হাসানূল ইসলাম, মুন্সিগঞ্জঃ দেশে করোনার এই মহামারীতে জনগনের পাশে সবার আগে এগিয়ে এসেছে পুলিশ। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশের মানুষের পাশে কাজ করে যাচ্ছে ক্লান্তিহীন ভাবে। যদিও এই দায়িত্ব পালনে সব পেশার মধ্যে সবচেয়ে বেশী করোনায় আক্রান্ত এই পেশার লোকজন। মারাও যাচ্ছেন অনেকে, আর যারা সুস্থ হচ্ছেন তারা আবার ফিরে আসছেন জনগনের সেবায়। দায়িত্ব পালনে অবিচল রয়েছে এই ফ্রন্ট লাইন ফাইটাররা।
বর্তমানে জেলায় সর্বাধিক আক্রান্ত জেলা সিভিল সার্জন ও স্বাস্হ্যবিভাগের ৯৩ জন, জেলা প্রশাসনের ২৩ জন এবং মাঠে নিয়মিত কাজ করার পরও পুলিশ বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ জন। সিভিল সার্জন কার্যালয় ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অধিকাংশ কর্মকর্তা করোনা পজেটিভ হলেও পুলিশ সুপার কার্যালয় রয়েছে অনেকটা নিরাপদ অবস্থানে। যার পেছনে রয়েছ জেলা পুলিশ এর সময় উপযোগী পদক্ষেপ।
বর্তমানে মুন্সিগঞ্জে করোনার দায়িত্ব পালনকালে আক্রান্ত হয়েছেন পুলিশের ১৭জন, যারমধ্যে ইন্সপেক্টর ৬ জন এবং বাকী ১১ জন এস.আই, এ.এস.আই, কনস্টেবল। ঝুঁকিতে রয়েছে জেলা পুলিশ লাইন্সসহ বেশ কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তবে জেলা পুলিশ লাইন্স এর আড়াই অফ পুলিশ জানান, এখন পর্যন্ত জেলা পুলিশ লাইন্স সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রয়েছে। এবং বর্তমানে জীবাণুনাশক টানেল এর কারনে প্রতিটি সদস্যকে এই টানেলের মাধ্যমে পরিশোধিত করে ভীতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে।
তাই মু্ন্সিগন্ঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার সকল পুলিশ সদস্যর জন্য নিরাপত্তা ব্যাবস্হা গ্রহণ করেছেন। এব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আশফাকুজ্জামান জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালনরত কর্মকর্তাদের জন্য পর্যাপ্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান সরবরাহ করেছেন। এছাড়া পুলিশের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন-সি ও জিংক ট্যাবলেট প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে মুন্সিগঞ্জে প্রথম একদিনে ১০জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলে মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য পিপিই সরবরাহ করা হয়। এরপর মুন্সিগঞ্জে একজন পুলিশ কর্মকর্তার করোনা পজেটিভ পাওয়া গেলে জেলা পুলিশ এর পক্ষ থেকে জেলা পুলিশ লাইন্স, প্রতিটি থানা ও তদন্ত কেন্দ্রে জীবানুনাশক সেন্সর স্প্রে টানেল স্হাপন করা হয়।
জেলা পুলিশ সুপারের এই উদ্যোগের সফলতার পরই জেলা প্রশাসক কার্যালয়েও এই উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আবুল কালাম আজাদ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। সেই সাথে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যাতে প্রতিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
ইতিমধ্যে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়, সদর থানা, জেলা ট্রাফিক পুলিশ কার্যালয় ও জেলা পুলিশ লাইন্সে এই টানেল পরীক্ষামূলক ভাবে স্হাপন করা হয়েছে। পরবর্তীতে অতি শীগ্রই বাকী সব থানা ও তদন্ত কেন্দ্রে এই অটো সেন্সর জীবানুনাশক স্প্রে মেশিন স্হাপন করা হবে বলে- জানান জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মোমেন (পিপিএম)।