বাংলাদেশ

বেকারদের পুনর্বাসনে ১০ দফা সুপারিশ গোয়েন্দাদের

  প্রতিনিধি ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ , ১২:২৮:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

চলমান করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষকে পুনর্বাসনে ১০ দফা সুপারিশ করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। সেই সাথে আরও আটটি সুনির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণও দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি তিন পৃষ্ঠার গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। একটি জাতীয় দৈনিকের প্রিন্ট সংস্করণে বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, তৈরি পোশাক শিল্প কারখানায় প্রতিনিয়ত শ্রমিক ছাঁটাই করা হচ্ছে। এ ছাড়া চাকরি হারিয়ে অনেক প্রবাসী-কর্মী দেশে অবস্থান করছেন। দেশে বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাসহ ত্রাণের আওতায় চাকরীচ্যুতদের আনা না হলে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তারা জড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়া বেকারদের দিয়ে চক্রান্ত রুখতে কলকারখানা, ব্যাংক-বীমা ও কর্পোরেট অফিসে প্রাতিষ্ঠানিক তদারকি ও নজরদারি বাড়াতে তাগিদ দেয়া হয়েছে।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভূমিকায় বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে যে বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে সেটির বিরূপ প্রভাব অর্থনীতিতেও পড়েছে। করোনা সংক্রমণের শুরুতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর অনেক শ্রমজীবী কর্মহীন হয়ে পড়ে। দেশে ১৯৬টি কারখানার ২৩ হাজার ১১০ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, করোনা পরিস্থিতিতে বেসরকারি, বীমা ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন শর্তে (যেমন: এফডিআর, ডিপিএস প্রভৃতি লক্ষ্য পূরণ) কর্মীদের কাজে বহাল রেখেছে। এ অবস্থায় লক্ষ্য পূরণ করতে না পারায় কর্মীদের বেতন কর্তন, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা খর্ব এবং চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হচ্ছে।

করোনায় প্রবাসী কর্মীদের অনেকে কাজ হারিয়ে দেশে ফিরে এসেছে। তাদের অনেকে কাজের উদ্দেশ্যে ফের বিদেশে গেলেও আগের কাজে বহাল হতে পারেনি। গোয়েন্দা সংস্থার অভিমত, করোনা-পরবর্তী বিশ্ববাজারে দেশের শ্রমশক্তি ও পোশাক শিল্পকে শক্ত অবস্থানে তুলে ধরতে পারলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত করা সম্ভব। এজন্য শক্তিশালী কূটনৈতিক তৎপরতা, আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক এবং জনশক্তি রফতানিতে নতুন নতুন বাজার সৃষ্টির কর্মকৌশল তৈরি করা প্রয়োজন।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- কর্মী ছাঁটাই রোধে দেশের সব কলকারখানা, বেসরকারি ব্যাংক-বীমা, কর্পোরেট অফিস-প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাসহ সরকারের তদারকি ও নজরদারি বাড়ানো। শ্রম মন্ত্রণালয়, কারখানা, অধিদফতর, গার্মেন্টস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা। সংকটাপন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছাঁটাই না করে প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ের খাত পুনঃসমন্বয় করা।

এক্ষেত্রে যাদের বেতন ২০ হাজার টাকা বা তার বেশি, তাদের বেতন ১০ ভাগ কমিয়ে দেয়া। বিদেশ ফেরত কর্মহীন কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্বল্প খরচে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা। অন্য দেশ থেকে নতুন ক্রয়াদেশ পেতে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমইসহ কারখানা মালিকদের সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া। সরকার ঘোষিত শিল্প-ঋণের প্রণোদনা প্যাকেজ মালিকরা যাতে যথাযথভাবে ব্যবহার করে এবং নিজ স্বার্থে তা ব্যবহার করতে না পারে, সেজন্য কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা করা।

কোনো শ্রমিক সংগঠন, এনজিও নেতা ও কর্মীরা যাতে শ্রমিকদের বা ছাঁটাই শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে না পারে, সেদিকে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখা। ব্যাংক-বীমা, বড় বড় কর্পোরেট অফিসসহ অন্য সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি হারানোদের ক্রমান্বয়ে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে স্বপদে বহাল করতে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by