প্রতিনিধি ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৫:৪৭:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ
ভোরের দর্পণ ডেস্ক:
বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ, করোনাভাইরাস নিয়ে অপপ্রচারের অভিযোগের মামলায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও লে. কর্নেল (অব.) আবদুল বাসেত খানের ত্যাজ্য পুত্র সামিউল ইসলাম খান ওরফে সায়ের জুলকারনাইন ওরফে সামিসহ সাতজনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছেন সাইবার ট্রাইব্যুনাল। আজ রোববার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামস জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
চার্জগঠন হওয়া মামলার অপর আসামিরা হলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, রাষ্ট্রচিন্তার মো. দিদারুল ইসলাম এবং সুইডিশ-বাংলাদেশের সাংবাদিক নেত্র নিউজ সম্পাদিক তাসনীম খলিল, ব্লগার আশিক মোহাম্মাদ ইমরান ও মো. ওয়াহিদুন-নবী।
শুনানিকালে জামিনে থাকা কার্টুনিস্ট কিশোর অনুপস্থিত থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আর মিনহাজ ও দিদার উপস্থিত ছিলেন। মামলার অপর আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
আসামিদের মধ্যে সামি আল-জাজিরা টেলিভিশনে সরকার প্রধান এবং সাবেক সেনা প্রধানকে নিয়ে প্রচারিত প্রতিবেদনে প্রধান চরিত্র ছিলেন।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা সিটিটিসি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আফসার আহমেদ গত বছর ১০ মে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এ মামলায় চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন।
এর আগে গত বছর ৪ ফেব্রুয়ারি মামলাটির পূর্বের তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহসীন সর্দার প্রথম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সেখানে কার্টুনিস্ট কিশোর ও রাষ্ট্রচিন্তার দিদারুল এবং লেখক মোস্তাককে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।
অন্যদিকে সামি ও মিনহাজ মান্নান, আশিক মোহাম্মাদ ইমরান, তাসনীম খলিল ও মো. ওয়াহিদুন-নবীসহ আটজনের অব্যাহতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু আল-জাজিরার প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর সামির অব্যাহতি পাওয়া নিয়ে সংবাদপত্রে আলোচনা-সমালোচনা হওয়ায় মামলাটি পরে অধিকতর তদন্তে পাঠানো হয়। অধিকতর তদন্ত শেষে সাতজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
আসামি সামি অবসর প্রাপ্ত লে. কর্ণেল আব্দুল বানেত খানের ছেলে। ২০০৬ সালের ২০ জুলাই র্যাব কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে রাজধানীর ফার্মগেটের এ জে টেলিকমিউনিকেশন থেকে ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার মোবাইল ফোন কিনে একটি ভুয়া চেক দেন সামি। একইভাবে প্রাইজ ক্লাব নামক একটি কম্পিউটার ফার্ম থেকে ল্যাপটপ কেনা নিয়েও প্রতারণা করেন।
চেক ডিজঅনারের অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-১ তাকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনার পর অনিয়ন্ত্রিত ও উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের জন্য সামিউলকে ত্যাজ্য করেন তার বাবা লে. কর্নেল (অব.) আবদুল বাসেত। ঠিক এর পরদিন কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসার পথে ২০০৬ সালের ২৩ জুলাই এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন বাসেত। সামির প্রকৃত নাম সামিউল আহমেদ খান। তবে তথ্য গোপন করে সামিউল তার নামে যে পাসপোর্ট করেন, সেখানে তার নাম দেওয়া হয় জুলকার সায়ের খান। এমনকি পাসপোর্টে বাবার নামও বদলে কর্নেল ওয়াসিত খান করেন।’
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৫ মে র্যাব-৩ এর ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবু বকর সিদ্দিক রমনা থানায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, মোস্তাক আহমেদ, দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া, মিনহাজ মান্নানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।
মামলায় তাদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, মহামারি করোনাভাইরাস সম্পর্কে গুজব, রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে তারা রাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন মর্মে অভিযোগ আনা হয়।