চট্টগ্রাম

পণ্যমূল্য বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই ভারতীয় পণ্য বর্জন : পররাষ্ট্র মন্ত্রী

  প্রতিনিধি ২৩ মার্চ ২০২৪ , ৪:৪০:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

পণ্যমূল্য বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই ভারতীয় পণ্য বর্জন : পররাষ্ট্র মন্ত্রী

পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পবিত্র রমজান মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করে পণ্যমূল্য বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাকে বিএনপি শামিল হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য পণ্যমূল্য বাড়িয়ে জনভোগান্তি সৃষ্টি করা ।

মন্ত্রী শনিবার (২৩ মার্চ) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জেলায় সরকারি উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী ভারতের সাথে আমাদের হাজার কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে।

এসব সীমান্ত দিয়ে বৈধ উপায়ে প্রতিদিন পণ্য আনা-নেওয়া হয়। বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বিএনপি নেতারা চিকিৎসার জন্য ভারত যান, ভারতীয় পেঁয়াজ খান, তাদের নেত্রী ভারতীয় শাড়ি পরেন, যে সব নেত্রীরা রাস্তায় গলা ফাটায় তারাও ভারতীয় শাড়ি পরে, ইফতার বা সেহেরিতে ভারতীয় গরুর মাংস ছাড়া তাদের চলে না। কাজেই তাদের মুখে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেওয়া হিপোক্রেসি ছাড়া কিছু নয়।

উন্নয়ন সমন্বয় সভা বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা, যানজট পাহাড়কাটা প্রভৃতি বিষয় সভায় আলোচিত হয়েছে। চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আরো আড়াই বছর মেয়াদ রয়েছে। এ আড়াই বছরে প্রকল্প চলাকালীন সময়ে জনগণের যেন ভোগান্তি না হয় সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রকল্প শেষে সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ এবং সার্বিক সমন্বয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া প্রতি ৩ মাস অন্তর এ সভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনাল করার জন্য ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বন্দরকে বিনামূল্যে ৫ শত একর জায়গা দিয়েছেন। আরো ৩ শত একরের জন্য তারা আবেদন করেছে। তাও পাবে। বে টার্মিনাল করার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুর বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে সমঝোতা স্মারক সাক্ষর করেছে। তিনটি ভাগে এ টার্মিনালের কাজ হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর, সিঙ্গাপুর বন্দর কাজ করবে। ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে। অন্যান্য আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান এখানে যুক্ত হতে চাচ্ছে। এটি বড় অগ্রগতি। তিনি বলেন, বে টার্মিনাল নির্মাণ সম্পন্ন হলে আরেকটি বড় বন্দর তৈরি হবে যা দেশের জন্য বড় সম্পদ হয়ে উঠবে। এ টার্মিনাল দিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পাশাপাশি ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য সরবরাহ সহজ হবে। ফলে দেশের আর্থিক খাত শক্তিশালী হবে।

জলদস্যু কর্তৃক জাহাজ ছিনতাই ও নাবিক উদ্ধার বিষয়ে সাংবাদিকদের অপর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পূর্বেকার ছিনতাইকৃত জাহাজমনি উদ্ধার করতে একশ দিন সময় লেগেছিল। তবে আমরা বর্তমানে যত দ্রুত সম্ভব উদ্ধারের চেষ্টায় আছি। ইতোমধ্যে দস্যুদল জাহাজ মালিকের সাথে যোগাযোগ করেছে। আমরা চেষ্টায় আছি যাতে জাহাজের কোন ক্ষতি না হয়, নাবিকদের কোন ক্ষতি না হয় সেভাবে কাজ করতে। অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আমাদের সহযোগিতা করছে। আপনারা দেখবেন নাবিকদের পরিবার ইতোমধ্যে অনেকটা আশ্বস্ত হয়েছে।

সরকারও কাজ করছে। তিনি বলেন, ছিনতাইকৃত জাহাজে কয়লা রয়েছে যা একটি দাহ্য পদার্থ। কাজেই এমন কিছু করা যাবে না যাতে দাহ্য পদার্থের কারণে নাবিক ও জাহাজ উভয়ই হুমকির সম্মুখীন হয়। আমরা আশা করছি দ্রুতই ছিনতাইকৃত জাহাজ ও নাবিকদের নিরাপদে উদ্ধার করতে পারবো জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত সমন্বয় সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াশিকা আয়শা খান, আবদুছ ছালাম এমপি, এম এ মোতালেব এমপি, মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, এস এম আল মামুন এমপি, মহিউদ্দিন বাচ্চু এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আজম নাছির উদ্দিনসহ জেলা প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ অংশ নেন।