খুলনা

ঝিনাইদহের ফুলের রাজ্যে আবার করোনার থাবা, সৌন্দর্যের গোলাপ-গাঁদা খাচ্ছে গরু ছাগলে

  প্রতিনিধি ২০ এপ্রিল ২০২১ , ৭:৪০:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ

মোমিনুর রহমান মন্টু, ঝিনাইদহ:

তিন বিঘা জমিতে গাঁদা আর দুই বিঘা জমিতে রজনী গন্ধা ফুলের চাষ করেছিলেন হোসেন আলী। প্রায় লক্ষাধিক টাকা খরচ ক্ষেতে সবে মাত্র ফুল উঠা শুরু করেছিল।

সপ্তাহে গড় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার ফুল বিক্রিও করছিলেন। এভাবেই আরো তিন মাস ফুল বিক্রি করা যেত কিন্তু করোনাকালীন লকডাউনে সব বন্ধ হয়ে গেছে। ফুলচাষী হোসেন আলীর বাড়ি ঝিনাইদহের ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের শাহপুর ঘিঘাটি গ্রামে। হোসেন আলী চলমান লকডাউনে ফুল বিক্রি করতে না পেরে দুই বিঘা গাঁদা ও এক বিঘা জমির রজনী গন্ধা ফুলের জমি চাষ করে দিয়েছেন।

করোনার এ আবহাওয়া কবে স্বাভাবিক হবে তা অনিশ্চিত জেনেই অধিকাংশ জমির ফুল তুলে দিয়েছেন। একইভাবে দুই বিঘা জমিতে গাঁদা ফুলের চাষ করেছিলেন কৃষক আনোয়ার হোসেন। এক সপ্তাহ হলো ফুল বেচাকেনা বন্ধ। ফলে জমিতেই ফুল নষ্ট হচ্ছে। এদিকে ফুল তুলে ফেলে না দিলে গাছ মরে যাচ্ছে। গাছ থেকে একবার ফুল তুলে ফেলে দিতে প্রায় চার হাজার টাকা খরচ হয়। এক সপ্তাহে একবার ক্ষেত থেকে ফুল তুলে ফেলে দিয়েছেন। এদিকে কবে ফুলের বাজার শুরু হবে তাও অনিশ্চিত।

পকেটের টাকা খরচ করে এভাবে ফুলগাছ বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব না। তাই বাধ্য হয়ে এখন ফুল গাছ তুলে ফেলে দিতে হচ্চে। এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে করোনা ভাইরাসের কারনে। এ ভাইরাসের কারনে ১৪ এপ্রিল থেকে সারাদেশে চলছে সর্বাত্বক লকডাউন। ফলে দেশের সব ফুলের বাজার বন্ধ হয়ে গেছে। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের শাহপুর ঘিঘাটি গ্রামের ফুলচাষি আনোয়ার হোসেন আরো জানায়, এ বছর প্রায় ৭০ হাজার টাক খরচ করে এই চাষ করেছিলাম। যা করোনার কারনে সবই মাটি হয়ে গেল। এভাবেই বলছিলেন একই রকম অবস্থা জেলার হাজার হাজার ফুলচাষির। এবছর ঝিনাইদহের ছয় উপজেলায় ১৭৩ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়েছিল।

এরমধ্যে গাঁদা ১১৩ ও রজনী ২৪ হেক্টর বাকি জমিতে অন্যান্য ফুলের চাষ হয়েছে। গেল বছর এ জেলায় চাষ হয়েছিল ২৪৫ হেক্টর। প্রতিবছর সব থেকে বেশি ফুলের চাষ হয় জেলা সদর উপজেলার গান্না ও কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে। গেল ২০২০ সালের মার্চে দেশের করোনার সংক্রমন ধরা পড়ার পর দেশে অঘোষিত লকডাউন শুরু হয়।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by