প্রতিনিধি ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৬:৫১:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ
বগুড়ার নন্দীগ্রামে বিয়ের দাবিতে ভাতিজার বাড়ির সামনে দুই সন্তানের জননী এক নারী ৩ দিন ধরে অনশন করছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ভাটগ্রাম ইউনিয়নের কালিশ পুনাইল গ্রামে। অভিযুক্ত ব্যক্তি রফিকুল ইসলাম রানা, যিনি ওই গ্রামের মনসুর হোসেনের ছেলে এবং অনশনরত নারীর দূরসম্পর্কের চাচার বউ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) থেকে ওই নারী রানার বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন। তার দাবি, রানা দীর্ঘ ৪ বছর ধরে তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। বগুড়া শহর ও নন্দীগ্রামে বাসা ভাড়া নিয়ে তাকে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে রেখেছিলেন রানা। এ সময় একাধিকবার তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয়েছে বলে জানান ওই নারী।
অনশনরত নারীর অভিযোগ, ‘রানা আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু এখন সে কথা অস্বীকার করছেন। আমাদের সম্পর্কের কারণে আমার আগের সংসার ভেঙে গেছে। আমি প্রথমে সম্পর্ক করতে চাইনি, কিন্তু রানা আমাকে হুমকি দিয়েছিলেন যে, যদি সম্পর্ক না করি তবে আমার সংসার নষ্ট করবেন। শেষ পর্যন্ত তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এখন যদি রানা আমাকে বিয়ে না করেন, তাহলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘রানা আমার জীবন ধ্বংস করেছেন। এখন আমার পরিবারও আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আমার আর কোনো যাওয়ার জায়গা নেই। আমি বিয়ের দাবিতে অনশন করছি এবং রানার সঙ্গে সংসার করতে চাই।’
ভুক্তভোগী নারী আরো অভিযোগ করেন, গত শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রানার পরিবারের লোকজন তাকে মারধর করে, নগদ ২০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং মোবাইল থেকে তাদের সম্পর্কের প্রমাণ মুছে ফেলে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে সাংবাদিকদের সহযোগিতায় তিনি অসুস্থ অবস্থায় বিজরুল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম রানা তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘ওই নারীর সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। তার অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।’
এ বিষয়ে নন্দীগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হক বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আমরা যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
স্থানীয়দের মধ্যেও এ ঘটনা নিয়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতা ভিড় জমাচ্ছে। অনশনের বিষয়টি নিয়ে রানার পরিবারও চাপের মুখে পড়েছে বলে জানা গেছে। এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষ থেকে কোনো সমঝোতার উদ্যোগ দেখা যায়নি।