প্রতিনিধি ২০ জুন ২০২৪ , ৪:২৫:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তা নদীতে নৌকা ডুবির ঘটনায় এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুর পর্যন্ত একই পরিবারে ৪ জন সহ মোট ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় তিস্তা নদী বেশিষ্ট উপজেলার বজরা ইউনিয়নের খামার দামারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঝের চর এলাকায় নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী ও স্বজন সূত্রে জানা গেছে, বজরা ইউনিয়নের পশ্চিম বজরা খেয়াঘাট এলাকা থেকে জয়নাল আবেদীনের পরিবার ও তাদের আয়ত্নীয় স্বজন মিলে বুধবার সন্ধ্যার দিকে ২৫ জন ব্যক্তি একটি নৌকায় উঠে। তাঁরা নৌকা যোগে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পাওটানা গাবরের চর এলাকায় জয়নাল আবেদীনের মেয়ে পলি বেগমের শ^শুর বাড়ীতে ঈদ পরবর্তী দাওয়াতে যাচ্ছিলেন।
নৌকাটি ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়ার কিছু সময় পর মাঝ নদীতে হঠাৎ দমকা হাওয়ার কবলে পরে। এ সময় তিস্তার প্রবল স্রোতে নৌকাটি উলটে গিয়ে ডুবে যায়। নদীতে সাঁতার কেটে ৮জন তীরে উঠতে পারলেও বাকীরা ডুবে যান। পরে স্থানীয়রা তাদের সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসেন। খবর পেয়ে উলিপুর ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধার কাজে নামেন।
এসময় নদী থেকে আরও ১০ জনকে জীবিত অবস্থায় এবং আয়শা নামের এক বছরের শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত শিশু বজরা ইউনিয়নের মিয়াজিপাড়া গাবের তল এলাকার আজিজুল হকের মেয়ে বলে জানা গেছে।বজরা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এনামুল হক বলেন, নৌকা ডুবির ঘটনায় বুধবার রাতেই ১৮ জনকে জীবিত ও এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
রাতেই জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ইউএনও, ওসিসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা দূর্ঘটনা কবলীত এলাকা অবস্থান করে উদ্ধার কাজের সার্বিক বিষয় তদারকি করেন। এ সময় প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদলসহ স্থানীয়রা নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযান চালায় কিন্তু বৈরি আবহাওয়া ও নদীর তীব্র স্রোতের কারনে উদ্ধার কাজ ব্যহত হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পুনরায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছেন। তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত আনিছুর রহমান (৩৪), তার স্ত্রী কুলসুম বেগম (২৭), রুপালী বেগম (২৮), আইরিন (১০), ইরামনি (১০), শামীম (৫) সহ ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন।
উলিপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশনের সাব-কর্মকর্তা আব্বাস আলী জানান, সকাল থেকে ঘটনাস্থলে কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে কুড়িগ্রাম-রংপুরের ৫ সদস্যর ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছেন।
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত নিখোঁজ কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। উলিপুর থানার ওসি গোলাম মর্তুজা বলেন, নৌকা ডুবির খবর পেয়ে রাতেই জেলা প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। সকাল থেকে ওই এলাকায় ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছেন। পুলিশও তাদের সহযোগিতা দিচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতাউর রহমান জানান, গত রাত থেকে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা চলছে। স্থানীয়দের দাবী অনুযায়ী নিখোঁজ ৬ জন ব্যক্তির সন্ধানে ফায়ার সার্ভিস-ডুবুরি দল, পুলিশসহ প্রশাসনের সকল ইউনিট উদ্ধার অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রেখেছেন