চট্টগ্রাম

খাগড়াছড়িতে বাড়ছে আগাম কাঁঠালের চাহিদা

  প্রতিনিধি ১১ এপ্রিল ২০২১ , ৭:৩৮:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ

মো. ইব্রাহিম শেখ, খাগড়াছড়ি থেকেঃ

বলছিলাম দেশের জাতীয় ফলখ্যাত আগাম কাঁঠালের কথা। মৌসুম শুরুর আগে বাজার সয়লাব এ ফলে। সিজনের আগে আসে বিধায় এ ফলের কদর খুব বেশি। ঋতু বৈচিত্র্যের মাস বৈশাখ পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়িতে ম-ম গন্ধ ছড়াচ্ছে আম, কাঁঠাল ও লিচু। বাহারি ফলে ঠাসা খাগড়াছড়ির বিভিন্ন হাট-বাজার। আর এসব ফলের মধ্যে সবথেকে বড় জায়গা দখল করেছে কাঁঠাল।

খাগড়াছড়িতে সবচেয়ে বড় কাঁঠালের হাট বসে মাটিরাঙ্গায়।মৌসুমী সব ধরনের ফলের একটা কদর বরাবরই থাকে। তবে যদি সে ফল মৌসুমের আগেই পাওয়া যায় তাহলে চাহিদা তার একটু বেশিই থাকে। পাশাপাশি সবার আগ্রহ থাকে বেশ। ইতোমধ্যে মাটিরাঙ্গা বাজারে জমে উঠেছে কাঁঠালের হাট।

শনিবার হাটবার হলেও বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই প্রত্যন্ত পাহাড়ি জনপদসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে স্থানীয় বিক্রেতারা কাঁঠাল নিয়ে আসতে শুরু করেন জেলার সর্ববৃহৎ এ কাঁঠাল বাজারে। এ দুই দিন মাটিরাঙ্গার এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসে কাঁঠালের হাট।

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় সাপ্তাহিক বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগাম কাঁঠালে সয়লাব প্রায় পুরো বাজার। উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে এসব কাঁচা-পাকা কাঁঠাল পরিবহন যোগে এনে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। দর-কষাকষি করে কিনছেন ব্যবসায়ীসহ অনেকেই। দাম চড়া হলেও সাধারণ ক্রেতা ও পাইকাররা ভিড় করছেন বাজারে। পাকা কাঁঠালের চাহিদা থাকলেও পরিবহনের সুবিধার্থে কাঁচার চাহিদাই বেশি।
বাজারে আনারস এবং তরমুজ বেশ কিছুদিন আগেই এসেছে। এখন আসতে শুরু করেছে কাঁঠাল। তবে চাহিদা বেশি হওয়ায় দামও চড়া। এরপরও পাইকারি ব্যবসায়ীরা কাঁঠাল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন চটগ্রাম, ঢাকা, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।

ক্রেতা জামাল উদ্দিন জানান, আমি ২০টি কাঁঠাল কিনবো। নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠাবো, তবে দাম যাই হোক বিষমুক্ত কাঁঠাল নিশ্চিন্তে ক্রয় করা যায়।

 

কাঁঠাল বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন জানান, আমি তবলছড়ির বিভিন্ন স্থান থেকে আগাম কাঁঠাল বাগান ক্রয় করে থাকি। আজ তবলছড়ি থেকে এক পিকআপ কাঁঠাল নিয়ে এসেছি। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। তাছাড়া দাম ভালো হওয়ায় লাভও বেশি হচ্ছে।

চট্রগ্রামের ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, শহরে পাহাড়ের আগাম কাঁঠালের বেশ চাহিদা থাকায় শখের বসে অনেকে অর্ডার দিয়ে রাখেন। মাটিরাঙ্গার কাঁঠাল বেশ সুস্বাদু এবং বিষমুক্ত। তাই এর চাহিদাও বেশি।

মাটিরাঙ্গার কাঁঠাল বিক্রেতা মো. আবদুল খালেক জানান, মৌসুমের শুরুতেই বিভিন্ন বাগান ক্রয় করেন। পরে মে মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে বিক্রি করে থাকেন। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে।
মাটিরাঙ্গা বাজারের ইজারাদার মো. জসিম উদ্দিন জানান, এ মৌসুমে প্রতি সপ্তাহে এ বাজার থেকে কমপক্ষে ১০০ ট্রাক কাঁঠাল সমতলের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। যা থেকে মোটা অঙ্কের রাজস্ব আদায় করছে সরকার। এছাড়াও গাড়িতে কাঁঠাল লোড-আনলোডসহ অন্যান্য কাজে অন্তত দুইশ শ্রমিক নিয়োজিত থাকায় শ্রমিকদের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরেছে।

তবে খাগড়াছড়িতে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে হিমাগার প্রতিষ্ঠা করা গেলে চাষিরা তাদের উৎপাদিত ফল সংরক্ষণ করে আরও ভালো দাম পেতেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

মাটিরাঙ্গা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শেখ শাখাওয়াত হোসেন জানান, সাধারণত কাঁঠাল পাকা শুরু করে জুন থেকে, তবে এবার অগ্রিম কাঁঠালের ফলন হয়েছে বেশ। এতে করে কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়ে লাভবান হচ্ছেন।

 

আরও খবর

Sponsered content