ঢাকা

পাংশায় অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই নেই শহীদ মিনার

  প্রতিনিধি ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৬:১৩:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ

 

রতন মাহমুদ (পাংশা রাজবাড়ী প্রতিনিধি):

রাজবাড়ীর পাংশায় অধিকাংশ সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নেই শহীদ মিনার। ফলে ২১ শে ফেব্রুয়ারীতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারে না অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা। সরকারি ভাবে শহীদ মিনার নির্মানের দাবি শিক্ষকদের।

প্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার না থাকায় শহীদ দিবস ও মাতৃভাষা দিবস পালনে বিপাকে পরেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষা দিবসের গুরুর্ত্ব সম্পর্কে অকেবহাল নয়। শহীদ মিনার না থাকায় অনেক বিদ্যালয়ে পালন করা হয়না শহীদ দিবস। কিছু সংক্ষক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে গিয়ে অন্য বিদ্যালয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাও নিবেদন করতে হয় শিক্ষার্থীদের।

ইউনিয়ন পর্যায়ের একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা বাস্তবে শহীদ মিনার দেখি নাই। শুধু বইতে দেখেছি। আমাদের আশেপাশের বিদ্যালয় গুলোতেও শহীদ মিনার নাই। আমরা ছোট মানুষ বাড়ী দুরে কোথাও যেতে দেয় না। একারনে আমারা কখনো শহীদ মিনারে ফুল দিতে যেতে পারিনা। আমাদের বিদ্যালয়ে একটি শহীদ মিনার থাকলে আমার ২১ শে ফেব্রুয়ারীতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ফুল দিতে পারতাম।

শহীদ মিনার না থাকা একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা বলেন, বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকার জন্য শিক্ষার্থীদের অজানা থেকে যাচ্ছে ২১ ফেব্রুয়ারী কি? শহীদ মিনার থাকলে তাদের বাস্তবে জানানো বা বুঝানো যেতো ২১ শে ফেব্রুয়ারীর তাৎপর্য। এজন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে একটি করে শহীদ মিনার স্থাপন করা দরকার। বিগত দিনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেখা গিয়েছে কলাগাছ দিয়ে শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার নির্মান করে সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে।

বাংলাদেশ প্রথমিক শিক্ষা সমিতি পাংশা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ জহুরুল হক বলেন, শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সরকারি বরাদ্দ না থাকলেও বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার নির্মাণ করার নির্দেশনা রয়েছে। তবে বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার না থাকায় শহীদ দিবস ও মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য সম্পর্কে সম্পর্কে জানতে আগ্রহী নয়। শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ের জন্য সরকারি বরাদ্দ দেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

পাংশা সরকারি জর্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশিদা খাতুন। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানটি সরকারি করণের আগ থেকেই পাংশা সরকারি কলেজে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে থাকি। কয়েক বছর হয়ে গেছে আমাদের প্রতিষ্ঠানটি সরকারি হয়েছে। এখন অন্তত শহীদ মিনার নির্মানের জন্য সরকারি বরাদ্দ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

পাংশা উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, পাংশা উপজেলাতে সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা সহ প্রায় ২০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ বলেন, মাধ্যমিক, নিম্নমাধ্যমিক মাদ্রাসা ও কলেজসহ ৭০টি অধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে কয়টি প্রতিষ্ঠান শহীদ মিনার রয়েছে তা বলতে পারেননি তিনি।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কে এম নজরুল ইসলাম জানান, উপজেলায় সর্বমোট ১২১ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে এর মধ্যে ৭টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। যে সকল বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই তার তালিকা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। অচিরেই প্রতিটি বিদ্যালয়ে মিনি শহীদ মিনার তৈরি করা হবে।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by