রাজশাহী

পাবনায় যমুনার পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপরে

  প্রতিনিধি ১ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৫:২০:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ

উজানের ঢল আর টানা বৃষ্টিতে পাবনায় যমুনা নদীর পানি এক দিনের ব্যবধানে দ্বিগুণ বেড়েছে। এতে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় উঠতি নানা ফসল ও সবজির ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় কোটি কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি কৃষি বিভাগের।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উত্তরাঞ্চলীয় নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ হাসান  জানান, বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) বেলা আড়াইটায় যমুনা নদীর পানি বেড়ে নগরবাড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর পদ্মা নদীর পানি পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং বড়াল নদের পানি কিছুটা বেড়ে বড়াল ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে নগরবাড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এক দিনের ব্যবধানে পানি দ্বিগুণ বাড়ায় জেলাজুড়ে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে কৃষি দপ্তরের ভাষ্যমতে, পাবনা সদর, ঈশ্বরদী, বেড়া, সুজানগরসহ কয়েকটি উপজেলার নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে সবজি ও ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। কোটি কোটি টাকার ফসল ও সবজির ক্ষতির সম্মুখীন চাষিরা। অন্যদিকে কিছু স্থানে পানি প্রবেশ করায় জনসাধারণের বাড়তি ভোগান্তি যোগ হয়েছে প্রাত্যহিক জীবনে। কিছু স্থানে নদীতে ভাঙন ও পানিবৃদ্ধির ফলে নদীতীরবর্তী মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ও আসবাব সড়িয়ে অন্যত্র নিচ্ছেন।

সদরের বলরামপুরে পদ্মার তীরে বসবাস করা মকসেদ আলী বলেন, প্রতিবার বর্ষার সময়ে পদ্মা ও যমুনা নদী ভয়াল রূপ ধারণ করে আমাদের ভয় দেখায়। রাতের আঁধারে আমাদের জায়গা-জমি, বাড়ি-ঘর নদীতে হারিয়ে যায়।

ইতোমধ্যে বেড়া উপজেলার হাটুরিয়া, নাকালিয়া, সুজানগরের নাজিরগঞ্জ, সাতবাড়িয়া, মালিফা, ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা, সাড়া ও পাকশী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম ভাঙনের শিকার হয়েছে। পাশাপাশি নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। ক্ষতি হয়েছে উঠতি ফসল ও সবজি ক্ষেতের।

এ ছাড়া পাবনা সদরের আশ্রতোষপুর, বলরামপুর ও রানীনগর ভাঙনকবলিত এলাকা। পানিবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ওই সব এলাকায় পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বলেন, আমাদের জেলায় শুধু চরাঞ্চলের জমিগুলোতে পানিতে তলিয়ে গেছে। উঁচু জমির ফসল সবজির তেমন ক্ষতি হয়নি। প্রায় আট কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

পাবনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তরের কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, বন্যা-পানি বৃদ্ধি বা ভাঙনের চিত্রটা এখনো ত্রাণ দেওয়ার মতো নয়। শুধু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মানুষ যার যার বাড়িতেই অবস্থান করছে বলে তিনি দাবি করেন। তবে সরকারি ত্রাণসহায়তার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। বরাদ্দ সাপেক্ষে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার আওতায় আনা হবে।

Powered by