দেশজুড়ে

রাজশাহীতে দাম বেড়েছে আমের, কপাল খুলেছে ব্যবসায়ীদের

  প্রতিনিধি ৬ জুলাই ২০২১ , ৭:৪৩:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ

রফিকুল হাসান ফিরোজ, রাজশাহী :

মহামারি করোনা সংকোট এবং ক্রমান্বয় লকডাউনের কারনে ক’দিন আগেও ক্রেতাশূণ্য ছিল আমের বাজার। এতে অনলাইন ব্যাসায়ীদের মধ্যে অনেকটা জোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু হটাৎ করে বদলে গেছে আম বাজারের দৃশ্যপট।
এখন ৬শ টাকার লকনা বিক্রী হচ্ছে ১২শ টাকা মন, অপরদিকে ১১ শ’ টাকার আম্রপালি বিক্রী হচ্ছে ২ হাজার টাকা এবং ৮ শ টাকার ফজলী বিক্রী হচ্ছে ১৫ শ’ টাকা। ফলে কপাল খুলেছে ব্যবসায়ী এবং আম চাষীদের।

রাস্তার দুই ধারে সারি-সারি আম বাগান আর সুস্বাদু-বাহারি জাতের আমের কথা উঠলেই চলে আসে রাজশাহী অঞ্চলের নাম। এই জেলাকে আমের জন্য বিখ্যাত বলা হলেও মূলত আম প্রধান অঞ্চল হিসাবে খ্যাত রাজশাহীর বাঘা উপজেলা। এই জেলায় ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর আম বাগানের মধ্যে প্রায় অর্ধেক-অর্থাৎ ৮ হাজার ৫৭০ হেক্টর আম বাগান রয়েছে ঐতিহ্যবাহী বাঘা উপজেলায়।

মাটি গুনে এ উপজেলার আমকে দেশ বিখ্যাত আখ্যা দিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক ডিজি হামিদুল ইসলাম-সহ ঢাকা, নরসিংদি, ফরিদপুর , ভৈরব এবং বরিশালের আম ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, অন্য যে কোন এলাকার চেয়ে বাঘার আম স্বুসাধু এবং সমাদৃত এ কারনে এখান কার আমের চাহিদাও অনেক বেশী।

উপজেলা কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, বাঘার প্রধান অর্থকারী ফসল আম। প্রায় পাঁচশ বছর পূর্বে মুঘল আমলে নির্মিত বাঘার ঐহিহাসিক শাহী মসজিদের শিলা লিপিতেও এখানকার আমের ছবি দৃশ্যমান।

বাঘার সুধী মহলরা জানান, কয়েক দিন আগে অর্থাৎ গত সপ্তায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হওয়ায় আমের বাজারে ধ্বস নেমেছিল। এতে অনেকটা উৎকন্ঠা এবং হতাশায় ছিলেন এ অঞ্চলের আম ব্যবসায়ীরা। তারা ধরেই নিয়ে ছিলো এবার আমের ব্যবসায় তাদের বড় ধরনের লোকশান গুনতে হবে। কিন্তু বৃষ্টি বন্ধ হওয়ায় হটাৎ করে গত দু’তিনদিন ধরে আমা ব্যবসায় লাভের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন তাঁরা।

আমোদপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক ও বাগান মালিক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমানে কৃষকদের কাছে তেমন একটা আম নেই। তাঁরা ইতোমধ্যে বাগান চুক্তি আম বিক্রী করে দিয়েছেন। এখন এ অঞ্চলে যে পরিমান আম রয়েছে তা সবই ব্যবসায়ীদের। ক’দিন আগে তারা যতটুকু লোকশান গুনেছেন-বর্তমানে আমের বাজার যে অবস্থানে এসে দাড়িয়েছে তাতে করে এখন তারা লাভের মুখ দেখছেন।

বাঘার সবচেয়ে বড় আম ব্যবসায়ী মুক্তার আলী বলেন, বৃষ্টির কারনে আমের বাজার নিয়ে গত তিন-চারদিন আগেও চরাম হতাশায় ছিলাম। কিন্তু গত দু’দিনে আমের বাজার পূর্বের চেয়ে ডাবলে দাড়িয়েছে। এ থেকে আমরা এখন আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। তার মতে, বর্তমানে আমের বাজার যে অবস্থানে রয়েছে শেষ পর্যন্ত যদি এমনি ভাবে চলে তাহলে তারা লাভবান হবেন।

সার্বিক বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, এ বছর বাগানে প্রচুর পরিমান আম রয়েছে। কয়েক দিন আগে একটানা চার-পাঁদদিন বৃষ্টির কারনে ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে ছিলেন। তবে গত দুই-তিনদিন থেকে বাজারের আমের এখন যে ঊর্ধ্বগতি তাতে ব্যবসায়ীদের হতাশা কেটে গেছে। তাঁর মতে, ঈদুল আযহা’র পরে বাজারে আশ্বিনা আম নামবে। সেখানেও ব্যাপক লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content