বাংলাদেশ

স্কুলে ভর্তির ১০ হাজার আবেদন বাতিল

  প্রতিনিধি ২২ ডিসেম্বর ২০২২ , ৮:৩২:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক :

নুসরাত জাহান ইমা মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্যাচমেন্ট কোটায় লটারিতে নির্বাচিত হয়েও ভর্তি হতে পারছে না। গত এক মাস আগে তারা মতিঝিল কলোনি থেকে নয়াপল্টনে চলে যায়। কিন্তু স্কুলে ভর্তির জন্য আবেদন করার সময় কলোনির ঠিকানা ও ক্যাচমেন্ট উল্লেখ করায় নির্বাচিত হয়েও পছন্দের স্কুলে ভর্তি থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারে সন্তানকে নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে কান্না করে সাহায্য চাইতে দেখা গেছে অভিভাবকদের।

এই শিক্ষার্থীর মা ইসমত জাহান বলেন, আমার মেয়ে মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করেছে। বর্তমানে তাকে মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য মতিঝিল কলোনির একটি কম্পিউটারের দোকান থেকে আবেদন করি। আবেদন করার সময় আমাকে না জানিয়ে দোকানদার ক্যাচমেন্ট এলাকা উল্লেখ করেন। যখন আবেদন করা হয় তখন আমরা কলোনিতে ছিলাম। গত এক মাস আগে পল্টনে চলে যাই।

এতেও কোনো লাভ হচ্ছে না বলে কেঁদে দেন তিনি।

আবেদন করার সময় দোকানদার ক্যাচমেন্ট উল্লেখ করেছিলেন সেটি তিনি জানতেন না বলে জানান এই অভিভাবক।

এজন্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে ধরনা দিয়েও কোনো সমাধান পাচ্ছেন না ইসমত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার সারাদেশে ৫৫০টি সরকারি বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ১ লাখ ৭ হাজার ৮৯টি শূন্য আসনে ছয় লাখ ২৬ হাজার ৫৯টি আবেদন করা হয়। গত ১২ ডিসেম্বর লটারির মাধ্যমে সাধারণ, ক্যাচমেন্ট, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আলাদাভাবে সফটওয়্যারের মাধ্যমে লটারি করা হয়। লটারির মাধ্যমে একটি নির্বাচিত ও আরেকটি অপেক্ষমাণ তালিকা তৈরি করা হয়। ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচিত তালিকার ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি নেওয়া হয়। যেসব আসনে ভর্তি হয়নি সেখানে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, সারাদেশে ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য একাধিক আবেদন করেছে। সেসব শিক্ষার্থী বিভিন্ন স্কুলে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাদের আবেদন বাতিল করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজারের বেশি এমন আবেদন বাতিল করা হয়েছে। কোথাও কোথাও একজন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য দেড় শতাধিক আবেদন করেছে বলেও চিহ্নিত হয়েছে।

একাধিক আবেদন করা শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকে কম্পিউটার দোকান থেকে আবেদন করেছেন। তথ্য ভুল হওয়ায় দোকানদার না জানিয়ে একাধিক আবেদন করেছেন। অনেকের আবেদন করার সময় তথ্যগত ভুল হওয়ায় তারা একাধিক আবেদন করেছেন। কেউ কেউ আবার লটারিতে নির্বাচিত হতে ইচ্ছা করেই একাধিক আবেদন করেন।

জানতে চাইলে মাউশি’র পরিচালক বেলাল হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, যাদের একাধিক আবেদন চিহ্নিত হচ্ছে তাদের ভর্তি বাতিল করা হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এটি করা হচ্ছে। এ জন্য টেলিটকের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। ভর্তি নীতিমালার বাইরে কারও কিছু করার নেই।

তিনি বলেন, আবেদন করার সময় কেউ ভুল করলে সেটির জন্য তাকে মাসুল দিতে হবে। এসব ভুল সংশোধন করার মতো আমাদের কোনো ক্ষমতা নেই। নির্বাচিত ছাত্র-ছাত্রীর আবেদনে সব তথ্য সঠিক না পাওয়া গেলে তার ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। ভুল করে যদি কেউ ভর্তিও হয় পরে সেটি চিহ্নিত হলে তার ভর্তি বাতিল করা হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে সরকারি ও বেসরকারি স্কুল এবং বেসরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ফি বেশি নেওয়া ও ভর্তি সংক্রান্ত অনিয়ম বন্ধে তদন্তে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। ২১ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চারজন উপ-সচিবের নেতৃত্বে পৃথক চারটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়।

এতে ঢাকা মহানগরীর ১৬টি মনিটরিং কমিটি, আটটি বিভাগীয় মনিটরিং কমিটি, ৫৫টি জেলা মনিটরিং কমিটি জেলা সদরের এবং উপজেলা মনিটরিং কমিটি উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরেজমিন মনিটরিং করে মাউশিতে রিপোর্ট দেবে

আরও খবর

Sponsered content

Powered by