প্রতিনিধি ১৩ মার্চ ২০২৫ , ৭:৫৭:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ
গর্ভের কন্যা সন্তানের মা হয়েছেন বেওয়ারিশ পাগলীটি কিন্তু বাবার পরিচয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার (১২ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাতে কুমিল্লা দেবীদ্বার উপজেলার ৬ নং ফতেহাবাদ ইউনিয়নের ঘোষঘর গ্রামের জব্বর আলী মূন্সীর বাড়িতে। এক ভিক্ষুকের ঘরে ৪ মাস আশ্রীত থাকার পর বেওয়ারিশ ওই পাগলিটি গত বুধবার (১২ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাতে এক কন্যা সন্তানের মা হয়েছেন।
প্রায় ৩ মাস পূর্বে ঠিকানাবিহীন এক বাক ও মানষিক প্রতিবন্দী ভিক্ষুক(২৫) সুবিল বাজারে বসে বসে রাস্তার মাটি খাচ্ছিল। ওই বাজারে দানের কম্বল আনতে গিয়ে আয়শা বেগম নামে এক ভিক্ষুক ওই প্রতিবন্দী মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। প্রতিবন্ধী মেয়েটি তার আশ্রয়দাতাকে মারধর করত, তার পরও কষ্ট করে মেয়েটির গর্ভপাত পর্যন্ত আশ্রয়ে রাখেন। আয়শা বেগম স্বামী পরিত্যাক্তা, বাবার বাড়িতে এক মাত্র পুত্র সন্তান নিয়ে আশ্রিত আছেন। তার এক মাত্র ভাই নূরনবী(৩২)ও প্রতিবন্দী। নিজ পুত্র এবং প্রতিবন্ধী ভাইয়ের ভরন পোষনও তার ভিক্ষাবৃত্তিতে চলে।
২২ দিন ধরে ভিক্ষুকের ঘরে আশ্রিত ৭ মাসের গর্ভবতী এক প্রতিবন্দী’ শিরোনামে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসন দায়িত্ব নিলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুই বারে ১৫ হাজার টাকা প্রদান করা ছাড়া ওই নারীর তেমন কোন দেখভাল করা হয়নি। গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) স্থানীয় সাংবাদিকগন ওই প্রতিবন্ধীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আল্ট্রাসহ সার্বিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি দেয়া হলেও হাসপাতালে রাখা যায়নি।
আয়েশা বেগম জানান, পাগলী মেয়েটি তাকে প্রতিনিয়ত বিরক্ত করত। তাকে কিল, ঘুষি, থাপ্পর ও মারধর করত। তিনি আরো জানান, আজ অজ্ঞাত পরিচয়হীন পাগলী মেয়েটি সুন্দর এক ফুটফুটে কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে। সে মুখে কিছু বলতে পারেনা, মানষিক প্রতিবন্দী, মাঝে মাঝে কাগজ কলম হাতে দিলে নিজের নাম ‘আকলিমা’ লিখতে পারে আর কিছুই পারেনা। এখন তাকে ও নবজাতককে নিয়ে আমি বিপাকে আছি। আমি চাই সরকার তাদের দায়িত্ব গ্রহণ করুক।
এ বিষয়ে দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবুল হাসনাত খান বলেন, আমি উক্ত কর্মস্থলে যোগদানের আগে থেকেই উপজেলা প্রশাসন পাগলীর আশ্রয়দাতা আয়েশাকে সহযোগীতা করছে। আজ সাংবাদিক এর মাধ্যমে বেওয়ারিশ পাগলীর কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার খবর পেয়েছি। প্রশাসনের পক্ষে থেকে সর্বোচ্চ সহযোগীতা প্রদানের আশ্বাস দেন।