প্রতিনিধি ২৯ জুলাই ২০২৪ , ৫:৫৭:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ
কাঁচা মরিচ উৎপাদনে দেশের অন্যতম জেলা ফরিদপুর। এ জেলার মধুখালী উপজেলার উঁচু জমিতে প্রতিবছর মরিচ আবাদ করেন চাষিরা। বিশেষ করে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে যখন দেশে সংকট দেখা দেয়, সেই সময়ে ফরিদপুরের কৃষকদের উৎপাদিত মরিচ দেশের বিভিন্ন এলাকার বাজারে পাঠানো হয়।
তবে, এবছর মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে মরিচ উৎপাদনে। বিশেষ করে, গাছে আশানুরূপ ফলন না থাকায় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই খাদ্য পণ্যটির সরবরাহ কম রয়েছে। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।
মধুখালী উপজেলা সদরে কাঁচা মরিচের আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, মাত্র কয়েকজন কৃষক মরিচ নিয়ে বাজারে এসেছেন। তাদের দাবি, ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা মণ দরে মরিচ বিক্রি করেও লাভবান হতে পারছেন না।
মধুখালী সদর উপজেলার শকেনের মোড় এলাকার কৃষক খলিল মোল্লা বলেন, ‘এক শতাংশ জমিতে মরিচ চাষ করতে খরচ হয় ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। ৩৩ শতাংশ জমিতে মরিচ উৎপাদন হয় আড়াই মণের মতো। প্রতি মণ মরিচ উৎপাদন করতে খরচ হচ্ছে ১৩ হাজার ২০০ টাকা। বাজারে যে দাম পাচ্ছি, তাতে আমাদের লোকসান হচ্ছে।’
মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের আমডাঙ্গা গ্রামের কৃষক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতে প্রচণ্ড খরা এবং অনাবৃষ্টির কারণে মরিচ গাছ বাড়তে পারেনি। খরায় অনেক জমির মরিচ গাছ পুড়ে গেছে।’
উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়িয়া গ্রামের কৃষক মো. শামিম শেখ বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে জমি থেকে ১০ থেকে ১২ মণ কাঁচা মরিচ তুলতাম। এবার সেই জমি থেকে আধা মণ মরিচও তােলা যাচ্ছে না। ফলে ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা মণ দরে মরিচ বিক্রি করেও লাভবান হতে পারছেন না কৃষকরা।’
এ বিষয়ে মধুখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাে. মাহাবুব ইলাহী বলেন, ‘এবার শুরু থেকে তীব্র খরার কারণে খেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সময় মতাে গাছে মচির আসেনি। এতে বাজারে পর্যাপ্ত মরিচ সরবরাহ হচ্ছে না। গত কয়েকদিন বৃষ্টির পর বর্তমান কৃষকের জমিতে মরিচ গাছে সাঁজ (ফুল) এসেছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ মরিচ বাজার আসবে বলে আমি আশাবাদী।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ মরিচ উৎপাদনকারী উপজেলার মধ্যে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় এবছর ২ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন মরিচের আবাদ হয়েছে। যা থেকে ২০ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন মরিচ উৎপাদন হবে। ফলে বাজারে মরিচের মূল্য স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’