রংপুর

ব্যাগ তৈরিতে সফল ফরহাদ-নাজমা দম্পতি

  প্রতিনিধি ১৫ অক্টোবর ২০২১ , ৭:৪৪:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

মো. শাহরিয়ার কবির আকন্দ, পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) : গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী পৌরসভার বৈরিহরিণমাড়ী গ্রামের ফরহাদ-নাজমা দম্পতি ব্যাগ তৈরির কারখানায় আজ তারা স্বাবলম্বী। নিজের ভাগ্য আর সমাজ পরিবর্তনের ইচ্ছা নিয়ে দিন-রাত নিজের কারাখানায় নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এ দম্পতি। চান অবহেলিত নারীদের প্রতিষ্ঠিত করতে। ফরহাদ-নাজমা দম্পতি যখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। সংসারে চলছে নানান টানাপোড়েন। এ সময় স্বামী-স্ত্রী মিলে ২০০৮ সালে সমিতি থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে শুরু করেন ব‍্যাগ তৈরির কারখানা।

বর্তমানে তার কারখানার মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ এবং গরুর খামারে আরো ৫ লাখ টাকা। এর পাশাপাশি বাড়িতেই গড়ে তুলেছেন গরুর খামার। তার খামারে রয়েছে দুটি বিদেশী দুধেল গাভী ও ৪ টি বাছুর। এর মূল্য প্রায় ৫ লাখ টাকা। এর থেকে প্রতিদিন ৭ লিটার করে দুধ পাওয়া যায়। দ্বিতলা বাড়ি তৈরি করেও এখন পুঁজি দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ টাকা। সেলাই মেশিন হাতে নিয়ে কেবল ফরহাদ-নাজমা দম্পতি স্বাবলম্বী হননি, আত্মনির্ভরশীল করেছেন গ্রামের ৪০ জন নারী-পুরুষকে। তাদের গড়ে তোলা এই কারখানায় কর্মসংস্থান হয়েছে অবহেলিত প্রায় ৩০ জন নারীর।

সমাজ পরিবর্তনে ফরহাদ -নাজমা দম্পতির মতো দেশের সকল নারীরা এগিয়ে এলে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর হবে বলে মনে করেন এই উদ্যোক্তা। সরেজমিনে ফরহাদ-নাজমা দম্পতির ব‍্যাগ কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, ৫ হাজার টাকা মাসিক বেতনে কাজ করছেন পৌরসভার নুনিয়াগাড়ী গ্রামের ভ‍্যান চালক হবিবারের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম, বৈরিহরিণমাড়ী গ্রামের ভ‍্যানচালক জেনারুলের স্ত্রী মিনা বেগম ও রেজা মিয়ার স্ত্রী রিক্তা বেগম। এছাড়াও কারখানা থেকে ব‍্যাগের সরঞ্জাম বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ব‍্যাগ তৈরি করেন, পৌরসভার বৈরিহরিণমাড়ী গ্রামের শ্রীপুরের ভ‍্যান চালক হাবুর স্ত্রী চামেলী, এনামুলের স্ত্রী ঝরণা বেগমসহ আরো ৩০ জন। চামেলী এবং ঝরণা জানান, আমরা সংসারের কাজ সেরে ১৫,২০,২৫, ৩০ ডজন ব‍্যাগ প্রতিদিন তৈরি করি। প্রতি ডজন ব‍্যাগ তৈরি বাবদ আমাদের দেওয়া হয় ১৫ টাকা। এতে করে আমাদের প্রতিদিন আড়াইশ থেকে তিনশত টাকা আয় হয়। আমরা এখন স্বাবলম্বী। আমাদের স্বামীরা এখন আমাদের সম্মান করে কথা বলে।

এদিকে পৌরসভার বৈরিহরিণমাড়ী গ্রামের ভ্রাম‍্যমাণ ব‍্যাগ বিক্রেতা জেনারুল ইসলামের ছেলে মেহেদী জানান, কারখানা থেকে পাইকারি দামে ব‍্যাগ কিনে জেলার এবং জেলার বাহিরের হাট-বাজারের দোকান-পাটে বিক্রি করি। এতে করে প্রতিদিন আমার লাভ হয় ৫ শ থেকে ৬ শ টাকা। এরকম আমরা ৫ জন ভ্রাম‍্যমান ব‍্যাগ বিক্রেতা আছি। ফরহাদ জানান, ২০০৮ সালে মাত্র ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে আমার ব‍্যাগ কারখানা শুরু করি। বতর্মানে আমার কারখানায় ৪০ জন নারী -পুরুষ কাজ করছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান নয়ন জানান, আমি ফরহাদ-নাজমা দম্পতিকে ধন‍‍্যবাদ জানাই। এরকম একটি ব‍্যাগের কারখানা গড়ে তুলে গ্রামের নারীদের স্বাবলম্বী করার জন‍্য। ইচ্ছা থাকলে মানুষ অনেক কিছু করতে পারে, যা ফরহাদ-নাজমা করে দেখিয়েছে। আমি তাদের আরো সফলতা কামনা করছি। পাশাপাশি আমাদের উপজেলার তরফ থেকে তাকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

 

 

আরও খবর

Sponsered content