চট্টগ্রাম

শাটলের নিজ ঠিকানা ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন’

  প্রতিনিধি ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৫:২৫:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ

শাটলের নিজ ঠিকানা 'চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন'

সৌন্দর্যের লীলাভূমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দেশের একমাত্র পাহাড়ঘেরা বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের স্বপ্ন নিয়ে শিক্ষার্থীরা ছুটে আসেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। চট্টগ্রাম শহর থেকে দূরে হাটহাজারীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় শহর থেকে যাতায়াতের অন্যতম বাহন হচ্ছে শাটল ট্রেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আয়তনে দেশের সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত, ক্লাস ও পরীক্ষার শিডিউল নির্ভর করে ট্রেনের হর্ণ ও ঝুন ঝুন শব্দে। এটি দেশের একমাত্র ট্রেন নির্ভর বিশ্ববিদ্যালয়, যার মূল ফটকের সামনেই অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রেলওয়ে স্টেশন। যেখানে শিক্ষার্থীরা মিলিত হন আড্ডা, কোলাহলে। শাটলের আসা যাওয়ার ওপরই নির্ভর করে শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকদের শিক্ষা কার্যক্রম।

শাটল এবং বিশ্ববিদ্যালয় দুটোরই সন্ধ্যার পরের চিত্রটি একদমই মন ছুয়ে যাওয়ায় মতো। সন্ধ্যা হলেই শিক্ষার্থীরা মিলিত হয় স্টেশনের আড্ডায়। ছোট-ছোট দলে বিভক্ত হয়ে চায়ের চুমুকে গলা ছেড়ে গান গাওয়া, হৈচৈ, জন্মদিন উৎযাপন থেকে শুরু করে মাঝে মধ্যেই ক্যাম্পাসের পরিচিত ব্যান্ডের পারফর্ম করতেও দেখা যায় এই স্টেশনে । সবমিলিয়ে দেশের মধ্যে এক বিচিত্র স্টেশন হিসেবে নিজের স্বাতন্ত্র্য রূপ ফুটিয়ে তুলেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রেলওয়ে স্টেশনের চিত্রটি গত কয়েক বছর আগেও এমনটি ছিলোনা। স্টেশনের ক্ষুদে ব্যবসায়ী ও ক্যাম্পাসের সিনিয়র শিক্ষার্থীদের মতে, (কোভিড – ১৯) এর আগে এখানে তেমন আড্ডা হতো না, কয়েকটি চায়ের দোকানে মাঝে-মধ্যে গান গাইতে দেখা যেত অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীদের। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারীর (কোভিড-১৯) পর হতে স্টেশনের চিত্র পুরোপুরি বদলে গেছে। এখানে গান হচ্ছে, আড্ডা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফর্মের মানোন্নয়ন ও পর্যাপ্ত লাইটিং ব্যবস্থা এবং স্টেশনের পাশেই বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট গড়ে ওঠেছে। এসব রেস্টুরেন্টের মধ্যে রয়েছে নোঙর, ক্যাম্পাস ডাইন, মি.চা, স্টোশন ফুড কর্ণারসহ বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট। যার ফলে শিক্ষার্থীরা আড্ডা দেওয়ায় উপযুক্ত স্থান হিসেবে রেলস্টেশনকেই বেছে নিয়েছে। এখানে প্রতিনিয়ত বাউল, লোকসংগীত, লালনগীতি ও হাসন রাজার বিখ্যাত গানগুলোই প্রাধান্য পাচ্ছে। এসব গানের বিশেষত্ব পেশাদার শিল্পী না হয়েও গলা ছেলে সুর তোলা যায়। তাই আড্ডাকে প্রাণবন্ত ও মনের মাধুরী মিশিয়ে স্টেশনে এসব গান করে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

সন্ধ্যার পর স্টেশনে নিয়মিত গান করে এমনি একটি দলের সঙ্গে সন্ধ্যার আড্ডায় সুর মিলিয়েছেন রিপোর্টার। জানা যায়, তারা বাঁশি, ঢোল, একতারা, খনজনি, করতাল প্রভৃতি দিয়েই এসব গান পরিবেশন করা হয় এই স্টেশনে ।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by