দেশজুড়ে

লকডাউনে রংপুরে বাগানেই নষ্ট হচ্ছে ফুল

  প্রতিনিধি ১৬ এপ্রিল ২০২১ , ৭:১৬:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

রবিউল ইসলাম দুখু, রংপুর ব্যুরো:

 

রংপুর নগরীর পান্ডারদিঘি এলাকার ফুলচাষি আব্দুল কাদের। ৫ বিঘা জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চাষ করেছেন। গোলাপের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ হচ্ছে। তিনি জানান, দূর-দূরান্ত থেকে ফুল কিনতে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা আসতেন এই এলাকাতে। করোনাভাইরাসের লকডাউনের কারণে মানুষ ঘরবন্দি থাকাসহ দোকানপাট বন্ধ থাকায় চাষকৃত এই ফুল বিক্রি করার কোনো সুযোগ নেই।

এমন অবস্থা চলতে থাকলে ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় থাকবে না বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর মতো জেলার শতাধিক ফুলচাষি এ বছর হতাশায় দিন গুনছেন। ফুলচাষি কাদের জানান, গতবারের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পহেলা বৈশাখকে ঘিরে প্রচুর ফুল চাষ করেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে ফুল বিক্রি করতে পারেননি। বাগানে প্রায় ৩ লাখ টাকার অবিক্রিত ফুল নিয়ে চরম বিপাকে পড়ছেন। এসব ফুল এক সপ্তাহের মধ্যে বিক্রি করতে না পারলে ঝরে পড়ে যাবে। পরিবহন ও দোকানপাট বন্ধ থাকায় ভালোবাসার ফুল এখন অনাদরে ঝরছে। আর কয়েকদিন গেলে ফুল হবে গো-খাদ্য। তার বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাগানে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন রকমের ফুল। বাগানে গোলাপের পাশাপাশি গাঁদা, জবা, নাইনটাস, ইন্টার হেনা, গেজনিয়া ও ক্যালেন্ডুলা ফুলের চাষ করেছেন। ফুল বিক্রি করতে না পারায় বাগানেই রয়ে গেছে ফুল।

রংপুরের ফুল ব্যবসায়ী ফিরোজ আলম বলেন, এই সময়টাতে প্রতি মাসে রংপুরের স্থানীয় বাজারে প্রতিদিন লাখ টাকার ফুল বেচাকেনা হয়। বিশেষ দিনগুলোতে তা ৮-১০ লাখও ছাড়ায়। আর রংপুরসহ আশপাশের জেলাতে প্রতি মাসে অন্তত অর্ধ কোটি টাকার বেশি ফুল বেচা-কেনা হয়। সেই সাথে তিনি ফুল সংরক্ষণের দাবি জানান।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের ফুল বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কবিতা আনজু-মান- জানান, চাহিদাকে অনুসরণ করে এখন বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক ফুলের চাষ হচ্ছে। যা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। ফুল বেশিদিন সংরক্ষণের সুযোগ নেই। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে অন্যান্য সময়ের মত ফুল বিক্রি না হওয়াসহ উৎসব বন্ধে ফুলচাষিরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হবেন বলেও জানান এই ফুল বিশেষজ্ঞ।

জানা যায়, রংপুরে ছোটবড় মিলে শতাধিক ফুলবাগান রয়েছে। এর মধ্যে নগরসহ আশপাশের এলাকায় গোলাপের বাগান আছে ২০টির মতো। বাকিগুলোতে রয়েছে বিশেষ করে গ্লাডিওলাস, গাঁদা ও রজনীগন্ধা।

আরও খবর

Sponsered content