দুর্ভোগে পড়তে হয় আমাদের। জলাবদ্ধতা নিরসনে লোক দেখানো নয় কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে। যাতে স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা রোধ করা যায়। না হলে আমাদের দুর্ভোগ কখনো যাবে না।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বাগেরহাটের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বাগেরহাটে অবিরাম বৃষ্টিতে আউশ-আমনের বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে শরণখোলা উপজেলায়। এছাড়া জেলায় গড়ে ৯৩ দশমিক ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যদি এভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে তবে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবীর জানান, সুন্দরবনে পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে তিন থেকে সাড়ে তিন ফুট পানি বেড়েছে। প্রজনন কেন্দ্র এলাকার পাকা রাস্তায় এক থেকে দেড় ফুট পানি ছিলো। তবে সকাল থেকে পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে।

আরও খবর

Sponsered content