দেশজুড়ে

বান্দরবানে বন্যায় সড়ক ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে

  প্রতিনিধি ১৫ আগস্ট ২০২৩ , ৪:৩৬:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ

বান্দরবানে বন্যায় বন্যায় সড়ক ব্যবস্থার ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতের কারনে বান্দরবান জেলা সদরের সাথে জেলার প্রায় সবগুলো উপজেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সড়কের উপর পাহাড় ধস, সড়কের দুই পাশের মাটি সরে গিয়ে মাঝে বৃহৎ আকারের ফাটল, সড়কের পাশে মাটি সরে গিয়ে রাস্তার একপাশ পুরোপুরি ধসে যাওয়ার এমন সব দৃশ্য চোখে পড়বে জেলার লামা সুয়ালক সড়ক,হলুদিয়া ভাগ্যকুল সড়ক,থানচি বলিপাড়া সড়ক,রুমা পলিকা পাড়া সড়ক,আলীকদম টু দোছড়ি সড়ক,নাইক্ষ্যংছড়ি টু আলীকদম সড়ক,নাইক্ষ্যংছড়ি টু তুম্ব্রু সড়ক,গাজালিয়া টু ফাইতং সড়ক,রোয়াংছড়ি, কালাঘাটা, তারাছা সড়ক,লিরাগাও সড়ক,খানসামা, বাগমারা সড়ক সহ আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু সড়কে।

বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর দেয়া তথ্য মতে জেলায় টানা সাত দিনের বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে এলজিইডির ইনভেনটরি ভুক্ত জেলা সদর ও উপজেলায় মিলিয়ে ৯০০ কিলোমিটার পাকা সড়কের মধ্যে ৩০০ কিলোমিটার পাকা সড়ক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এছাড়াও বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি,বান্দরবান এর উপ-পরিচালকের সরকারি বাসবভন, কার্যালয়ের ব্যবহৃত টেস্ট ল্যাবের মূল্যবান যন্ত্রাংশ, আসবাবপত্র, কর্মকর্তাদের ব্যবহৃত সরকারি মোটরসাইকেল ও রাস্তার নির্মানকাজে ব্যবহৃত রোলার।যার ক্ষতির পরিমান প্রায় বিশ লক্ষ টাকারো বেশি। 

এদিকে সরজমিনে জেলার রোয়াংছড়ি,কালাঘাটা,লিরাগাও,খানসামা,বাঘমারা সহ কয়েকটি এলাকায় গিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাটের ক্ষতির বিষয়ে স্থানীয় বসবাসকারী জনসাধারণের সাথে কথা বল্লে তারা জানায় দীর্ঘ ৭ দিনের বৃষ্টিপাত,পাহাড়ি ঢল ও বন্যার কারনে পাহাড়ি রাস্তার মাটি সরে গেছে কয়েকটি স্থানে,এখন উপজেলা হতে কৃষিজাত পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্র অনেক সময় নৌ পথ ব্যবহার করা লাগছে,নৌ পথে পণ্য আনায়ন ও যাতায়াত অনেকটা ব্যয়বহুল হওয়ায় বিপাকে পরেছেন তারা ,খুব দ্রুততম সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত করা না হলে স্থানীয় বসবাসকারী জনসাধারণের যাতায়াতের অসুবিধার পাশাপাশি অভ্যন্তরীন ব্যবসা বানিজ্যের উপর এর বিরুপ প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন তারা।

এদিকে রোয়াংছড়ি উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দা সাংবাদিক মং খিং মারমা জানান এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার কয়েকটি ব্রীজ, কালভার্ট সহ বেশ কয়েকটি ইটের রাস্তা ও পিচের রাস্তা,এ সকল রাস্তা ব্যবহার করে স্থানীয় বাসিন্দারা জেলায় যাতায়াত করতেন,এদিকে বন্যায় রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যাওয়ার কারনে খুবই অসুবিধায় আছেন তারা।

এদিকে গত ১৩ই আগস্ট জেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় বন্যা পরিস্থিতিতে জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরুপন করে তার সঠিক তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ গুলোকে নির্দেশনা প্রদান করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।

বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম মজুমদার দৈনিক ভোরের দর্পণ কে জানান গত ৩৮ বছরেও এমন বন্যা পরিস্থিতি হয় নি।বিগত সময়ের কোন বন্যায় এত বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি রাস্তাঘাটের।তিনি বলেন ইতিমধ্যে মাঠ পর্যায়ে বন্যায় সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করা হয়েছে,তা পর্যালোচনায় দেখা যায় ইনভেনটরি ভুক্ত ৯০০ কিলোমিটার পাকা রাস্তার মধ্যে ৩০০ কিলোমিটার পাকা রাস্তাই প্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা মেরামতের জন্য ১৫০ কোটি টাকা লাগবে এছাড়াও এলজিইডি নিজস্ব কার্যালয় ও পরিক্ষণ ল্যাব,গাড়ি ও স্থাপনারো ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে ২০ লক্ষ টাকার মতো।

খুব দ্রুততম সময়ে প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে জেলা ও উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা আবারো স্বাভাবিক করা হবে বলে জানিয়েছেন বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জিয়াউল ইসলাম মজুমদার।

আরও খবর

Sponsered content