রাজশাহী

সিরাজগঞ্জে দুই শতাধিক পরিবার পেল স্থায়ী ঠিকানা

  প্রতিনিধি ২৫ আগস্ট ২০২১ , ৬:০৮:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ

এস,এম আল আমিন, সিরাজগঞ্জ সদর প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া সরকারী জমিসহ আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত সরকারি বাসগৃহ পেয়ে হাসি ফুটেছে অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মুখে। একদিকে প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতিশ্র“তি আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুষ্ঠ বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং অন্যদিকে বন্দোবস্তকৃত খাস জমির কবুলিয়তসহ সরকারী খরচে নির্মিত সেমিপাকা বাসগৃহ পেয়ে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় খুশি হয়েছেন সুবিধাভোগী পরিবারগুলো। ২০ জুন খোকশাবড়ী ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামে প্রথম পর্যায়ে ১০০টি ঘর হস্থান্তর করা হয়, ২২ আগস্ট দ্বিতিয় পর্যায়ে ১২২টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গুচ্ছগ্রাম ঘুরে দেখা যায়, ঘর গুলোর কাজ শেষ। পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ও শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ পুরোপুরি ভাবে চালু হয়েছে।

ইতোমধ্যে ভূমিহীন পরিবার ঘরে উঠে বসবাস করছে। দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় নকশা অনুযায়ী দৈর্ঘ্য সাড়ে ১৯ ফুট, প্রস্থ ২২ ফুটসহ সাড়ে ৮ ফুট উচ্চতা সম্বলিত একটি ঘরে বারান্দা, ৮ ফুট করে দু’টি কক্ষ, একটি রান্না ঘর, একটি গোসল খানা, একটি লেট্রিনের ব্যবস্থা আছে। ঘরগুলো নির্মিত হচ্ছে দেড় ফুট মাটির নিচে ১০ইঞ্চি ইটের ওপর ৫ইঞ্চি দেয়ালের গাঁথুনি দিয়ে। ৬ একর জায়গার উপরে ২২২টি ঘরের প্রথম পর্যায়ে ১০০টি ঘরের জন্য বরাদ্দ ছিলো এক লক্ষ ৭০হাজার টাকা, ২য় পর্যায়ে নির্মান করতে প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এক লাক্ষ ৯০ হাজার টাকা। রয়েছে খেলার মাঠ, ড্রেনের ব্যবস্থা, পুকুর ঘাট, মসজিদ, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫০টি ফলের চারা রোপণ করা হয়েছে।

ঘরের সাথে জমির কাগজপত্রের মালিকানা পেয়ে ভীষণ খুশি এসব গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার। বিনামূল্যে এসব ঘর পেয়ে আনন্দে আপ্লুত সুবিধাভোগীরা। তাদের অনেকেরই কাছে এরকম একটি ঘরের মালিক হওয়া ছিল স্বপ্নের মতো। অবশেষে তাদের এ স্বপ্ন পূরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে নিজেদের স্থায়ী ঠিকানা হওয়ায় খুশি দারিদ্রপীড়িত জনপদের ভূমিহীন ও গৃহহীনরা। নিজেদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রাণ খুলে দোয়াও করছেন অনেকে। ঘর পেয়ে এসব পরিবার অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করেন সুবিধাভোগীরা।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পাওয়া মো. শহিদুল ইসলাম, মিনু, আনোয়ার, হামিদ, খোদেজা, নুর জাহান, মনোয়ারা, জামাল উদ্দিন বলেন, আমরা খুব খুশি যে প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ঘর দিয়েছেন। এর বিনিময়ে মহান আল্লাহ তার সম্মান আরও বাড়িয়ে দিন। স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি যে, আমারা জমিসহ ইটের একখানা নতুন ঘর পাবো। শেখ হাসিনার সরকার আমাকে ইটের ঘর দিবেন। এই বয়সে ইটের ঘরে থাকতে পারবো। আমি ভীষণ খুশি হয়েছি ঘর পেয়ে। দোয়া করি শেখ মুজিবের বেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। নতুন ঘর পাওয়া এসব ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষগুলোর চোখেমুখে এখন খুশির ঝিলিক।

খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রাশিদুল হাসান রশিদ মোল্লা জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীতে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রায় প্রতিটি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে সরকারি খরচে মাথা গোজার মতো নুন্যতম একটি করে আশ্রয়স্থল গড়ে দেয়ার যে প্রতিশ্র“তি করেছিলেন, সেই প্রতিশ্র“তির সুষ্ঠ বাস্তবায়ন করে দিয়েছেন। তাঁর এ উদ্যোগ বিশ্বে বিরল হয়ে থাকবে। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা সততা ও নিষ্ঠার সাথে প্রকৃত ভূমিহীন পরিবার বাছাই করে তাদের ঘর বরাদ্দের ব্যবস্থা আমরা করেছি। প্রকৃত ভূমিহীন বাছাইয়ের সুবিধার্তে স্থানীয় নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিদের সহযোগিতা, পরামর্শ নিয়েছি আমরা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আনোয়ার পারভেজ বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে আমরা পরিদর্শন করে জায়গা বরাদ্দ থেকে শুরু করে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করছি। ভূমিহীনদের মাঝে দলিল হস্তান্তর ও ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ এর তত্ত্বাবধানে খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের ২২২ গৃহহীনদের জন্য বরাদ্দকৃত এসব সরকারি বাসগৃহের নির্মানকাজ সুষ্ঠভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য চমৎকার পরিবেশে মানসম্মত টেকসই ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘরে আশ্রয় পাওয়াদের অধিকাংশই ভূমিহীন বা কারও আশ্রয়ে বসবাস করতেন। তারা এখন প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর উপহার পওয়ায় তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।

 

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by