প্রতিনিধি ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ , ৭:৩২:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রামের চন্দনাইশে একটি ঝুঁকিপূর্ণ স্টিল ব্রিজ কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষের কাছে। যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে প্রাণহানির মত ঘটনা। অথচ সেই বিষয়ে কারো মাথাব্যাথা নেই। চন্দনাইশ পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের আবদুল বারী হাট এলাকায় বরুমতি খালের ওপর স্থাপিত স্টিল ব্রিজটির নিচের অংশের মাটি সরে গিয়ে ব্রিজের মধ্যাংশের পিলারটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্রিজটির পাটাতনগুলো জং ধরে নষ্ট হয়ে পড়ায় যানবাহন চলাচলে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। যেকোন সময় প্রাণহানির মতো বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, নতুন ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে সড়ক বিভাগ কর্তৃপক্ষ নিরব ভূমিকা পালণ করছে।
জানা যায়, চন্দনাইশ পৌরসভার আবদুল বারী হাট এলাকায় স্টিল ব্রিজটি এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার জন্য ১৯৮২ সালে সড়ক বিভাগ অস্থায়ীভাবে নির্মাণ করেছিল। কিন্তু দীর্ঘ ৪৩ বছর অতিবাহিত হলেও ব্রিজটি অস্থায়ী থেকে যায়, পূর্ণাঙ্গ ব্রিজে রূপ নেয়নি। যদিও পূর্ণাঙ্গ ব্রিজ নির্মাণের জন্যই স্টিল ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছিল। অজানা কারণে ব্রিজটি আর পূর্ণাঙ্গ ব্রিজের রূপ দেয়া হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রিজটির দৈর্ঘ্য বেশী না হলেও তিনটি ভাগে স্প্যানগুলি স্থাপন করা হয়েছে। স্প্যানগুলি জং ধরে ভেঙে গেছে। ব্রিজের নিচের অংশের মাটি সরে গিয়ে ব্রিজের মধ্যাংশের পিলারটিও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্রিজ পারাপারের সময় যানবাহনগুলো যেকোন সময় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারে বলে অভিজ্ঞ মহল মন্তব্য করেছেন। স্প্যানগুলি ভেঙে যাওয়ার কারণে ভারী যানবাহনের চালকেরা চলাচলের সময় আতঙ্কে থাকেন।
এব্রিজের সাথে সংযুক্ত হয়েছে বাগিচাহাট-উপজেলা সড়ক, গাছবাড়ীয়া-আবদুল বারী হাট সড়ক, ভগবান চৌধুরী হাট-আবদুল বারী হাট সড়ক। চারটি সড়কের সংযোগস্থল এ ব্রিজটি জরুরিভাবে পূর্ণাঙ্গ ব্রিজে রূপ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতন জনগণ। এ সড়কে হাশিমপুর, সাতবাড়ীয়া, বৈলতলীর অধিকাংশ লোকজন বিভিন্ন প্রশাসনিক ও ব্যক্তিগত কাজে চন্দনাইশ উপজেলা সদরে আসেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অবহেলার কারণে ব্রিজটি পূর্ণাঙ্গ ব্রিজে রূপ দেয়া হচ্ছে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। ব্রিজটির দায়িত্ব চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের।
সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ সকল ব্রিজ সাধারণত এক থেকে দেড় বছরের জন্য অস্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ ব্রিজ নির্মাণের মধ্য দিয়ে স্টিল ব্রিজের কাজ সমাপ্ত হয়। এছাড়াও স্টিল ব্রিজ দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করা নিষেধ। বর্তমানে ব্রিজের পাটাতনগুলো সম্পূর্ণ জং ধরে যাওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। যেকোন সময় সড়ক দুর্ঘটনাসহ ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল জনসাধারণের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, “ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি রিপ্লেস করে পিএনপি সেতু মেজর এর আওতায় নতুন সেতু নির্মাণের জন্য প্রধান কার্যালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। সেটি পাশ হলে দ্রুততম সময়ে নির্মাণ কাজ শুরু হবে। সেতুটি দিয়ে যাতে ভারী যানবাহন চলাচল না করে সেজন্য স্থানীয় জনসাধারণকে ভূমিকা রাখতে হবে।”