আ’লীগের লোকেরাই আর নৌকায় ভোট দিতে চাচ্ছে না : জিএম কাদের

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

ইউনিয়ন পরিষদের চিত্র দেখলেই বোঝা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগের লোকেরাই আর নৌকায় ভোট দিতে চাচ্ছে না। আজ রোববার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, বিজয় দিবস ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এক সভায় এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন যারা আওয়ামী লীগ করে আসছে, তারা এখন আর আওয়ামী লীগ করতে চাচ্ছেন না। আবার বিএনপির অবস্থা আরও খারাপ। রাজনীতিতে তাদের অবস্থা খুবই হতাশাজনক। নেতৃত্ব নিয়েও বিএনপির নেতা-কর্মীরা হতাশাতাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। দেশের মানুষও বিএনপির ভবিষ্যত নিয়ে হতাশ।’

আওয়ামী লীগ নেতারাই বলেছিলেন, ‘১৯৯৬ সালের নির্বাচন ছিল আওয়ামী লীগের জন্য শেষ সুযোগ। জাতীয় পার্টির সমর্থন ছাড়া ক্ষমতায় যেতে না পারলে আওয়ামী লীগ শেষ হয়ে যেত। এদিকে মাত্র ১৩ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থেকে ইতিমধ্যেই বিএনপি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্তু দীর্ঘ ৩১ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থেকেও জাতীয় পার্টি রাজনীতির মাঠে টিকে আছে। জনগণের ভালোবাসা নিয়ে জাতীয় পার্টি দেশের মানুষের বুকে আস্থা সৃষ্টি করতে পেরেছে। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ আর বিএনপির পালাবদলের রাজনীতি দেখতে চায় না। দেশের মানুষ আগামী দিনে জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়।’

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সেন্টুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে স্বাধীনতার মূল চেতনা ধংস করেছে। বৈষম্যের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে গণআন্দোলন, স্বাধীকার আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছি। মুক্তিযুদ্ধে লাখ লাখ সাধারণ মানুষ জীবন দিয়েছিল একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশের আশায়। কিন্তু, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশের মানুষের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। সরকারি দল না করলে চাকরি মেলে না, ব্যবসা করতে পারে না। এক সময় পশ্চিম পাকিস্তান আমাদের সম্পদ লুট করেছে। এখন আমাদের দেশের মানুষ আমাদের সম্পদ লুট করছে। প্রতিবছর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশ হয়, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে। বিদেশি গণমাধ্যমের রিপোর্টে আমরা জানতে পারি আমাদের দেশের টাকা লুটের সংবাদ। দেশের গণমাধ্যম এমন সংবাদ প্রকাশ করতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা লুটের ঘটনাও আমরা বিদেশি একটি গণমাধ্যমের রিপোর্টে জানতে পেরেছিলাম। বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা লুটের ঘটনা কয়েক মাস গোপন রাখা হয়েছিল। আবার এই ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদনও জানতে পারেনি দেশের মানুষ।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সেন্টুর সভাপতিত্বে এবং শাহ আলী থানার সভাপতি মোঃ মাহফুজ মোল্লার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন- জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, কাফরুল থানার সভাপতি মোঃ শামসুল হক, হাতিরঝিল থানা আহ্বায়ক হাজী মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন সরকার প্রমুখ।