প্রতিনিধি ২৭ মে ২০২১ , ৭:২৩:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ
শুষ্ক মৌসুমে গাইবান্ধা নদ-নদীগুলো মরুভূমিতে পরিণত হয়। চরের বাসিন্দাদের পায়ে হেঁটেই পথ পাড়ি দিতে হয়। রোগী, কৃষিপণ্য বহনে অমানবিক কষ্ট সহ্য করতে হয় তাদের। এমন পরিস্থিতিতে গাইবান্ধা জেলার নদ-নদীগুলোতে পানি বাড়লে সীমাহীন আনন্দে ভাসে চরবাসী। বর্তমানে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে নতুন পানিতে ভাসছে ব্রহ্মপুত্র নদ, তিস্তা, যমুনা, ঘাঘট নদী। ফলে নৌ-চলাচলে প্রাণ ফিরেছে। প্রায় সবগুলো ঘাটেই এখন নৌকা ভিড়ছে। এতে চরবাসীর দুঃখ আগামী কয়েক মাসের জন্য শেষ হয়েছে।
এখন যমুনা পাড়ের নৌ-ঘাটগুলোতে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের আনাগোনা বেড়েছে এবং এরই মধ্যে জেলার নদ-নদীর নৌ-ঘাটগুলো ফিরে পেয়েছে কর্ম চাঞ্চল্যতাও। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে গাইবান্ধার বালাসী কাছে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে বৈশাখ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে। পানি বৃদ্ধি পেলেও বন্যার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। তবে কয়েকটি স্থানে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। কামারজানীতে দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর জানান, বুধবার ব্রহ্মপুত্র নদীতে পানির উচ্চতা ছিল ১০.৫৮ সে.মি.। এদিকে পানি বাড়ার কারণে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কুন্দরপাড়া, খাজানী, পাড়দিয়ারা, ডাকাতমারা, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বাদামের চর, হরিপুরের চর, উজান বুড়াইল, ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর, ফুলছড়ি, এরেন্ডাবাড়ীসহ প্রায় ১৬৫টি চর গ্রামের মানুষের এখন অনেকটাই নদী পথের যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।
প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে গাইবান্ধা ফুলছড়ি উপজেলার বালাসী নৌঘাট, ফুলছড়ি ঘাট, গাইবান্ধা সদরের কামারজানী নৌবন্দর, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন নৌ-ঘাটগুলো। কামারাজী ইউনিয়নের কুন্দরপাড়া চরের মাহফুজুর রহমান ডাবলু বলেন, এখন তো নদীপথে যোগাযোগ খুবই ভালো। এতে আমরা আমাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য হাট-বাজারে বিক্রি করতে পেরে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছি। তেমনি সহজে কৃষি কাজে ব্যবহার করার জন্য রাসায়নিক সার, শ্যালো মেশিনের যন্ত্রাংশসহ সহজে নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় করে বাড়িতে নিতে পারছি।
যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কর্মক্ষেত্রে চাঞ্চল্য ফিরে পাওয়া প্রসঙ্গে কামারজানী নৌঘাটের ইজারাদার মো. মহিউল ইসলাম বলেন, নদীপথে নৌ-চলাচলের গতি স্বাভাবিক হয়েছে। এতে শুধু চরের মানুষের যোগাযোগ সহজতর হয়নি, ফিরে পেয়েছে অনেক মানুষ কর্মসংস্থান। এই নদী পথকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে একদিকে যেমন অধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে, অন্যদিকে মহা-সড়কগুলোতে পরিবহনে যে যানজট সুষ্টি হয় তা বহুলাংশে কমে যাবে। কমে যাবে পরিবহন খরচও।