প্রতিনিধি ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ৫:১৭:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ের পাকুন্দা এলাকায় ৫ আগস্ট রাতে রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ন আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলামকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। তবে হত্যার ৬ মাস কেটে গেলেও গ্রেপ্তার হয়নি কোনো আসামি। নিহত জাহিদুল ইসলামের পরিবারের অভিযোগ- আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও স্বৈরাচার সরকারের কালো টাকার বিনিময়ে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছেনা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় রূপগঞ্জের সোনাবো এলাকা থেকে জাহিদুলকে ডেকে নিয়ে সোনারগাঁয়ের পাকুন্দা এলাকায় রাত ১০টার দিকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাহিদুল ইসলামের মা পুষ্প আক্তার বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫/৭ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার পর থেকেই হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে স্থানীয় এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রেখেছেন।
জাহিদুল ইসলামের মামা নুর মোহাম্মদ জানান, জাহিদুল ইসলাম তার মা পুষ্প আক্তারকে নিয়ে রূপগঞ্জ উপজেলার সোনাবো এলাকায় তার বাড়িতেই বসবাস করে আসছেন। জাহিদুল রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ন আহ্বায়ক হিসেবে রাজনীতি করতেন। বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে ডজন খানেকেরও বেশি রাজনৈতিক মামলায় জেল খেটেছেন।
সোনাবো এলাকার বাড়ির জমি নিয়ে একই এলাকার জাকির হোসেন, নাজমুল হোসেন, রাসেল, আবু বক্করদের সঙ্গে তার বিরোধ রয়েছে। ওই জমি নিয়ে আদালতে মামলাও চলমান। জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ করায় একাধিকবার প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা জাহিদুল ইসলামকে হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সুযোগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে সোনাব এলাকা থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে সোনারগাঁও উপজেলার পাকুন্দা এলাকায় নিয়ে জাকির হোসেন, নাজমুল হোসেন, রাসেল, আবু বক্করসহ আসামিরা প্রথমে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারপিটসহ নির্যাতন চালায়। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। এর পর পাকুন্দা কড়ইতলা পুকুরের কচুরিপানার নিচে গুমের উদ্দেশে লুকিয়ে রাখে। খবর পেয়ে সেখান থেকে জাহিদুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল থাকায় এবং রাস্তাঘাট বন্ধ থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই জাহিদুলের মরদেহ দাফন করা হয়।
দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গত ১৬ আগস্ট নিহতের মা পুষ্প আক্তার ২৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫/৭ জনকে আসামি করে সোনারগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে আদালতের নির্দেশে গত ২৩ সেপ্টেম্বর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওবায়দুর রহমানের উপস্থিতিতে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হয়।
নুর মোহাম্মদ অভিযোগ করে আরও জানান, ঘটনার প্রায় ছয় মাস পার হয়ে গেলেও পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আসামিরা প্রকাশ্যে দিবালোকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আসামি গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে দলীয় নেতাকর্মীসহ এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য প্রশাসন তৎপর রয়েছে। গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।