দেশজুড়ে

মৃতদেহের পাশে আসেনি আপন কেউ, দাফন করলো শেষ বিদায়ের বন্ধু

  প্রতিনিধি ৩ জুন ২০২০ , ৭:০৪:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের সাহেবপুর গ্রামে সকাল থেকে একটি লাশ পড়ে আছে মৃতদেহের নিজ বাড়ির উঠোনের এক কোনে । বৃষ্টিতে ভিজে রোদে শুকিয়ে একাকার হচ্ছে। তার পরেও ছেলে মেয়ে স্ত্রী কেউ আসেনি লাশের পাশে। এ যেন এক পশুপাখির মৃত দেহ।

বুধবার (৩জুন) ফজরের নামাজের পর থেকেই এমন দৃশ্য দেখা গেল উপজেলার ওচমানপুর এলাকার কালা বক্স বাড়ির উঠোনের কোনায়। মিরসরাইতে এতো নিষ্ঠুরতা নির্মমতা এর পূর্বে আর কেউ দেখেনি । দিন শেষে লাশ দাফনে এগিয়ে এলো মিরসরাইয়ের শেষ বিদায় বন্ধু নামক একটি সংগঠন। মিরসরাই উপজেলার ৫নং ওসমানপুর ইউনিয়নের সাহেবপুর গ্রামের কালা বক্স বাড়ির ছালেহ আহমদ (৫৫) করোনা উপসর্গ নিয়ে চট্টগ্রামে নিজ বাসায় মারা যায় ২ জুন বিকালে।

আর ৩ জুন ফজর নামাযের পর তার লাশ গ্রামে নিয়ে আসা হয় । গ্রামের লোকজন লাশ এ্যাম্বুল্যান্স থেকে নামাতে বাঁধা দেয়। বাড়ির লোকজন সবাই সামিল হয় সেই বাধায়। লাশের সাথে তার বড়ো ভাই নুর আহমদ ছাড়া কেউ নাই। স্ত্রী সন্তান কেউ আসেনি শহরের বাসা থেকে। লাশটা কোন প্রকারে বাড়ির উঠোনে রেখে এ্যাম্বুলেন্স চলে যাওয়ার পর সারাদিন পড়ে আছে মৃত পশু পাখির মতো।

লাশের অবস্থা দেখে গ্রামের মানুষ বলছে হয়তো আরো একদিন আগে চট্টগ্রামে মারা গেছে। দীর্ঘদিন কুয়েত প্রবাসী ছিলো। নিহত সালেহ আহমমদ গত ২ বছর পরিবার নিয়ে শহরে থাকতো। মরার পর কেউ নাই। পরবর্তীতে এলাকার লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে শেষ বিদায়ের বন্ধু নামক সংগঠনটি এগিয়ে আসে তারা বিকালে জানাযা শেষে দাপনের ব্যাবস্থা করেন।

শেষ বিদায়ের বন্ধু সংগঠনের সমন্বয়ক মিরসরাই প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক নুযুল আলম বলেন, নিহতের মৃত দেহ তার বড় ভাই বাড়িতে নিয়ে আসার পর বাড়ির লোকজন ভয়ে পালিয়ে যায়। গ্রামের লোকজনকে না জানিয়ে লাশ এলাকায় আনাতে কেউ দাপনের জন্য এগিয়ে আসেনি। আমরা খবর পেয়ে সংগঠনের সদস্যদের চাঁদার টাকায় লাশ দাপন কাপনের ব্যাবস্থা করি। প্রশাসনিক বা অন্য কোন মাধ্যম থেকে আমাদের সহযোগিতা করা হয়নি।

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, লাশের ব্যাপারে আমাদের কেউ কোন তথ্য দেয়নি সাংবাদিক নুরুল আলম ফোন করে দাপনের অনুমতি চাইলে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by