দেশজুড়ে

পীরগাছায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে কৃষকের সফলতা

  প্রতিনিধি ২১ নভেম্বর ২০২১ , ৬:৩৮:০৭ প্রিন্ট সংস্করণ

ফজলুর রহমান, পীরগাছা (রংপুর) : গ্রীষ্মকালীন নাসির রেড এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষে সফলতা পেয়েছেন রংপুরের পীরগাছার প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা। উপজেলা কৃষি বিভাগের উদ্যোগে ২০২১-২২ অর্থ বছরের কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের ফলন ভালো হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে উত্তোলনের লক্ষে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ৫শ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর ধারবাহিকতায় পীরগাছা উপজেলায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৫০টি প্রদর্শনী করা হয়। এসব প্রদর্শনীতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আশানুরুপ ফলন হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা বেশ খুশি।

নতুন এ কার্যক্রমটি সারা দেশের ন্যায় পীরগাছা উপজেলায় পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের জন্য ৫০ টি প্রদর্শণী করা হয়। প্রতি কৃষককে জমি চাষ ও সার প্রয়োগ বাবদ ২ হাজার ৮শ টাকা প্রদান করা হয়। স্থানীয় কৃষক আব্দুল কাদের ১০ শতাংশ জমিতে নাসির রেড এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষ করেছেন। মাত্র ৭০ দিনেই ভালো ফলন হওয়ায় তা উত্তোলন করা হয়।

গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের খেত গত বৃহস্পতিবার পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শামসুল আরেফীন ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আলম। গত ১৫ নভেম্বর কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মিজানুর রহমান, রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক তৌহিদুর রহমান এবং রংপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের খেত পরিদর্শন করেন।

এছাড়া গত শনিবার উপজেলার তালুকইশাদ গ্রামের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের ক্ষেত পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্নসচিব আব্দুর রহিম, রংপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (উদ্যান) শামীমুর রহমান।

স্থানীয় কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, প্রথমে নিজেও বিশ্বাস করতে পারিনি অসময়ে পেঁয়াজের চাষ হবে। তারপরেও কৃষি বিভাগের লোকজনের কথায় জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করলাম। অসময়ে আবাদ করেও অনেক ভাল পেঁয়াজ হয়েছে।

শুধু আব্দুল কাদের নয়, তার পেঁয়াজ চাষে সাফল্য দেখে আশেপাশের কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তারাও আগামীতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন। একই এলাকার কৃষক আব্দুল মতিন বলেন, গ্রীষ্মকালে যে পেঁয়াজ চাষ করা যায় তা কেউ বিশ্বাস করেনি। পেঁয়াজ সাধারণত শীতকালে চাষ হয়। এখন নিজের চোখে দেখলাম অনেক ভাল ফলন হয়েছে।

উপজেলার তালুকইশাদ ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন জানান, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ ভালো করার জন্য কৃষককে নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করেছি। আশানুরুপ ভালোা ফলন ও পেঁয়াজের ভালো দাম তাই কৃষক অনেক খুশি।

পীরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আলম জানান, খরা ও অতিবৃষ্টিসহ বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্বেও কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় পীরগাছায় প্রথম গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উত্তোলন করা হয়েছে। ফলনও ভাল হয়েছে। তিনি আরো বলেন, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদনে উপজেলায় যুগান্তকারী এক পরিবর্তনের মাইলফলক স্পর্শ করেছে। এবার লাভ ও ফলনে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ বেড়েছে। আগামীতে আরও বেশি পরিমাণ জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন হবে বলে আশা করি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by