প্রতিনিধি ২১ জানুয়ারি ২০২৩ , ৮:৩৫:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ
ভোরের দর্পণ ডেস্ক :
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায় করানোটাই মূলত আমাদের প্রথম দফা। বর্তমানে দেশ যেভাবে চলছে সেভাবে চলতে পারে না। মনে রাখবেন, জনগণকে চাপাবাজি করে আর দমিয়ে রাখতে পারবেন না। আমরা দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে চাই। এজন্য ২৭ দফা প্রণয়ন করা হয়েছে। শহীদ জিয়াউর রহমান যে লক্ষ্যে বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন সেগুলো বর্তমান সরকার ধ্বংস করেছে।
তিনি বলেন, কোনো স্বৈরাচার সরকার আপসে ক্ষমতা ছেড়ে যায় না। তাদের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর বিকল্প নেই। অতীতে যেমন ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার এরশাদকে হটিয়েছে। তেমনই এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র যে এই সরকার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিদায় নেবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জিয়াউর রহমান নিজে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে প্রথমে বিদ্রোহ করেন। তার নেতৃত্বে দেশবাসী মুক্তিযুদ্ধ করেছিল। কিন্তু আজকের হাইব্রিড সরকার তাদের ব্যর্থতা ঢাকতে জিয়াউর রহমানকে পাকিস্তানের চর হিসেবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। অথচ বিদেশি গণমাধ্যমে এবং বিভিন্ন লেখকের বইয়ে জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটাকে বিকৃত করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ভুল ইতিহাস শেখাচ্ছে। সত্য কিন্তু কখনো চাপা থাকে না। ইতিহাস একদিন প্রতিষ্ঠিত হবেই।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান দুটি ক্রান্তিকালে জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। একটি ২৫ মার্চের পর আরেকটি ৭ নভেম্বর। আজকে ক্ষমতাসীনরা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বলে দাবি করে। অন্যদিকে, বিএনপি হলো মুক্তিযোদ্ধাদের দল। আওয়ামী লীগে কোনো খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা নেই। আমাদের দলে এখনো শাহজাহান ওমরের মতো খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা জীবিত আছেন। এগুলো তো জীবন্ত ইতিহাস।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, জিয়াউর রহমান বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীকে নিয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ প্রণয়ন করেন। তার ঘোষিত ১৯ দফা এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ‘ভিশন ২০৩০’ এর আলোকে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র নেই। বিএনপির ৬শর বেশি লোক গুম। এক হাজারের বেশি মানুষ খুন। খালেদা জিয়াকে বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।
জনগণের প্রতি এই জনবিচ্ছিন্ন সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। কোটি কোটি টাকা লুটে বিদেশে পাচার করেছে। দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের মুখে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানির দাম বেড়েছে। দেশের বিচারব্যবস্থা সরকারের নিয়ন্ত্রণে। দলীয় করণের মাধ্যমে তারা বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। এমতাবস্থায় তাদের বিদায় না দিলে দেশকে মেরামত করা যাবে না।
অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, আজকে আবারও দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করার প্রচেষ্টা প্রায় চূড়ান্ত। এর বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এর বিকল্প নেই।
ড্যাবের মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালাম বলেন, জিয়াউর রহমান নানা গুণে গুণান্বিত। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ও সফল রাষ্ট্রনায়ক। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা। তিনি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে অসংখ্য কাজ করেছেন। জাতি তাকে আজীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
সভাপতির বক্তব্যে ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ বলেন, জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা নিজ কানে শুনেছি। দেশের অসংখ্য মানুষ শুনেছে। তিনি দুইবার স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু সেই ইতিহাস বিকৃত করছে আওয়ামী লীগ। এভাবে জিয়াউর রহমানের ঘোষণার পর দেশব্যাপী মানুষ পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আজকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন হয়নি। এর চেয়ে বড় দুর্ভাগ্য আর কী হতে পারে?
এ ছাড়া ড্যাবের নেতা ডা. সিরাজুল ইসলাম, ডা. হাসনুল আলম শামীম, ডা. রেজাউল আলম নিপ্পন, ডা. মো. আবু নাসের, ডা. শহীদুল ইসলাম, ডা. মো. একরামুল রেজা টিপু, ডা. মো. গাজী শাহিনুর রহমান, ডা. মো. মুরাদ হোসেন, ডা. মো. আবু সায়েম, ডা. মশিউর রহমান কাজল, ডা. নিলোফা ইয়াসমিন, ডা. মো. আতিকুল আলম, ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, ডা. আশরাফুল হাসান মানিক, রুহুল আমিন খোকন, ডা. সাইফুল ইসলাম শাকিল, ডা. লাবিদ রহমান, ডা. আবু সাঈদ মুহিব্বুল্লাহ, ডা. পাভেল, ডা. মোতাহের, ডা. সায়মা আলী রন্তি, যুবদলের গোলাম মাওলা শাহিন, এ্যামট্যাবের দবির উদ্দিন তুষার, অনুষ্ঠানে ড্যাবের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।