প্রতিনিধি ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৪:১৪:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে চাঁদের গাড়ি নামে পরিচিত জিপ গাড়ি কর্ণফুলীর নদীতে পড়ে গেছে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ২ টার দিকে কালুরঘাট সেতুতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানান চট্টগ্রাম সদরঘাট নৌ-থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. একরামুল হক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বোয়ালখালী থেকে যাত্রী নিয়ে শহরে যাওয়ার সময় চাঁদের গাড়ি নামে (জিপটি) কালুরঘাট সেতু পার হওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙ্গে কর্ণফুলীর নদীতে পড়ে যায়। গাড়িতে থাকা দুজনকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে। তবে গাড়িটি নদীর স্রোতের পানিতে তলিয়ে যায়।গাড়াটি আজ রোববার ১২ পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি নদীতে পড়ে যাওয়া দুজনের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি হলেন গাড়ি চালক মো. আলমগীর। অন্যজন গাড়ির সহকারী। তার নাম জানা যায়নি। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর কথা জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান বলেন, বোয়ালখালী থেকে একটি চাঁদের গাড়ি চট্টগ্রাম নগরের দিকে যাচ্ছিল। গাড়িটি সম্ভবত বোয়ালখালীতে কোনো পণ্য নিয়ে এসেছিল। পণ্য খালাস করে ফিরে যাচ্ছিল। রাতের বেলা সেতু ফাঁকা দেখে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন চালক। এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। ওই সময় ওখানে থাকা লোকজন গাড়িতে থাকা দুই ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করেন। আর নদীর স্রোত বেশি থাকায় গাড়ি উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. মেহেদী হাসান বলেন, সেতুর উপর গাড়ি চলাচল করার জন্য এখনো কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। আমরা এখনো সেতুটি রেলওয়েকে হস্তান্তর করেনি। এরপরও মানুষ জোর করে গাড়ি নিয়ে উঠে যায়। গতকাল শনিবার রাতেও এ ঘটনা ঘটেছে। তখন নিরাপত্তারক্ষীও কম থাকেন। আর চালক অনেক বেশি গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে গাড়ীটি নদীতে পড়ে গেছে। বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
উল্লেখ্য, ৯৩ বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতুতে শুরু থেকেই ট্রেন চলাচল করছে। সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় গত বছরের (১ আগস্ট) থেকে বড় ধরনের সংস্কারকাজ শুরু করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এই সংস্কারকাজ করছে। পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একদল বিশেষজ্ঞ। সেতুর সংস্কারকাজ শুরুর পর ট্রেন ও গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। আর বিকল্প হিসেবে ফেরি দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। বর্তমানে সেতুর কাজ শেষ পর্যায়ে।