প্রতিনিধি ১৬ জুলাই ২০২৪ , ৫:৪৮:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে প্রায় চার কেজি কোকেন আটকের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১৩ জুলাই সকাল আটটায় কোকেন বাহক বাহামার নাগরিক স্টাসিয়া শান্তে রোলি রোলি চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। কোনো ব্যাগেজ ছাড়া তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করে চট্টগ্রামের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেন। গত ১৫ জুলাই রোলি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁর ব্যাগেজ ক্লেইম করার পরে রেইডিং টিমের সদস্যরা কাস্টামস হাউজের সহযোগিতায় ব্যাগটি প্রথমে স্ক্যান করে। পরে তার ব্যাগটি তল্লাশি করে একটি কার্টুনের ভিতর থেকে ৭টি আয়তকার পলি প্যাকেটের মধ্যে সাদা বর্ণের কোকেন সাদৃশ্য পদার্থ আটক করা হয়। প্রতিটি প্যাকেটে প্রায় ৫শ থেকে ৬শ গ্রামের ৭টি প্যাকেটে মোট ৩ কেজি ৯০০ গ্রাম কোকেন পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে কোকেন পরীক্ষায় পজেটিভ ফলাফলের ভিত্তিতে রোলিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার পাসপোর্ট ও মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। কোকেনের পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২ জন নাইজেরিয়ান নাগরিককে ঢাকা থেকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের সঙ্গে রোলির হোয়াটঅ্যাপে যোগাযোগ হয়েছিল। মাদক বহনকারীদের দেশে প্রবেশের প্রয়োজনীয় ইনভাইটেশন, হোলেট বুকিং ও ভিসা পাওয়ার কার্যক্রমে একাধিক ব্যাক্তি রোলিকে সহযোগিতা করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মেট্রো দক্ষিণের উপপরিচালক রাজিব মিনা এবং মামলার বাদী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সার্কেলের পরিদর্শক জিল্লুর রহমান বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোঃ মনিরুল ইসলাম, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ জাহিদ হোসেন মোল্লা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মেট্রো উত্তরের উপপরিচালক খন্দকার হুনায়ুন কবির, এপিবিএন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম মিজানুর রহমান, এপিবিএন ঢাকা বিমানবন্দরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জিয়াউল হক ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মেট্রো উত্তরের সহকারী পরিচালক রামেশ্বর দাস।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কোকেনের বাংলাদেশে বাজার নেই। বাংলাদেশকে কোকেন পাচারের রোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কোকেনের ইউরোপ ও আমেরিকায় বাজার রয়েছে। বড় বড় খেলোয়াড়রা কোকেন সেবন করে থাকে। গত ২৪ জানুয়ারি ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়া নাইজেরিয়ান চক্রটি চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে কোকেন পাচার করতে চেয়েছিল। এ চক্রের হোতা ডন ফ্রাঙ্কির মূল নাম জ্যাকব ফ্রাঙ্কি। তিনি ‘বিগ বস’ নামে নিজেদের কমিউনিটিতে পরিচিত এবং বাংলাদেশ নাইজেরিয়ান কমিউনিটির প্রেসিডেন্ট।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানের নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। গত নয় বছর ধরে বাংলাদেশে থাকলেও গত ১৫ মাস আগেই দেশ ছেড়েছেন। এখন নাইজেরিয়ায় বসেই বিভিন্ন দেশের মাদক বহনকারীদের সমন্বয় করছেন।