চট্টগ্রাম

ফুলঝাড়ুতে স্বপ্ন দেখেছে পাহাড়ের মানুষ

  প্রতিনিধি ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ৮:৩৬:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ

মো. ইব্রাহিম শেখ, পার্বত্য চট্টগ্রাম:

খাগড়াছড়ির পাহাড়ে উৎপন্ন ফুলঝাড়ু– বিক্রি করে ভাগ্যবদলের চেষ্টা করছে খাগড়াছড়ির দরিদ্র ও শ্রমজীবী পরিবারগুলো। এ ফুলঝাড়ু– দরিদ্র মানুষের আর্থিক সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হয়ে উঠেছে, স্বল্প সময়ের জন্য হলেও ফুলঝাড়– শ্রমজীবী মানুষকে এনে দিয়েছে কর্মসংস্থান। আর এ ঝাড়ু– এখন স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের নানা প্রান্তসহ বিদেশেও যাচ্ছে। ঘরদোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজে জুড়ি নেই পাহাড়ি ফুলঝাড়ুর। গ্রামগঞ্জ থেকে শুরু করে শহর বন্দরের প্রায় সর্বত্রই রয়েছে এর কদর। জানুয়ারি-এপ্রিল খাগড়াছড়ির বিভিন্ন পাহাড় থেকে স্থানীয় নারী ও পুরুষরা এ ফুলঝাড়– সংগ্রহ করে বাজারে নিয়ে আসে বিক্রির উদ্দেশ্যে। জুমে উৎপাদিত বিভিন্ন প্রকার কৃষি পণ্যের সঙ্গে এই ফুলঝাড়– হয়ে ওঠেছে তাদের বাড়তি উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম।

এদিকে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো এই ফুলঝাড়ুর ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষজন। এ কাজে নিয়োজিত শ্রমিক আবুবকর বলেন, প্রতিবছরই আমরা এই দুই-তিন মাস ফুলঝাড়ুর কাজে জড়িত হই এবং দৈনিক ৫০০ টাকা বেতনে কাজ করি। শ্রমিক আবু বকর আরো বলেন, এই মৌসুমটা আমাদের জন্য অত্যন্ত ভালো, কেননা এই দুই-তিন মাস (জানুয়ারী-এপ্রিল) আমাদের প্রতিদিনই কাজ করতে হয়, আর টাকাও ভালো পাওয়া যায়।

এদিকে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন এলাকার পাহাড়ের ঢালে প্রাকৃতিক ভাবে জন্মানো এই ফুলঝাড়ু এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশর নানা প্রান্তে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি বিদেশে ও হচ্ছে রপ্তানি। তাছাড়া ফুলঝাড়ু সংগ্রহ ও বিক্রি করে বাড়তি উপার্জন করতে পেরে খুশি ব্যবসায়ীরা। খাগড়াছড়ির ফুলঝাড়– ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা প্রতি বছরই এ ফুলঝাড়ুর ব্যবসা করে থাকি। এই ব্যবসা করে আমাদের সংসার বেশ ভালো চলে। আমরা প্রথমে পাহাড় থেকে বিভিন্নজনের কাছ থেকে এই ফুলঝাড়ু সংগ্রহ করি, তারপর সব এক জায়গায় সংগ্রহ করে শুকিয়ে আটি বেঁধে ট্রাকে করে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করি।

খাগড়াছড়ির সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুন্সি রশিদ আহাম্মেদ বলেন, এ ফুল ঝাড়ুর সঠিক তথ্য কোনো বিভাগের কাছে নেই। প্রতিবছর এ সময়ের দুই-তিনমাস খাগড়াছড়ির কয়েকজন ব্যবসায়ী খাগড়াছড়ির থেকে এই ফুলঝাড়ু দেশের নানান প্রান্তে সরবরাহ করে লাভবান হয়। খাগড়াছড়ির বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সারওয়ার আলম বলেন, এ শুকনো মৌসুমে খাগড়াছড়ির ফুলঝাড়ু দেখা মেলে। প্রাকৃতিগতভাবে এ ফুলঝাড়ু উৎপাদিত হয়।

বন কর্মকর্তা মো. সারওয়ার আলম আরো বলেন, খাগড়াছড়ির থেকে এ ঝাড়ু পরিবহন করে ঢাকা ও চট্টগ্রামে নেওয়া হয়। আর এই পরিবহনের অনুমতি জন্য সরকারিভাবে আমরা রাজস্বগ্রহণ করে থাকি। তিনি আরো বলেন, প্রতি ফুলঝাড়ুর ব্রোম ৩৫ পয়সা করে রাজস্ব সরকারের ফান্ডে জমা হয়। যার হিসেবে প্রতিটি ট্রাকে আমরা ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা পর্যন্ত রাজস্ব সরকারের তহবিলে জমা দিচ্ছি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by