প্রতিনিধি ৪ মে ২০২৪ , ৩:২০:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ
“চড়া মূল্যের এই বাজারে মাছ-মাংসের কাছেই যেতে পারি না সবজিই একমাত্র ভরসা। কিন্তু এই সবজির দাম যদি এভাবে বাড়ে, তাহলে আমরা খাবো টা কি? বাজারে সব জিনিসের দাম বাড়লেও আমাদের আয় তো আর বাড়ে না, তাহলে আমরা সংসার চালাবো কি করে?” দিনাজপুর শহরের প্রধান নিত্যপণ্যের বাজার বাহাদুর বাজারে শুক্রবার (৩ মে) ব্যাগ হাতে নিয়ে বাজার করতে এসে এই প্রতিবেদকের কাছে এমন কথা বলছিলো অটোরিক্সা চালক আমিনুল ইসলাম।
আমিনুল ইসলাম বলেন, সারাদিন অটোরিক্সা চালিয়ে দৈনিক আয় হতো ৬ থেকে ৭’শ টাকা। তীব্র গরমের কারণে সেই আয়ও এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। কিন্তু বাজারে প্রতিটি সবজির দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। এতে পরিবারের আহার জোগানো কঠিন হয়ে পড়েছে। বাহাদুর বাজারে কাঁচা বাজার করতে আসা স্কুল শিক্ষিকা সেলিনা বেগম বলেন, নিত্যপণ্যের প্রতিটিরই দাম বেড়েছে। বিশেষ করে সবজির দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে।
কিন্তু আমাদের বেতন তো বাড়েনি। এই অবস্থায় সংসার নির্বাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নির্দিষ্ট আয় দিয়ে বাধ্য হয়েই প্রয়োজনের তুলনায় কম পণ্য কিনে বাড়ী ফিরতে হচ্ছে। বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অব্যাহত বিরূপ আবহাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে দিনাজপুরে গত কয়েকদিনে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে সবজির দাম। বাজারে প্রতিটি সবজির দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ, হিমশিম খাচ্ছেন নির্দিষ্ট আয়ের পেশাজীবীরা।
বাহাদুর বাজারে শুক্রবার (৩ এপ্রিল) প্রতিকেজি বেগুন ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়, ঝিঙা ৫০ টাকায়, গাজর ৬০ টাকায়, ঢেঁড়স ৩০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, ফুলকপি ১০০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, সজনা ৮০ টাকা টমেটো ৩০ টাকা, আলু ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা এবং পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৭০ টাকা কেজি দরে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটি সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা।
আর ঈদের পর বেগুনসহ কিছু কিছু পণ্যে দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা রুহুল আমীন বলেন, গত কয়েকদিনে সবজির বাজার হঠাৎ বেড়েছে। এতে আমাদের কোন হাত নেই। আমরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিনে এনে কেজিতে ২/৩ টাকা লাভ রেখে সবজি বিক্রি করি। পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বেশী দামে কিনে এনে বাধ্য হয়েই আমাদের বেশী দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
পাইকারি ব্যবসায়ী মমতাজ আলী জানান, অব্যাহত তীব্র রোদ আর উত্তপ্ত আবহাওয়ার জন্য সবজি উৎপাদন কমে গেছে। অনেকের বেগুন গাছ মরে যাচ্ছে। বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় কৃষকদের কাছ থেকে বেশী দামে সবজি কিনতে হচ্ছে। আর এ জন্যই দাম বেড়েছে।
আবহাওয়ার এই বিরূপ অবস্থা বিরাজমান থাকলে সবজির দাম আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।