ঢাকা

রাজবাড়ীতে বাদামের বাম্পার ফলনে চাষীরা মহাখুশি

  প্রতিনিধি ১৯ জুন ২০২১ , ৬:৪৩:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ

আবু মুসা বিশ্বাস, রাজবাড়ী:

এবার রাজবাড়ী জেলায় বাদাম চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষকরা। সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন পাংশা উপজেলার কৃষকরা। বরাবরের মতো পাংশা উপজেলায় এবারও সর্বোচ্চ পরিমাণ জমিতে বাদাম চাষ হয়। এবছর জেলায় বাদাম চাষের টার্গেট ধরা হয়েছিলো ৫০০ হেক্টর জমি। আর চাষ হয়েছে ৯৩৫ হেক্টর। এর মধ্যে পাংশা উপজেলায় ৪৫০ হেক্টর, রাজবাড়ী সদর উপজেলায় ২৫০, গোয়ালন্দ উপজেলায় ১৯৫ ও কালুখালী উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়। এবার প্রচণ্ড খরার কারণে বেলে দোয়াশ মাটিতে বাদামের ফলন ভালো হয়েছে।

কিন্তু বেলে মাটিতে খরা জনিত কারণে বাদাম মরে যাওয়ায় বৃষ্টি শেষে গাছ সতেজ হলেও বাদামের ফলন কমে যায়। আবার শেষের দিকে নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় অনেক কৃষকের বাদাম তলিয়ে যাওয়া আশঙ্কা তৈরী হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান,বাদাম চাষে তেমন ঝুঁকি নেই। কিন্তু লাভ বেশি। আর যে জমিতে বাদাম চাষ হয় সে জমি এক ফসলী জমি। যেকারণে পরিচর্যা ছাড়াই কৃষকরা বেশি লাভবান হন। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় তাদের লাভ বেশি থাকে। এবার বাদাম চাষে উৎপাদন টার্গেট ছিলো ৯৩৫ মেঃটন। সেখানে উৎপাদন হয়েছে ১৬৪০ মেঃটন। পাংশা উপজেলায় উৎপাদন হয়েছে ৭২০ মেঃটন, রাজবাড়ী সদর উপজেলায় ৪৫০ মেঃটন, গোয়ালন্দ উপজেলায় ৩৯ মেঃটন এবং কালুখালী উপজেলায় ৮০ মেঃটন। রাজবাড়ী সদর উপজেলায় বাদামের বীজ সরকারিভাবে কিছু কৃষকের মধ্যে সরবরাহ করা হলেও সে বীজ নিম্নমানের হওয়ায় তা ফেরত নেয় উপজেলা কৃষি অফিস।

এরপর নতুন বীজ সরবরাহ করলে চাষ বিলম্ব হওয়ায় বন্যার ঝুঁকিতে পড়ে। বাদাম চাষি ইসমাইল বেপারী জানান, এমনিতে অনাবৃষ্টি অন্যদিকে সরকারি বাদাম প্রাপ্তিতে বিলম্ব; এসব কারণে বাদাম চাষে এবার লাভ কম হবে।

তিনি জানান, সদর উপজেলার চরকাঠুরি, চর আম্বারিয়া, মৌকুড়ি প্রভৃতি মৌজায় বাদাম চাষ হয়েছে। তবে মৌকুড়ি মৌজার সাত্তার প্রামানিক জানান, তার ৬বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করে অনেক বেশি লাভবান হয়েছেন। সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি অফিসার হাফিজুর রহমান বলেন, বাদাম চাষ হচ্ছে এক ফসলী জমির ফসল। এসকল জমি সাধারণত নদীতে তলিয়ে যায়। কিন্তু পলিমাটির আস্তর পড়ে চর জেগে উঠলে সে জমিতে বাম্পার ফলন হয়। আবার বাদাম চাষে তেমন পরিচর্যা করতে হয়না। শুধু ফসল তোলার সময় লেবার নিতে হয়। তিনি বলেন,এবার দুয়েকটি মাঠে ফলন ভালো না হলেও অধিকাংশ মাঠে বাম্পার ফলন হয়েছে।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক এসএম সাহীদ নূর আকবার জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও পাংশা উপজেলায় বাদামের চাষ টার্গেটের তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে।

বাদাম চাষিরা ভালো দাম পাওয়ায় আগামী বছরে আরও বেশি চাষ করবেন বলে আশা করেন। তবে বাদাম চাষে কৃষকদের প্রণোদনা বাড়ানোর বিষয়ে তিনি সরকারের ঊর্ধতন বহলে লিখবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by