চট্টগ্রাম

চাঁদপুরে লঞ্চ চলাচল শুরু: কর্মস্থলে ছুটছে আটকে পড়া মানুষ

  প্রতিনিধি ২৪ মে ২০২১ , ৫:৩৮:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ

মাহফুজুর রহমান, চাঁদপুরে :

গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ঈদের ছুটি শেষে রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ সহ বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার উদ্দ্যেশ্যে আটকা পড়া মানুষরা কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। এছাড়াও ঈদের ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে যারা গ্রামে এসেছিলেন তাদের পরিবারের সদস্যরাও এখন ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১৪ এপ্রিল থেকে চাঁদপুর থেকে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল। বিধিনিষেধ শিথিল করে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার (২৪ মে) সকাল ৬টা থেকে আগের শিডিউল অনুযায়ী চাঁদপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ রুটের ট্রাফিক সুপারভাইজার মাহমুদুল হাসান  বলেন- ‘এতদিনে লঞ্চ বন্ধ থাকায় এই রুটে কেউই যেতে পারেনি। তাই ঈদে বাড়িতে এসে আটকে পড়া যাত্রীদের সংখ্যা বেশিই লক্ষ্য করা গেছে। তবে ঘরমুখো যাত্রী নেই বললেই চলে’।

আবুল কাশেম নামের এক যাত্রী বলেন, ছুটি শেষ হয়েছে। কিন্তু গণপরিবহন বন্ধ থাকায় আটকে পড়েছিলাম। আজ গিয়েই কাজে যোগ দিতে হবে।

এদিকে লঞ্চ চলাচলের প্রথম দিনে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে যাত্রীদের বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। প্রত্যেক লঞ্চে যাত্রীদের আসন সীমিত রেখে ঢাকার উদ্দেশে এক ঘণ্টা পর পর চাঁদপুর ঘাট থেকে লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে।

চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা কায়সারুল ইসলাম বলেন, চাঁদপুর থেকে সকাল ৬টায় একটি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এরপর আগের শিডিউল অনুযায়ী সকল লঞ্চ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করছে। একটি সিট খালি রেখে যাত্রীদের বসানো হচ্ছে। লঞ্চে প্রবেশের আগে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে।

যাত্রীরা বলছেন, দীর্ঘ দিন পর লঞ্চ চালু হলো। লঞ্চ কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই যাত্রী উঠাচ্ছেন। আমরা চাই লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক থাক। সব থেকে বড় কথা হলো গণপরিবহন চালু করায় আমাদের দুর্ভোগ কমেছে।

লঞ্চ কতৃপক্ষ বলছে, সরকারি নির্দেশনা মেনেই ঘাট থেকে লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে। একটি আসন খালি রেখে যাত্রী বসানো হচ্ছে। লঞ্চের প্রবেশ পথে আমাদের স্টাফরা যাত্রীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করছেন। কোন যাত্রীকে মাস্ক ছাড়া লঞ্চে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না।

জানা যায়, সকাল ৬টায় চাঁদপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে লঞ্চ ছেড়ে গেছে। চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে ১৭টি বিলাসবহুল লঞ্চ চলাচল করে। এ ছাড়া ঢাকা-নারায়গঞ্জের মধ্যে রয়েছে ১৩টি ছোট লঞ্চ। সবগুলোই আগের শিডিউল অনুযায়ী চলবে।

চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, যাত্রীসেবা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে নৌ থানা পুলিশ ঘাটে অবস্থান করছে। দীর্ঘ দিন পর চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছেড়ে গেছে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চগুলো চাঁদপুর ঘাটে আসছে।

এদিকে, দীর্ঘদিন লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে যান চাঁদপুরের ছোট-বড় অর্ধশত লঞ্চের ৫ শতাধিক কর্মচারী । এসব কর্মচারীকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আড়াই হাজার টাকা করে প্রণোদনা দেওয়ার কথা থাকলেও কেউই এই প্রণোদনা পাননি বলে অভিযোগ ওঠে।

এই বন্ধে কয়েকজন লঞ্চমালিকদের পক্ষ থেকে সামান্য সহায়তা পেলেও অধিকাংশ লঞ্চমালিক ও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সুবিধা পাননি। তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে তাঁরা বেশ কষ্টে ছিলেন বলেও জানান অনেকেই।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর চাঁদপুরের উপপরিচালক কায়সারুল আলম জানান, ‘অধিকাংশ লঞ্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে আসে। এ জন্য লঞ্চ শ্রমিকদের প্রণোদনার টাকা ঢাকায় দেওয়া হচ্ছে। সেখানেই বিষয়টি তদারকি করা হচ্ছে। আমরা শুধু চাঁদপুরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ চলাচল করছে কি না, সেটি দেখছি।’

আরও খবর

Sponsered content