দেশজুড়ে

গফরগাঁওয়ে গ্রাহকের টাকা নিয়ে পালালো পল্লী বন্ধু সমাবায় সমিতি

  প্রতিনিধি ২৭ জুলাই ২০২০ , ৭:৫৩:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ

গফরগাঁওয়ে গ্রাহকের টাকা নিয়ে পালালো পল্লী বন্ধু সমাবায় সমিতি

আ. আজিজ, গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) : ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে আড়াই শতাধিক গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে পল্লী বন্ধু স য় ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের একটি এনজিওর কর্মীরা। ফলে প্রতারিত গ্রাহকরা প্রতিদিন তাদের পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় উপজেলার পাগলা থানাধীন নলচিড়া (পালের বাজার) পল্লী বন্ধু স য় ঋণদান সমবায় সমিতি কার্যালয়ে এসে ভীড় জমাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১২ সালের জুন মাসে পল্লী বন্ধু স য় ঋণদান সমবায় সমিতি নাম দিয়ে চরশাঁখচুড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম, রুহুল আমিন ও তোফাজ্জল হোসেন মানিকসহ আরও সাত শেয়ার হোল্ডার তাদের সমিতির কার্যক্রম শুরু করে। পরে উপজেলা সমবায় অফিস থেকে রেজিষ্টেশন নিয়ে (রেজিঃ নং ১৮০/১২) পাগলা থানাধীন পাঁচবাগ ইউনিয়নের নলচিড়া (পালের বাজার) অফিস ভাড়া নিয়ে সমিতির ঋণ কার্যক্রম শুরু করে। অল্প টাকায় অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে সমিতির সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে কর্মী নিযোগ করে ইউনিয়নের চরশাখচুড়া, লামকাইন, উত্তর লালকাইন, পাঁচবাগ, গাভীশিমুল, দক্ষিণ হারিণা এবং নলচিড়া (পালের বাজার) গ্রামের প্রায় আড়াই শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত পল্লী বন্ধু স য় ঋণদান সমবায় সমিতি করে কার্যক্রম চালিয়ে আসলেও নভেল করোনা ভাইরাসের সুযোগ নিয়ে বিগত ২৫ মার্চ থেকে অফিস ও সাইনবোর্ড গুটিয়ে নেয়। আমনতকারীদের প্রায় অর্ধকোটি টাকা আতœসাৎ করে সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন, সহ-সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মানিক ও ম্যানেজার রফিকুল ইসলামসহ অন্য সদস্যরা এখন আতœগোপনে রয়েছেন। পল্লী বন্ধু স য় ঋণদান সমবায় সমিতি গ্রাহক দক্ষিণ হারিণা গ্রামের আব্দুল মজিদের স্ত্রী মোছা. হোসনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, সমিতির ম্যানেজার চরশাঁখচুড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম এক লাখ টাকায় প্রতি মাসে ১৫’শ টাকা মুনাফার লোভ দেখায়। সমিতির সভাপতি ও ম্যানেজারের কথা বিশ্বাস করে সৌদি প্রবাসী স্বামীর পাঠানো ৪ লাখ ১৫ হাজার টাকা (এফডিআর) বাবদ জমা রাখেন। টাকা জমা রাখার পর ৫মাস যাবত অফিস, সাইনবোর্ড এবং সমিতির কোন সদস্যকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। একই অভিযোগ লামকাইন গ্রামের স্কুল শিক্ষক মো. শাহজাহান সরদারের। বেশী মুনাফার আশায় পেনশনের ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা পল্লী বন্ধু স য় ঋণদান সমবায় সমিতিতে (এফডিআর) বাবদ জমা রাখেন। এখন তিনি সমিতির কোন সদস্যকে খোঁজে পাচ্ছেন না। টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় ছুঁটছেন লোকজনের দ্বারে দ্বারে। পল্লী বন্ধু স য় ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, আমি অনেক আগেই পদত্যাগ করে চলে এসেছি। গ্রাহকের টাকার ব্যাপারে সমিতির ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম সব জানে।
এ বিষয়ে ম্যানেজার রফিকুল ইসলামের সাঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঋন বিতরণে ত্রæটির কারণে গ্রাহকের অনেক টাকা ফিল্ডে আটকা পড়ে গেছে। সমিতির অনেক সদস্য টাকা নিয়ে সরে গেছে এবং মাঠকর্মীরা চাকুরী ছেড়ে চলে গেছেন। তাই ফিল্ড থেকে টাকা আদায় করা সম্ভাব হচ্ছে না। উপজেলা সমবায় অফিসার মো. মীর কাশেম বলেন, গ্রাহকদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে।

Powered by