দেশজুড়ে

বিএসআরএমকে ভুগর্ভস্থ পানি উত্তোলনে বাঁধা, বিকল্প ব্যবস্থার কড়া নির্দেশ

  প্রতিনিধি ২৫ মে ২০২১ , ৬:১৬:৪৪ প্রিন্ট সংস্করণ

আশরাফ উদ্দিন, মিরসরাই প্রতিনিধি:

মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের সোনাপাহাড় এলাকায় অবস্থিত ইস্পাত প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম কে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনে বাধা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিকল্প ব্যাবস্থায় ভাউচারে করে ফেনী নদী থেকে প্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহের কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ২৪মে বিএসআরএম কারখানার ডিপ টিউবয়েল পরিদর্শন শেষে এক জরুরী বৈঠকে এই নির্দেশ দেওয়া হয় মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন থেকে।

মিরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুবল চাকমা, উপজেলা প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান, মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মজিবুর রহমান, জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নুর হোসেন মামুন, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কে এম সাঈদ মাহমুদ, মিরসরাই প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. নুরুল আলম, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউসুফ। বিএসআরএমের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এবিএম আসাদুজ্জামান, ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. দেলোয়ার হোসেন মোল্লা, ব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ বিভাগ) মো. জামাল হোসাইন।

স্থানীয় ভূক্তভোগী ও উপজেলা প্রশাসনের বক্তব্যে জানা গেছে, ইস্পাত শিল্প প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম তাদের কারখানায় ইস্পাত তৈরির কাজে প্রয়োজনীয় হাজার হাজার কিউসেক পানি ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের মাধ্যমে যোগান দিয়ে আসছে। এতে অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ফলে উক্ত এলাকার পানির স্তর আশংকাজনক ভাবে নেমে গেছে। ফলে স্থানীয় প্রায় কয়েক লক্ষ জনসাধারণ পানি সংকটে পড়েছে। এখানকার বাড়ির মানুষ তাদের নলকুপে পানি পাচ্ছে না। তাই সুপেয় খাওয়ার ও ব্যবহারের পানি সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েক হাজার মানুষ আগামী শুক্রবারকে কেন্দ্র করে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আন্দোলনের অংশ হিসেব স্থানীয় ভুক্তভোগিরা বিএসআরআমএর প্রধান ফটক একঘন্টা অবরুদ্ধ রাখার পরিকল্পনা করে।
স্থানীয় জনসাধারণের এই ধরনের আন্দোলনের প্রস্তুতিতে ও এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসনের তড়িৎ এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এছাড়া এর পূর্বেও গত ১৭ মার্চ উপজেলা প্রশাসন থেকে বিএসআরএমকে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন কমিয়ে বিকল্প পন্থায় প্রযোজনীয় পানির যোগানের জন্য অনুরোধ করা হেয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশনা যথাযথ বাস্তবায়ন না করায় ২৪ মে দুপুর ১২টায় সরেজমিনে পরিদর্শন করে পানি উত্তোলনে কড়া নিষেধাঙ্গা দেওয়া হয় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
বিএসআরএমের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. দেলোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, সারা বছর দেশে যে পরিমাণ রড প্রয়োজন হয় তার ৪০% বিএসআরএম সরবরাহ করে থাকে। সোনাপাহাড়ের কারাখানাটি বিএসআরএমের সবচেয়ে বড় কারখানা। কারখানায় ব্যবহারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ২ হাজার ৫’শ কিউসেক পানি ব্যবহারে আমাদের অনুমোদন আছে। আমরা ৪টি গভীর নলকূপ দিয়ে ৭’শ ৪৫ কিউসেক পানি উত্তোলন করতছি।

মিরসরাইয়ের বিভিন্ন ইউনিয়নে পানি সংকট দেখা দেওয়ার ৩টি নলকূপ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন ৪টি ভাউচারে করে প্রতিদিন ফেনী নদী থেকে আমরা পানি এনে কারখানায় ব্যবহার করছি। ক্রমান্বয়ে ভাউচারের সংখ্যা বাড়ানো উপজেলা চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বিএসআরএম শিল্পগ্রুপ গভীর নলকূপ বসিয়ে পানি উত্তোলনের কারণে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পানি সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে স্থানীয় জনগণ ক্ষোভে ফুসে উঠছে। আমাদের অভিভাবক মিরসরাইয়ের সংসদ সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের নির্দেশে আমরা বিএসআরএম কর্তৃপক্ষের সাথে জরুরী মিটিং করেছি। ফেনী নদী থেকে পানি আনয়নের জন্য পাইপ লাইন না বসানো পর্যন্ত ভাউচারে করে পানি আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তারা কারখানার ভেতর যে গভীর নলকূপ বসিয়েছে তা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাইপ বসানোর পূর্ব সময় পর্যন্ত বিএসআরএম একটি গভীর নলকূপ দিয়ে পানি উত্তোলন করবে এবং ভাউচারে করে ফেনী নদী থেকে পানি এনে ব্যবহার করবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by