বাংলাদেশ

কে কাকে কোথায় টাকা দিচ্ছেন, সে তথ্য আছে: কাদের

  প্রতিনিধি ১২ এপ্রিল ২০২২ , ৭:১৪:৩৮ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্কঃ

নিজেদের দুর্নীতি আড়াল করতেই বিএনপি নেতারা দুদকে গিয়ে মহড়া দিয়েছেন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘কে কাকে কোথায় টাকা দিচ্ছেন, সেসব তথ্য সরকারের কাছে আছে’

মঙ্গলবার সরকারি বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) গিয়ে বিএনপি নেতাদের চিঠি দেওয়ার সমালোচনা করে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “কর্মী-সমর্থকদের রোষানল থেকে বাঁচতেই বিএনপি নেতারা দুর্নীতির তথ্য প্রদানের নামে নাটকীয়তার আশ্রয় নিচ্ছে। তা নিজেদের দুর্নীতি ও ব্যর্থতা আড়ালের অপচেষ্টা মাত্র।”

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে কিছু হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেন তিনি।

“অনেক তথ্যই সরকারের কাছে আছে, কে কোথায় সভা করছে, কাকে টাকা দিচ্ছে, এমনকি সরকারের বিরোধিতার নামে রাষ্ট্রবিরোধী কাজে উস্কানির জন্য দুর্নীতিলব্ধ অর্থ বিনিয়োগ করা হচ্ছে।

“কারা কর ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করে আবার দুর্নীতিবাজ নেতৃত্বের জন্য অবৈধ উপায়ে অর্থ প্রেরণ করছে, সব খবরই সরকারের কাছে আছে।”

গত সোমবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোজাজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ক্ষমতাসীন দল এবং সরকারের ‘দুর্নীতি’ তদন্তের দাবি জানিয়ে সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে গিয়ে চিঠি দেয়।

চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের একটি ‘ফোনালাপ’ ফাঁস হওয়ার ঘটনা ছাড়াও আরও একটি অভিযোগ করা হয়।

এ চিঠির প্রসঙ্গে দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারি দলের বিরুদ্ধেও দুদকের কাজ করতে কোনো বাধা ছিল না এবং এখনও নেই।

“বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানসহ তাদের অনেক নেতার বিরুদ্ধে দুদকে যে তথ্য বা অভিযোগ আছে সে ব্যাপারেও দুদক তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে। বিএনপির চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে অন্য যে অভিযোগ আছে সুগুলোরও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার করার আহ্বানও রাখেন তিনি।

“মির্জা ফখরুল সাহেব, নিজ দলের অপরাধী, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আপনাদের অবস্থান কী? সাহস থাকলে তাদের তালিকা দিন। বিদেশে বিলাসী জীবনের রসদ কোথা থেকে আসছে তার হিসাব জমা দিন।”

“সর্ষের মধ্যে ভূত রেখে ভূত তাড়ানোর এসব লোক দেখানো অপপ্রয়াস অপরাজনীতিরই ধারাবাহিকতা মাত্র,” যোগ করেন তিনি।

সড়ক ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “যে দলের চেয়ারপারসন দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি এবং দলীয় গঠনতন্ত্র থেকে যে দল দুর্নীতিবিরোধী ৭ ধারা অপসারণ করে, যারা আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দল হিসেবে নিজেদের পরিচিত করেছে, যাদের শাসনামলে দেশকে পরপর ৫ বার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কলঙ্কতিলক পরতে হয়েছিল, সেই আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত বিএনপি যখন দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে তখন মানুষের হাসি পায়।

“আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দলের এমন মুখরোচক কথার নৈতিক মানদণ্ড নিয়েও মানুষ পরিহাস করে।”

তারেক রহমানের অর্থ পাচারের তথ্য তুলে ধরে কাদের বলেন, “তারেক রহমান ও তার ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াসউদ্দিন আল মামুন সিটিএনএ ব্যাংকে ২১ কোটি টাকা পাচার করে। এফবিআই এ ব্যাপারে তদন্ত করেছে এবং বাংলাদেশের আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে। শুধু তাই নয় লন্ডনের একটি ব্যাংকে প্রায় ছয় কোটি টাকা পাওয়া যায় তার ব্যাংক হিসেবে।

“বেলজিয়ামে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার, মালয়েশিয়ায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন, দুবাইয়ের এমিরিটাস হিলসে স্প্রিং-১৪ নামের কয়েক মিলিয়ন ডলার মূল্যের বাড়ির মালিক হয়েছিল জিয়া পরিবার। ভাঙ্গা সুটকেসের গল্প ততদিনে লঞ্চ, টেক্সটাইল মিল, বিদেশে বাড়ি আর ব্যাংক ব্যালেন্সের নিচে চাপা পড়ে গেছে, অথচ তারাই এখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় বড় কথা বলে!”

অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শূন্য সহিষ্ণুতা নীতিতে অটল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যে যত বড় নেতাই হোক, অনিয়মের অভিযোগ পেলে এমপি-মন্ত্রী কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি।“

আরও খবর

Sponsered content

Powered by