দেশজুড়ে

মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীরা ভোগান্তির শিকার

  প্রতিনিধি ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ৬:০২:১০ প্রিন্ট সংস্করণ

মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীরা ভোগান্তির শিকার

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারদের অবহেলার কারণে রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। হাসপাতালে রোগী ভর্তী হওয়ার ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও ডাক্তারের দেখা পেলোনা এমনটি ক্ষোভের কথা জানালেন ভূক্তভোগী রোগীরা।

যে কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের। ইনডোরে ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসায় সরকারিভাবে ২৪ প্রকারের ওষুধপত্রের তালিকা থাকলেও রোগীদের অভিযোগ রয়েছে অধিকাংশ ওষুধ কিনতে হয় বাহির থেকে। আউটডোরে ৩ টাকার টিকিটের পরিবর্তে নেওয়া হচ্ছে ৫ টাকা। রোগীদের ভর্তির ক্ষেত্রে জরুরী বিভাগেও অনেকের গুনতে হচ্ছে টাকা। হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যাক্তিদের এ নিয়ে নেই কোনো নজরদারী। এলাকার সচেতন মহলের দাবি চিকিৎসা নিতে এসে সাধারণ রোগীদের যেন এহেন ভোগান্তি পোহাতে না হয়। সেজন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয়রা।

সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপকূলীয় এ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন সহ ১টি পৌরসভার প্রায় ৪ লক্ষ মানুষের গ্রামীন স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত মোরেলগঞ্জ হাসপাতালটি এখন চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। আশির দশকের ৩৫ শয্যা এ হাসপাতালটি পরবর্তীতে ৫০ শয্যায় রুপান্তরিত হলেও উন্নতি হয়নি চিকিৎসা ব্যাবস্থার। ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত শাহ আলম হাওলাদার রোববার ২টায় হাসপাতালে ভর্তি হলেও পরেরদিন সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত, ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও কোনো ডাক্তারই তাকে দেখেননি, শুধু মাত্র দায়ীত্বে থাকা নার্স দেখেছেন। জরুরী বিভাগ থেকে ওষুধ লিখে দিয়েছে, বাহির থেকে তাকে কিনতে হয়েছে মেট্রো আইভি ও নেক্সজাম ৪০ এমজি ইনজেকশন। রোগী মিজান হাওলদার তাকেও বাহির থেকে বমির ইনজেকশন কিনে আনতে হয়েছে। জাকির হাওলাদার রবিবার বিকেলে ভর্তি হলেও সোমবার দুপুর পর্যন্ত রাউন্ডে ডাক্তার আসেনি দেখতে।

তিনি বলেন, সকালে ডাক্তার আসার কথা থাকলেও এখনো পর্যন্ত তার দেখা মিলছে না। তাকেও বাহির থেকে একটি ওষুধ কিনতে হয়েছে। হনুফা বেগম তিনিও বাহির থেকে দুটি টোরামেক্স ইনজেকশন কিনে এনেছেন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ১১ মাস বয়সি শিশু আব্দুল্লাহ রাত সাড়ে ১১ টায় ভর্তি হয়ে পরেরদিন দুপুর পর্যন্ত বেডে চিৎকার করছেন, অভিভাবকরা বলছেন, ডাক্তার দেখতে আসেনি। রমিচা বেগম স্বামী হানিফ শেখ দুজনেই চিকিৎসার জন্য ভর্তি হতে জরুরী বিভাগে গুনতে হয়েছে টাকা। এরকম নানাবিধ অভিযোগ রোগীদের।
এদিকে রোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইনডোরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ভর্তিকৃত রোগীদের সরবারাহকৃত ওষুধের তালিকায় ওমিপ্রাজল ইঞ্জেকশন থাকলেও গ্রুপ পরিবর্তন করে কোম্পানিদের খুশি রাখতে ইসোমিপ্রাজল গ্রুপের ইঞ্জেকশন লিখেছেন জরুরী বিভাগ থেকে। রোগী বাধ্য হয়ে বাহিরের দোকান থেকে ওষুধগুলো কিনতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে হাসপাতালে রবিবারের দায়িত্বে থাকা আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহারিয়ার ফাতাহ্ বলেন, তিনি একাই আউটডোর, ইনডোর ও জরুরী বিভাগের ৩টি দায়িত্ব পালন করেছেন। যে কারনে ভর্তিকৃত রোগীদের দেখতে রাউন্ডে যেতে পারেননি। কাগজে কলমে ৭ জন ডাক্তার থাকলেও দায়িত্ব পালন করছেন ৪ জন। একজন ডাক্তার ডেপুটেশনে রয়েছেন ডা: লাবণী আক্তার শরণখোলায়, ডা. মেহজাবিন বর্ণা ও ডা. দোলা পালাক্রমে একে অন্যের প্রক্সি দিচ্ছেন।

এ সর্ম্পকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি পৌরসভায় একটি মিটিংয়ে রয়েছেন। রোষ্টার অনুযায়ী ডাক্তাররা দায়িত্ব পালন করবেন সরবারাহের বাহিরে ওধুধের গ্রুপ পরিবর্তনের বিষয়ে তার জানানেই। এ ক্ষেতে কোন অনিয়ম হলে খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।