প্রতিনিধি ৯ জুন ২০২১ , ৪:৫২:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ
বগুড়ার জেলা প্রশসাক জিয়াউল হক মোবাইলে বুধবার (৯ জন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিঠি প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ফুলগাছ খাওয়ার অভিযোগ গত ১৭ মে ইউএনও একটি ছাগলের ২ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা করার ৯ দিন পর মালিক সাহারা বেগমকে না জানিয়ে সেটি বিক্রি করার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে আসলে গত ২৭ মে জরিমানার টাকা ইউএনও নিজে ফেরত দিয়ে ছাগলটিকে সাহারা বেগমের কাছে ফিরিয়ে দেন।
এরপর ইউএনও বলেছিলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান, স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ওই নারীকে ছাগল ফেরত দেওয়া হয়েছে। জরিমানার টাকা আমি দিয়েছি। তাকে সংশোধনের জন্য জরিমানা করেছিলাম, শাস্তি দেওয়ার জন্য নয়।’
আর সেই নারী ছাগল বিক্রি করে দেওয়ার যে অভিযোগ করেছেন, সেটি সত্য নয় বলে দাবি করেন ইউএনও। তিনি বলেন, ছাগলটি একজনের জিম্মায় দেওয়া হয়েছিল।
এ ঘটনার দেশজুড়ে তোলপার হওয়ার পর তার বদলির আদেশ বগুড়ায় এসে পৌঁছেছে।
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক বলেন, ‘ওই ইউএনও বদলি হয়েছেন। তাকে স্থানীয় সরকার বিভাগে বদলি করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি মঙ্গলবার এসেছে। তবে ওই ভ্রাম্যমাণ আদালতের কোনো বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয় ঠিক নয়। তবে ওই ভ্রাম্যমাণ আদালতের কোনো বিষয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয় ঠিক নয়। এটা নিয়মিত বদলি বলা যায়।’
উল্লেখ্য, গত ১৭ মে উপজেলা পরিষদের ফুলগাছ খেয়ে ফেলেছিল সাহারা বেগমের একটি ছাগল। এজন্য ছাগলটিকে আটক করে ইউএনও জরিমানা করেন দুই হাজার টাকা।
ছাগলের মালিক তখন ঘটনাস্থলে ছিলেন না। পশুর পক্ষে তো জরিমানা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই মালিককে চাপ দিতে আটক করা হয় সেই ছাগল।
ইউএনও সীমা শারমিন জানান, উপজেলা চত্বরে একটি পার্ক করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে ফুলের গাছ নিয়ে এসে লাগানো হয়েছে। কিন্তু এখানে ওই ছাগল এসে গাছের ফুলগুলো খেয়ে নিয়েছে কয়েকবার। এ বিষয়ে ছাগলের মালিককে সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ কারণে গণ-উপদ্রব আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ছাগলের মালিক সাহারা বেগম জানান, ছাগলকে খুজে না পাওয়ায় তিনি ইউএনওর বাসার পাশে গিয়ে এক নিরাপত্তাকর্মীকে ছাগলকে ঘাস খাওয়াতে দেখেন। এ সময় ছাগল ফেরত চাইলে দেওয়া যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন ওই নিরাপত্তাকর্মী।
পরে তিনি ইউএনওর কাছে গেলে তিনি তাকে বলেন, ‘ফুলগাছের পাতা খাওয়ার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা দিয়ে ছাগল নিয়ে যান।’ কিন্তু ছাগল ফুলগাছ খাওয়ায় দুই হাজার টাকা দিতে রাজি হননি তিনি।
পরে ২২ মে তার ছাগলটি পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। এ থেকে জরিমানা বাবদ দুই হাজার টাকা কেটে রাখা হয়েছে। বাকি টাকা যেন নিয়ে আসেন। তবে সাহারা বেগম সেই টাকা আর দেননি। স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান বিষয়টি মধ্যস্থতা করে ছাগল ফেরত দেন।