প্রতিনিধি ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ৪:৪৯:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অসহায় লোকদের আবেককে পুজি করে তাদের কাছ থেকে হাওলাতের নাম ভাঙ্গিয়ে বিশ লাখেরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে এ প্রতারক তাহমিনা। কেউ টাকা ফেরত চাইলে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানিও করে। তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ আদালতসহ থানায় একাধিক লিখিত অভিযোগ রয়েছে।
প্রতারক তাহমিনা উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের দড়িকান্দী এলাকার মো. আমির হোসেনের স্ত্রী ও উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের আউখাবো এলাকার আজগর আলীর মেয়ে।
প্রতারক তাহমিনা আক্তার গত ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া এলাকার মৃত চান মিয়ার ছেলে মো. ইউসুফের কাছ থেকে ব্যবসায় করার কথা বলে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে নগদ ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা নেয়। ওই টাকা ইউসুফ মিয়া তাহমিনার কাছে গত ২০২৪ সালের ১০ নভেম্বর টাকা ফেরত চাইলে তাহমিনা দেই দিচ্ছি বলে বিভিন্ন তালবাহানা করে ঘুরাচ্ছে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মিথ্যা মামলার ভয়ভীতি দেখায়। উপায়ন্তর না পেয়ে ইউসুফ মিয়া বাদী হয়ে তাহমিনাকে আসামি করে নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলার দায়ের করেন। সিআর মামলা নং- ৩/২৫। এ মামলার দায়ে তাহমিনাকে ওয়ারেন্ট ভুক্ত করে আদালত। মামলার খবর পেয়ে তাহমিনা আক্তার মামলার বাদী ইউসুফকে হয়রানি করার জন্য তার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে রূপগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
শুধু তাই নয় প্রতারক তাহমিনা আক্তার তার নিজ এলাকার বাসিন্দা মৃত মজিবুর রহমানের স্ত্রী আয়েশা বেগমের কাছ থেকে গত ২ বছর পূর্বে হাওলাত বাবদ দেড় লাখ টাকা নেয়। ওই টাকা ফেরত চাইলে গত ১৫ জানুয়ারি সকালে তাহমিনা ও তার স্বামী আমির হোসেনসহ ৫/৬ সদস্যের একদল সন্ত্রাসী নিয়ে আয়েশা বেগমের বাড়িতে হামলা চালায়। টাকা দিবে না বলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যায়।
একই এলাকার বুলবুল আহম্মেদের স্ত্রী বিউটি আক্তারের কাছ থেকে গত দেড় বছর পূর্বে দেড় লাখ টাকা নেয়। ওই টাকাও বিউটি আক্তার ফেরত চাইলে প্রতারক তাহমিনা আজ দিচ্ছি কাল দিচ্ছি বলে ঘুরাচ্ছে। পুনরায় আবার গত ২০ জানুয়ারি টাকা চাইলে তাহমিনা ক্ষিপ্ত হয়ে তার ভারাটে সন্ত্রাসীদের নিয়ে বিউটি বেগমের বাড়িতে হামলা চালায়। এ ব্যাপারে বিউটি আক্তার বাদী হয়ে তাহমিনা আক্তার ও তার স্বামীসহ ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এরকম ভাবে পারিবারিক পুর্ব সম্পর্কের সুত্র ধরে ব্যবসায়িক প্রয়োজনের কথা বলে একই এলাকার মৃত ফয়সাল রহমানের স্ত্রী শামীমার কাছ থেকে এক মাসের কথা বলে ২০ হাজার নিয়েছে। সৈকত আলীর স্ত্রী পারুলের কাছ থেকে ৪০ হাজার কিস্তি উঠিয়ে নিয়ে যায়। রফিকুল ইসলামের স্ত্রী শামীমার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা। মৃত আলী হোসেনের স্ত্রী তাছলিমার কাছ থেকে ২০ হাজার। পিয়ারা বেগমের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা নিয়ে যায়। হাছেন আলির স্ত্রী রহিমার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নেয়। এভাবে অনেকের টাকা সে প্রতারণা করে নিয়েছে এ প্রতারক তাহমিনা।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী বলেন, তাহমিনার বিরুদ্ধে টাকা সংক্রান্ত বিষয়ে থানায় অভিযোগ পেয়েছি এবং তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও হয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে তৎপর রয়েছে।